ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের অবস্থা ‘অনেকটা ভালো এবং তার অবস্থা স্থিতিশীল’ আছে বলে জানিয়েছেন তার ছেলে অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়। তিনি ‘চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন’ বলেও রোববার জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেসের নেতা অভিজিৎ।তার বাবা শিগগিরই সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরতে পারবেন বলে এক টুইটে আশাবাদও ব্যক্ত করেছেন তিনি। টুইটে তিনি বলেন, গতকাল (শনিবার) হাসপাতালে গিয়ে বাবাকে দেখে এসেছি। ভগবানের কৃপায় ও আপনাদের শুভকামনায় আগের দিনগুলোর চেয়ে উনি এখন অনেকটা ভালো ও স্থিতিশীল আছেন!তার স্বাস্থ্যগত সব অবস্থা স্থিতিশীল আছে এবং তিনি চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন!আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, শিগগিরই তিনি আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন। আপনাদের ধন্যবাদ। তবে প্রণব এখনও ভেন্টিলেটরেই আছেন বলে জানিয়েছে আনন্দবাজার পত্রিকা। প্রণব মুখোপাধ্যায় ২০১২ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ভারতের রাষ্ট্রপতি ছিলেন। গত বছর তিনি ভারতের সর্বোচ্চ বেসামরিক খেতাব ‘ভারত রতেœ’ ভূষিত হন। গত রোববার রাতে দিল্লির বাসভবনে পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পান প্রণব। পরদিন সকাল থেকে তার স্নায়ুঘটিত সমস্যাও দেখা দেয়; বাম হাত নাড়াচাড়া করতে পারছিলেন না তিনি। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে সোমবার দিল্লির আর্মি হসপিটাল রিসার্চ এ- রেফারেলে ভর্তি করা হয় তাকে। এমআরআই স্ক্যানে মাথার ভিতরে জমাট বাঁধা রক্তের অস্তিত্ব ধরা পড়ে, যা আঘাতের ফলেই হয়েছে বলে মত চিকিৎসকদের। জরুরিভিত্তিতে অস্ত্রোপচার করে জমাট বাঁধা রক্ত অপরসারণ করা হয়। অস্ত্রোপচারের প্রস্তুতি পর্বে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে গিয়ে তার তার দেহে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব ধরা পড়ে। অস্ত্রোপচারের পর অবস্থার অবনতি হলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিয়ে তৈরি মেডিকেল বোর্ডের অধীনে তাকে ৯৬ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। শুক্রবার পর্যবেক্ষণের নির্দিষ্ট সময় শেষ হওয়ার পর বাইরের উদ্দীপনা ও চিকিৎসায় উনি সাড়া দিচ্ছিলেন বলে জানিয়েছিলেন তার ছেলে অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়।
প্রণব ভেন্টিলেশনে যাওয়ার কয়েকদিন আগে কাঁঠাল খেতে চেয়েছিলেন বলে টাইমস অব ইন্ডিয়াকে জানিয়েছেন অভিজিৎ। আমি তার জন্য কাঁঠাল আনতে কলকাতা থেকে আমাদের গ্রামের বাড়ি মিরাটিতে যাই (পশ্চিবঙ্গের বীরভূম জেলায়)। ২৫ কেজির পাকা কাঁঠাল ছিল সেটি। ৩ অগাস্ট ট্রেনে করে দিল্লিতে এসে তার সঙ্গে দেখা করি। বাবা আর আমি, দু’জনেই ট্রেন জার্নি পছন্দ করি,” নয়া দিল্লির গ্রেটার কৈলাস এলাকার বাড়িতে বসে টাইমস অব ইন্ডিয়াকে এসব কথা বলেন ৬০ বছর বয়সী অভিজিৎ। অভিজিৎ আরও বলেন, “ওই দিনই তিনি কিছু কাঁঠাল খান। সৌভাগ্যক্রমে তার সুগার বেড়ে যায়নি (প্রণব মুখোপাধ্যায় ডায়াবেটিকসের পুরনো রোগী)। তিনি খুব খুশী হয়েছিলেন। তখন অসুস্থ ছিলেন না তিনি। কিন্তু এর প্রায় সপ্তাহ খানেক পরই পড়ে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন প্রণব। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে শনাক্ত হয় তিনি কোভিড-১৯ আক্রান্ত।