নেত্রকোণার কলমাকান্দায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হলে গ্রেফতারের নির্দেশ দিয়েছেন জেলার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এর বিজ্ঞ বিচারক।
এর আগে ১৩ জুলাই উপজেলার মহাদেও নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন নিয়ে দেশের বেসরকারি একটি স্যাটেলাইট টেলিভিশনে প্রতিবেদন সম্প্রচার হয়। পরে প্রতিবেদনটি দৃষ্টিগোচর হয়। পরপর আরও বেসরকারি টিভি চ্যানেলে প্রতিবেদন সম্প্রচার করে। এবিষয়টি আমলে নিয়ে ৫ আগস্ট এর মধ্যে কলমাকান্দা থানা কর্তৃপক্ষকে তদন্তের নির্দেশ দেন আদালতের বিজ্ঞ বিচারক সোহেল ¤্রং। আদালত সোমবার (১৭ আগস্ট) থানা কর্তৃপক্ষের তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেয়ে সত্যতা পাওয়ায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বলা হয়।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, কলমাকান্দা উপজেলার বরুয়াকোনা বাজার সংলগ্ন মহাদেও নদীতে, চিকনটুপ ও প্যাঁচামারী মৌজায় মাহফুজ আলম (মামুন), খোরশেদ আলম ও রফিকুজ্জামান খোকন পাঁচশত-ছয়শত নৌকার মাধ্যমে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছেন।
আর তাদের এই কার্যক্রমের মাধ্যমে তারা প্রত্যেকে বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ এর ১১ ধারা লঙ্ঘন করেছেন। এরই সাথে তাদের এই অপরাধ ওই আইনের মাধ্যমে প্রনীত বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্তাপনা বিধিমালা, ২০১১ এর পরিশিষ্ট ‘ক’ তে উল্লিখিত চুক্তি ফরমের ১নং শর্ত ভঙ্গ করেছেন মর্মে প্রতীয়মান হয়।
এই বিষয়ে বালুমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসককে অবগত করা উচিত বলেও আদালতের নির্দেশ স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে। বালু উত্তোলনে নদীর পাড় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, ঘরবাড়ি ভেঙে যাচ্ছে, নদীর প্রাকৃতিক পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে ও বালু উত্তোলনের শতশত নৌকা ও মেশিনের কারণে নদীর স্বাভাবিক গতিধারা বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। সেক্ষেত্রে অবৈধ কাজে ব্যবহৃত নৌকা ও মেশিনগুলো জব্দ করা প্রয়োজন।
সার্বিক পর্যালোচনায় মাহফুজ আলম (মামুন), খোরশের আলম ও রফিকুজ্জামান খোকনের বিরুদ্ধে বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ এর ১৫ ধারায় অপরাধ আমলে নিয়েছেন আদালত। অবৈধ পন্থায় বালু উত্তোলনকারীরা পলাতক হওয়ার সম্ভাবনা থাকায় আদালত তাদেরকে বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি বালুমহালের বাইরে যারা নৌকা ও মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করছে তাদের নৌকা ও মেশিনগুলো জব্দ করতে নির্দেশে বলা হয়েছে।
বালু মহালের বাইরে যে সব স্থানে বালু উত্তোলন করা হয়, সে সব স্থানে সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড ; যেমন লিখতে হবে ‘এখানে বালু উত্তোলন করা অপরাধ, কেউ বালু উত্তোলন করলে থানায় খবর দিন।’ এরই সাথে ওই লেখার নিচে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার মোবাইল নাম্বার করতে হবে সংযুক্ত। পরিশেষে আদালতের নির্দেশ পেয়ে কোন কোন স্থানে সাইনবোর্ড টানানো হলো ফটোগ্রাফসহ প্রতিবেদন দিতেও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন আদালত।