তানোর উপজেলার মুন্ডমালা পৌর সভায় আ.লীগের দলীয় মেয়র প্রার্থী হবেন ৫বার নির্বাচিত কাউন্সিলর মুন্ডমালা পৌর আ.লীগ সাধারণ সম্পাদক আমির উদ্দিন আমিন। এবার তিনি মুন্ডমালা পৌর সভায় আ.লীগ দলীয় মনোনয়ন নিয়ে মেয়র পদে নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন।
আ’লীগ দলীয় নেতা-কর্মি ও এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে, মুন্ডমালা পৌরসভার বর্তমান মেয়র ও তানোর উপজেলা আ.লীগ সভাপতি গোলাম রাব্বানী জাতীয় সংসদ সদস্য পদে মনোনয়ন পাওয়ার আশায় আগামী পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে নির্বাচন না করার ঘোষনা দিয়ে তিনি মুন্ডমালা পৌর আ.লীগ সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদুর রহমানকে মাঠে নামিয়েছেন।
গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে থেকে স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ ওমর ফারুক চৌধুরী সাথে মুন্ডমালা পৌর মেয়র তানোর উপজেলা আ.লীগ সভাপতি গোলাম রাব্বানীর দ্বন্দ প্রকাশ্যে রুপ নিয়েছে। ফলে, মুন্ডমালা পৌর সভার মেয়র পদে আ.লীগ দলীয় মনোনয়ন সাইদুর রহমান পাবেন না এটা প্রায় নিশ্চিত।
অপর দিকে মুন্ডমালা পৌর আ.লীগ সভাপতি গোলাম মোস্তফা দীর্ঘদিন থেকে মুন্ডমালা পৌর মেয়র পদে আ.লীগ দলীয় মনোনয়ন চাইলেও বর্তমান মেয়র গোলাম রাব্বানীর কারণে তাকে মনোনয়ন দেয়া হয়নি। বর্তমানে মুন্ডমালা পৌর আ.লীগ সভাপতি গোলাম মোস্তফা রাজশাহী জেলা পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ফলে এবারো তাকেও মুন্ডমালা পৌর মেয়র পদে আ.লীগ দলীয় মনোনয়ন না দেয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
এদিকে রাজশাহী জেলা আ.লীগ সহ-সভাপতি শরিফ খান মুন্ডমালা পৌর সভায় মেয়র পদে আ.লীগ দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার আশায় স্থানীয় আ.লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের সাথে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ রক্ষা করে মনোনয়ন নেয়ার জোর চেষ্টা করছেন। তবে, ত্যাগি ও দীর্ঘদিন থেকে রাজনীতির সাথে জড়িত আ.লীগ নেতা শরিফ খান অর্থনৈতিকভাবে অনেকটাই দুর্বল হওয়ায় তাকেও মনোনয়ন না দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সেই সাথে ডাক্তার জালাল উদ্দিনের ছেলে মুন্ডমালা পৌর যুবলীগ সাবেক সভাপতি আহম্মেদ ও প্রবীন আ.লীগ নেতা অধ্যাপক প্রয়াত লুৎফর রহমানের ছেলে যুবলীগ নেতা আরিফ রায়হান তপন এবং রাজশাহী আইনজীবী সমিতির ৫বারের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সাজেমানও মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ায় আশা করছেন। আহম্মেদ সিজার ও তপন রাজনীতিসহ বয়সের দিক থেকে জুনিয়র হওয়ায় এবং অ্যাডভোকেট সাজেমান মাঝে মাঝে এলাকায় আসলেও তিনি বেশির ভাগ সময় রাজশাহী শহরে অবস্থান করায় তাদেরকে মেয়র পদে আ.লীগ দলীয় মনোনয়ন না দেয়ার বিষয়ে স্থানীয় নেতা-কর্মি ও সমর্থকদের মধ্যে বেশ আলোচনা ও সমালোচনা রয়েছে।
তবে, মুন্ডমালা পৌর আ.লীগ সাবেক সাধারণ সম্পাদক আহসানুল হক স্বপন মেয়র পদে আ.লীগ দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার আশায় বুক বেধে দলীয় বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করছেন। কিন্তু তিনি এর আগে মুন্ডমালা পৌর সভায় আ.লীগ দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেয়ায় তাকে আ.লীগ থেকে বহিস্কার করা হয়। ফলে তিনি দীর্ঘদিন থেকে দলীয় কর্মকান্ডের বাইরে ছিলেন। এসব বিবেচনায় এবারও স্বপনকে মেয়র পদে আ.লীগ দলীয় মনোনয়ন না দেয়ারই কথা।
অপর দিকে মুন্ডমালা পৌর আ.লীগ সাধারণ সম্পাদক আমির উদ্দিন আমিন মুন্ডমালা পৌর সদরের ৫নং ওয়ার্ড থেকে (পৌর সভা প্রতিষ্ঠার থেকেই) ৩বার নির্বাচিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন এবং মুন্ডমালা পৌর সভার ১নং প্যানেল মেয়র নির্বাচিত হয়ে এখনো প্যানেল মেয়রের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বাধাইড় ইউপির সাবেক ২নং ওয়ার্ড (বর্তমানে মুন্ডমালা পৌর সভার ৫নং ওয়ার্ড) পর পর ২বার নির্ববচিত ইউপি সদস্য হিসেবে সাধারণ জনগনের মধ্যে ক্লিন ইমেজ ও পরিচ্ছন্ন জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতা হিসেবে ব্যাপক জনপ্রিয়।
সাদা মনের মানুষ হিসেবে এবং মুখের উপর সদাসত্য কথা বলা আমির উদ্দিন আমিন পর পর ৫বার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ও আ.লীগ নেতা হিসেবে এলাকায় বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ডসহ জনসাধারনের কাছে তার ব্যাপক জনপ্রিয়তার আলোচনা রয়েছে। সেই সাথে বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ড এলাকার গরীব মানুষের সাথে তার নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে।
করোনার মহামারীর সময়ে মুন্ডমালা পৌর আ.লীগ সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদুর রহমানের সাথে তাল মিলিয়ে আমির উদ্দিন আমিনও নিজস্ব তহবিল থেকে এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ ওমর ফারুক চৌধুরীর হটলাইনের খাদ্যসামগ্রী এলাকার জনসাধারনের বাড়ি বাড়ি পৌছে দেয়াসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকান্ডের দায়িত্ব পালন করেছেন।
ফলে, হাই কমান্ডসহ স্থানীয় আ.লীগ নেতা-কর্মি সমর্থকরা বলছেন মুন্ডমালা পৌরসভায় এবার আমির উদ্দিন আমিনই হচ্ছেন আ.লীগ দলীয় মেয়র প্রার্থী। আমির উদ্দিন আমিনকে আ.লীগ দলীয় মনোনয়ন দেয়া হবে শীর্ষ ও স্থানীয় পর্যায়ের নেতাদের গ্রীন সিগনাল পেয়ে তিনি প্রতিনিয়ত স্থানীয় আ.লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মি সমর্থকসহ সাধারণ ভোটারদের সাথে যোগাযোগ রক্ষার পাশাপাশি মেয়র পদে নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন তিনি।
প্রতিদিনই তিনি মুন্ডমালা পৌর এলাকার পাড়া-মহল্লার চায়ের দোকানে গিয়ে ভোটারসহ জনসাধারনের সাথে সৌজন্য সাক্ষাত ও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মতবিনীময় করছেন। তবে, তিনি নিজেকে প্রার্থী ঘোষনা না দিয়েই জনসাধারণের সমর্থন, সহযোগীতা ও দোয়া চাইতে গিয়ে বলছেন আ.লীগ মনোনিত প্রার্থীকে বিজয়ী করার লক্ষে সকলকে ঐক্যবন্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। তিনি বলছেন দল যাকে মনোনয়ন দিবে তার পক্ষেই সকলকে কাজ করতে হবে।
দীর্ঘদিন থেকে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হয়ে সামনের কাতারে থেকে লড়াই সংগ্রামে অগ্রনী ভুমিকায় দলের হাই কমান্ডসহ স্থানীয় নেতা-কর্মিসহ পৌরবাসীর কাছে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। পজেটিভ ভুমিকার মানুষ হিসেবে দলীয় নেতা-কর্মি সমর্থকসহ ভোটারদের কাছে মুন্ডমালায় জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছেন তিনি।
এবিষয়ে মুন্ডমালা পৌর আ.লীগ সাধারণ সম্পাদক আগামী মুন্ডমালা পৌর নির্বাচরে আ.লীগ দলীয় মেয়র পদে মনোনয়ন প্রত্যাশী আমির উদ্দিন আমিন বলেন, দীর্ঘদিন থেকে আ.লীগের সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত রেখে সামনের কাতারে থেকে লড়াই সংগ্রাম করে আসছি। এবার মুন্ডমালা পৌর সভায় মেয়র পদে আ.লীগ দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন প্রত্যাশা করছি আশা করছি আমাকে মনোনয়ন দেয়া হবে।
তিনি বলেন, জীবনের অর্ধেক সময় পার করে ফেলেছি নির্বাচিত হয়ে জনগনের সেবায়, চেষ্টা করেছি জনগনসহ দলীয় নেতা-কর্মির পাশে থেকে সেবা করার। কতটুকু পেরেছি সেটা জনগনই বলবে। তবে, তিনি আরো বলেন দল যাকে যোগ্য মনে করবে তাকে মনোনয়ন দিবে আর তিনিও মনোনয়ন প্রত্যাশী জানিয়ে যাকে মনোনয়ন দেয়া হবে তার পক্ষেই থাকবেন বলেও জানান তিনি।