পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় চলতি বছরের ২৪ মে যুবলীগ নেতা তাপস দাস খুণ হওয়াকে কেন্দ্র করে কালাইয়া ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম-সাধারন সম্পাদক মামুন সোহেব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তাপস হত্যাকারী ’মেয়র জুয়েলের ফাঁিস চাই, রক্তের বদলে রক্ত’ফেইসবুকে একটি স্টাটাস দেয়। ওই স্টাটাসটি নিজ টাইম লাইনে শেয়ার করেন বাউফল পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ইব্রাহিম ফারুক। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগে আক্রমনাত্বক, মিথ্যা, ভীতি প্রদর্শন এবং মান হানিকর ষ্ট্যাটাস ও শেয়ার করার অভিযোগে ওই দুই নেতার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন বাউফল পৌর সভার মেয়র জিয়াউল হক জুয়েল। গত ৩১ আগস্ট ঢাকার সাইবার ট্রাইবুনালে ওই মামলা করেন। মামলা নম্বর ২১১, তারিখ ৩১ আগস্ট, ২০২০। মামলাটি তদন্ত করার জন্য পটুয়াখালীর পিবিআই (পুলিশ ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো) কে দায়িত্ব দিয়েছেন আদালত।
মামলার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, তাপস হত্যাকান্ডকে ভিন্নখাতে প্রভাবিত করার কারনেই হত্যার প্রধান আসামি ষরযন্ত্র মূলক মামলা করেছেন।
মামলার বিবরণ ও স্থানীয় সুত্রে থেকে জানা গেছে, স্থানীয় আওয়ামী লীগ (স্থানীয় সাংসদ সমর্থিত) বাউফল থানা ব্রিজ সংলগ্ন ডাকবাংলোর সামনে প্রতি বছরই তোরণ নির্মাণ করে। এরই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের ২৪ মে বাউফল থানা ব্রিজ সংলগ্ন ডাকবাংলোর সামনে একটি তোরণ নির্মাণ করার সময় বাউফল পৌরসভার মেয়র জিয়াউল হক জুয়েল বাধা দেয়। এ সময় বাউফল পৌরসভার মেয়র জিয়াউল হক জুয়েল তার কর্মীবাহিনীসহ বাউফল পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি নাজিরপুর ইউপি চেয়ারম্যান ইব্রাহিম ফারুকের কর্মীদের উপর হামলা চালায়।
এ ঘটনায় মেয়র সমর্থিত কর্মীদের হাতে খুন হয় যুবলীগ কর্মী তাপস। খুনের পড় পড়ই ওই দিনই রাত ৮.২৮ মিনিটে যুবলীগ নেতা মামুন সোয়েব তার ফেসবুক আইডিতে “তাপসের হত্যাকারি মেয়র জুয়েলের ফাঁসি চাই, রক্তের বদলে রক্ত” লেখা পোস্ট করেন। একই দিন রাত ৯ টা ২ মিনিটে বাউফল পৌর আ.লীগ নেতা ইব্রাহিম ফারুক ওই পোস্টটি তার ফেসবুক আইডি থেকে শেয়ার করেন। ফেসবুকের ওই পোস্ট ও শেয়ার উস্কানিমূলক, স্থানীয় মানুষের মধ্যে শক্রতা, ঘৃণা, বিদ্বেষ, অস্থিরতা ও বিশৃংখলা সৃষ্টির সামিল। ওই পোস্ট ও শেয়ার বাদিকে রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্যই করা হয়েছে। যাহা ২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৫, ২৯, ৩১ ও ৩৫ ধারার অপরাধ সংঘটিত করেছে। এমন অভিযোগ নিয়ে বাদি গত ২৫ আগস্ট বেলা সারে ১১ টার দিকে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা করতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
তবে এ বিষয়ে বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, উল্লিখিত তারিখে মামলা করার জন্য মেয়র জিয়াউল হক জুয়েল থানায় আসেননি।
মামলা সম্পর্কে বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আবদুল মোতালেব হাওলাদার জানান, বাউফল পৌরসভার মেয়র জিয়াউল হক জুয়েল তাপস খুনের প্রধান আসামি। তাপস হত্যাকান্ড থেকে নিজেকে রক্ষা এবং মামলাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার লক্ষেই এই ষরযন্ত্র মূলক মামলা করা হয়েছে। আমি উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দলের নেতাদের বিরুদ্ধে এই মামলা প্রত্যাহারের পাশাপশি তাপস হত্যাকারীদের ফাঁসি দাবী করছি।