সরাইলে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে ছুলামদ উৎপাদন ও খোলা বাজারে বিক্রি বন্ধের দাবীতে সোচ্ছার এখন স্থানীয় লোকজন। এ বিষয়ে দ্রƒত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত আবেদন করেছেন স্থানীয়রা। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিতে কর্মকর্তা ইনচার্জকে (ওসি) অনুরোধ করেছেন ইউএনও। অভিযোগপত্র ও স্থানীয় লোকজন সূত্র জানায়, উপজেলার কালিকচ্ছ ঋষী বাড়ির কয়েকটি পরিবার গত কয়েক যুগ ধরে অবৈধপন্থায় ছুলামদ উৎপাদন ও প্রকাশ্যে বিক্রি করছে। তাদেরকে শেল্টার দিচ্ছেন প্রভাবশালী কিছু লোক। তারা গোপনে দেশের বিভিন্ন জায়গায় এ মদ পাচারও করছেন। বিভিন্ন ব্রান্ডের ড্রিংসের খালি বোতলে ছুলামদ ভরে তারা উপজেলার অনেক জায়গায় হেঁটেও বিক্রি করছেন। ফলে সেখানকার শিক্ষার্থী ও যুব সমাজ দেখে শিখে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। ফলে বৃদ্ধি পাচ্ছে চুরি ছিনতাই। সন্ধ্যার পরই ওই বাড়িতে প্রবেশ করতে থাকে নানা বয়সের লোকজন। মদ ক্রয় করে জায়গায় বসে পান করার হিড়িক পড়ে। কিছুক্ষণ পরই মাতলামি ও চিৎকার চেঁচামেচি করে রাস্তায় এসে অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ করতে থাকে। এমনসব চিত্র নিত্য দিনের। আশপাশে বসবাসকারী শান্তি প্রিয় নিরীহ লোকজন প্রতিনিয়তই বিব্রতবোধ করেন। সম্প্রতি ওই বাড়ির নিকটে মসজিদের মুসল্লিরাও মাতালদের মাতলামির শিকার হচ্ছেন। অজানা কারণে স্থানীয় প্রভাবশালী লোকজন ঋষী বাড়ির মদ উৎপাদন বন্ধ ও বিক্রির বিরোদ্ধে কোন পদক্ষেপও নেননি। এখানকার উৎপাদিত মদ এখন দেওড়া, মলাইশ ও শাহাজাদাপুরে যাচ্ছে। বিষয়টি ক্ষোভের সাথে উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা সভায় একাধিকবার বলেছেন শাহজাদাপুর ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম খোকন। একই সভায় ছুলামদের বিস্তৃতি,ভয়াবহতা, প্রশাসনের ভূমিকা ও যুবসমাজকে ধ্বংসের বিশদ ব্যাখ্যা দিয়ে পরিত্রাণ চেয়ে আসছেন বিভিন্ন বক্তা। কিন্তু কোন প্রতিকার মিলছে না আদৌ। বরং একসময় সেখানকার মাদক কারবারিদের বিরূদ্ধে প্রতিবাদ করায় একাধিক মিথ্যা বানোয়াট ও সাজানো মামলার আসামি হতে হয়েছে রাহাত সহ অনেক যুবককে। উৎপাদনকারীরা বরাবরই দাম্ভিকতার সাথে বলে আসছেন ‘সবকিছু ম্যানেজ করেই আমরা ব্যবসা করছি।’
কালিকচ্ছ ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আলী বলেন, ঋষী বাড়ির ছুলামদ এই সমাজ ও আশপাশের স্কুল কলেজে পড়-য়া শিক্ষার্থীদের জীবন ধ্বংস করছে। আমি দীর্ঘদিন ধরে প্রকাশ্যে মদ বিক্রি ও পান বন্দের জন্য বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা করছি। সমাবেশ আহবান করেছিলাম। আশ্চর্য্য হলাম প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধি, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও প্রশাসনের একটি লোকও ওই সমাবেশে আসলেন না। স্থানীয় কতিপয় প্রভাবশালী লোক গোপনে তাদেরকে সুদে টাকা দিয়ে মদের ব্যবসা করতে সহায়তা করছে। লাভের অংশও নিচ্ছে। তারাই আবার মদ উৎপানকারীদের শেল্টার দিচ্ছেন। সরাইল থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ (ওসি) এ এম এম নাজমুল আহমেদ লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, কাজ চলছে। সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে কথা বলছি। দ্রƒততম সময়ের মধ্যেই ব্যবস্থা নিব।