পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ (চাটমোহর) এর আওতাধীন এলাকায় বিদ্যুতের বিল নিয়ে গ্রাহকদের এখন বিস্তর অভিযোগ। প্রতিদিনই স্থানীয় সংবাদকর্মীদের কাছে বিদ্যুৎ বিলে অনিয়মের অভিযোগ আসছে। এই সমিতির আওতায় চাটমোহর,ভাঙ্গুড়া,ফরিদপুর.আটঘরিয়া উপজেলা ছাড়াও পাবনা সদর.ঈশ্বরদী ও তাড়াশের আংশিক এলাকা রয়েছে। গ্রাহকদের অভিযোগ কারো বিল বেশী করা হয়েছে,কেউ আবার ব্যাংকে বিল জমা দেওয়ার পরও নতুন বিলের সাথে আগের বিল যোগ করা হচ্ছে। মিটার রিডিং না করেই ইফনিট নির্ধারণ করা হচ্ছে। গ্রাহরা বলছেন এগুলো হলো ভূতুরে বিল। পৌর শহরগুলো কিংবা গ্রামে বিদ্যুতের ভুলভাল বিলিং অতি সাধারণ ঘটনায় পরিণত হয়েছে। এক মাসে যে বিদ্যুৎ ব্যবহার করছেন তার পরিবর্তে যে পরিমাণ ব্যবহার করেননি,সেটারই বিল ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে গ্রাহককে। ভূতুড়ে বিল দেখে গ্রামের সহজ-সরল মানুষগুলো হয়ে পড়েন আতঙ্কিত। এ ধরনের ভুলের শিকার হলে কেউ প্রতিকার পান আবার কেউ পান না। হয়রানি কিংবা বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হবার ভয়ে অনেকে বিলই পরিশোধ করে দেন। আবার ব্যাংকে বিল পরিশোধ করার পরও পূর্বের মাসের বিল বর্তমান মাসের বিলের সাথে যোগ করে দেওয়া হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন,বছরের পর বছর এ ধারা চললেও সমাধান মিলছে না। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, গ্রাহকদের নিজেদেরকেই এ ভুল এবং জালিয়াতি বন্ধে উদ্যোগী হতে হবে।
জানা গেছে,গ্রাহক যে পরিমাণ বিদ্যুৎ ব্যবহার করে সেই প্লটের ওপর বিদ্যুৎ বিল নির্ধারণ করা হয়। এর সঙ্গে ডিমান্ড চার্জ এবং মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) যুক্ত হয়। তাছাড়া মিটার ভাড়ার নামে আদায় করা হচ্ছে অতিরিক্ত অর্থ। একজন গ্রাহক যত বেশি পরিমাণ বিদ্যুৎ ব্যবহার করেন তার মাসিক বিল তত বেশি মূল্যহারে নির্ধারিত হয়।
প্রতি মাসে গ্রাহকদের ঘরে ঘরে গিয়ে মিটার দেখে বিল প্রস্তুত করার দায়িত্ব মিটার রিডারদের। কিন্তু তারা অনেক সময়ই তা করেন না। কয়েক জন ভুক্তভোগী গ্রাহক জানান,প্রতি বছরই একটি বড় সংখ্যক গ্রাহক ভূতুড়ে কিংবা অতিরিক্ত কিংবা ভুল বিলিংয়ের শিকার হন। অনেকে ভোগান্তি এড়াতে অভিযোগও করেন না।
মিটার রিডার আগের মাসের জমে থাকা ইউনিট এই মাসে ঢুকিয়ে দেওয়ার কারণে খরচ দ্বিগুণ হয়ে যায়। সীমিত আয়ের মানুষের জন্য এ অতিরিক্ত অর্থ পরিশোধ করা কঠিন। সে কঠিন দায়ই বছরের পর বছর বয়ে বেড়াচ্ছেন অগণিত গ্রাহক।
এমনই এক অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন চাটমোহর পৌরসভার ছোট শালিখা মহল্লার ইবাদত হোসেন। তিনি জানান,তার মিটার রিডিং এখনও যেটা হয়নি,সেটার রিডিং দিয়ে বিল করা হয়েছে।
গ্রাহকদের অভিযোগ,স্থানীয় মিটার রিডার নিয়মিত মিটার রিডিং দেখেন না। খেয়ালখুশি মতো বিলের ইউনিট বসান। দায়িত্বে এ ধরনের অবহেলার কারণে গ্রাহকদের পকেট থেকে একটি বড় অংশের অর্থ বের হয়ে যায়। এটি গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণার সামিল।
এ প্রসঙ্গে পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী মুশফিকুল হাসান বলেন,মিটার রিডিংয়ের ব্যাপারে আমাদের যেমন দায়িত্ব আছে,তেমনি গ্রাহকদেরও দায়িত্ব আছে সচেতন হয়ে সঠিক ইউনিট অনুযায়ী বিল বুঝে নেওয়ার। রিডিং ভুল হলে গ্রাহক অভিযোগ দিলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন,ইতোমধ্যেই গ্রাহকের সুবিধা ও সন্তুষ্টির জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমরা গ্রাহকদের হয়রানীমুক্ত সেবা দিতে বদ্ধ পরিকর।