ভিন্ন মতাবলম্বী সাংবাদিক জামাল খাসোগি হত্যার ঘটনায় আটজনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছে সৌদি আরব। সোমবার দেশটির একটি আদালতে ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করা হয়।
সৌদি প্রেস এজেন্সির এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খাসোগি হত্যাকাণ্ডে পাঁচজনের বিরুদ্ধে ২০ বছর করে কারাদণ্ড ঘোষণা করেছে আদালত। এছাড়া আরও তিনজনকে সাত থেকে দশ বছর পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
এর আগে গত ডিসেম্বরে সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে হত্যার ঘটনায় ৮ জন দোষী সাব্যস্ত হয়। এদের মধ্যে পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয় এবং তিনজনকে ২৪ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তবে সৌদি প্রসিকিউশন এবারের রায়কে চূড়ান্ত রায় বলে উল্লেখ করেছে।
মধ্যপ্রাচ্যের কট্টরপন্থি দেশ সৌদির রাজপরিবারের সামলোচক হিসেবে পরিচিত ছিলেন খাসোগি। যুক্তরাষ্ট্রে স্বেচ্ছায় নির্বাসিত জামাল খাশোগি গত বছরের ২ অক্টোবর দুপুরে ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশের পর নিখোঁজ হন। সেদিনই ভোরে সৌদি থেকে একটি প্রাইভেট জেট বিমান নামে ইস্তাম্বুল বিমানবন্দরে।
তুরস্কের টেলিভিশনে প্রচারিত একটি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, বিমান থেকে নয়জন ব্যক্তি নেমে আসে। পরে আরেকটি বিমানে করে আরও ছয়জন আসে। তারা ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটের কাছে দু'টি হোটেলে ওঠে।
সন্দেহভাজন ওই ১৫ জনকে সৌদি এজেন্ট হিসেবে শনাক্ত করা হয়। তাদের নাম এবং ছবিও প্রকাশ করা হয়। খাসোগি হত্যায় সন্দেহের তীর তাদের দিকেই ছিল। সাংবাদিক খাশোগি ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে গিয়েছিলেন তার প্রাক্তন স্ত্রীর সঙ্গে তালাক সম্পর্কিত কাগজপত্র নিতে। এরপরেই তিনি তার তুর্কি বান্ধবী হাতিস চেঙ্গিসকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন।
তিনি সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশের আগমুহূর্তে সেখানে তার বান্ধবীর কাছে দুটি মোবাইল ফোন রেখে গিয়েছিলেন। তার বান্ধবী সৌদি কনস্যুলেটের সামনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেন। কিন্তু খাশোগি সৌদি কনস্যুলেট থেকে আর বেরিয়ে আসেননি। জামাল খাসোগির এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা বিশ্বের নজরে আসে। প্রথম থেকেই বিভিন্ন দেশ জামাল খাসোগির হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করে আসছে।