করোনাকালিন সময়ে বাংলাদেশ সরকার সংসদ টেলিভিশনে আমার ঘর আমার স্কুলের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে তারই ধারাবাহিকতায় করোনা ভাইরাস মহামারীকালে গত এপ্রিল মাসের ৯ তারিখ থেকে রংপুর অনলাইন স্কুল কার্যক্রম শুরু হয়। রংপুর অনলাইন স্কুল থেকে গণিত ও উচ্চতর গণিত বিষয়ে নিয়মিত ভাবে ক্লাস নিয়ে আসছেন। রংপুর অনলাইন স্কুল থেকে ক্লাস নিয়ে রংপুর অনলাইন স্কুল থেকে ৭ বার প্রথম, ৫ বার দ্বিতীয় এবং ৬ বার তৃতীয় স্থান লাভ করে। পরবর্তীতে লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, পঞ্চগড়, নীলফামারী, চট্টগ্রাম জেলার ২৫টি অনলাইন স্কুল থেকে ক্লাস নিয়ে শিক্ষক বাতায়নে আপলোড করে শিক্ষক বাতায়নে সারা বাংলাদেশের শিক্ষকদের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান লাভ করে শিক্ষক নাম আব্দুর রাজ্জাক রুবেল।
২০১৫ সালে আলহাজ্ব সমসের উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক গণিত পদে যোগদান করে। পরবর্তীতে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করার পর উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় অধীনে দ্বিতীয় বিভাগে বি,এড পাস করে এখন পর্যন্ত উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় অধীনে এম,এড দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যয়ন করছেন।
করোনাকালীন সময়ে বাড়িতে বসে না থেকে মুক্তপাঠ থেকে ৩৫টি কোর্স সম্পন্ন করেন তিনি। মাইক্রোসপ্ট এডুকেশন সেন্টর থেকে ২৫টি কোর্স করে, শিক্ষক বাতায়নে নিয়মিত কন্টেন্ট আপলোড করে আসছেন। এরপর তিনি শিক্ষক বাতায়নে জেলা আইসিটি ৪ই এম্বাসেডর নির্বাচিত হয়।
এখন পর্যন্ত প্রায় ৯৫০ টির বেশি অনলাইন ক্লাস নিয়েছে। তিনি জানান, লালমনিরহাট জেলা বে-সরকারী স্কুল সমিতির সভাপতি খুরশিদুজ্জামান আহমেদ ও প্রধান শিক্ষক করিম উদ্দিন পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় অনুপ্রেরোনায় এবং জোত্যিষ রায় সহকারী শিক্ষক তালুক শাখাতী উচ্চ বিদ্যালয় সবসময় তাকে বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা করায়, প্রবল ইচ্ছাশক্তির ভিত্তাতে ভালো কিছু করার ইচ্ছে শক্তি থেকে এসব করছেন।
পারিবারিক জীবনে বাবা-মা তিন ভাই, স্ত্রী ও দুই কন্যা সন্তান নিয়ে তার পারিবারিক জীবন। ব্যাক্তিগত জীবনে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। তাছাড়া লালমনিরহাট জেলা চেম্বার অফ কমার্সের সদস্য, মানবাধিকার কমিশনের সদস্য এবং সে স্টুডেন্ট অ্যাকশন প্রোগ্রামে সমশের উদ্দিন উচ্চবিদ্যালয়ের এর সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছে। শিক্ষকতা কালীন সময়ে রংপুর টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে ১৪ দিনের আইসিটি প্রশিক্ষন, লালমনিরহাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৬ দিনের সৃজনশীল প্রশ্ন পত্র প্রণয়ন, পরিশোধন ও উত্তর পত্র মূল্যায়ন বিষয়ক প্রশিক্ষণ, ৩ দিনের জীবন দক্ষতা বিষয়ক প্রশিক্ষণ এবং ৬ দিনের গণিত বিষয় ভিত্তিক প্রশিক্ষণ , রংপুর মুলাটোল কামিল মাদ্রাসা থেকে ৬ দিনের বিজ্ঞান বিষয়ক প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেছেন। তিনি শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন কালে বিভিন্ন সময়ে তার একক প্রচেষ্টায় কখনও অন্য সহকর্মী শিক্ষকদের সাথে দিনে কখনও রাতে গিয়ে ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার খোজ খবর নিয়ে আসছেন। শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের সাথে ব্যাক্তিগত উদ্যোগে ফোনে কিংবা সরাসরি পড়াশোনার ব্যাপারে পরামর্শ এবং খোজ খবর নিয়ে আসছেন।
এ বিষয়ে তার প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক নুুুর মোহাম্মদ বলেন, সে (রুবেল) স্কুলেরপ্রান তার উপস্থিতি পাঠদান আমাকে বিমোহিত করে সে নিষ্ঠাবান শিক্ষক করোনা কালে নিজ প্রতিষ্ঠান সহ দেশের বিভিন্ন ¯হানে পরিচালিত অনলাইন স্কুল পরিচালিত ক্লাসে অংশগ্রহন করে বাড়িতে বসে থাকা শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদানে সকলের অনুকরণ হয়ে থাকবে।
হাতীবান্ধা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কন্দর্প নারায়ণ জানান, আমি দেখেছি এবং শুনেছি একজন শিক্ষক ব্যাক্তি উদ্যোগে ছাত্রছাত্রীদের জন্য অসাধ্য সাধন করছে আমি তাকে স্বাগত জানাই।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষাকর্মকর্তা আবুুল কালাম আজাদ বলেন, কোন সরকারি বেসরকারি উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানের সাহায্যসহযোগিতাছাড়াই অনলাইন স্কুলে পাঠদানের মাধ্যমে কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের এই আপদকালীন সময়ে প্রশংসার দাবিদার।
এবিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা শিক্ষাউন্নয়ন কমিটির সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মশিউর রহমান মামুন জানান, তাকে আমি চিনি ও জানি। আমার জানা মতে সে নিজের অর্থমেধা শ্রমদিয়ে করোনায় প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে ব্যাক্তিগত উদ্দোগে অনলাইন স্কুলক্লাস চালিয়ে যাচ্ছে। উপজেলা পরিষদ থেকে তার মহৎ এ উদ্যোগকে আরো কিভাবে ছাড়িয়ে দেওয়া যায় চিন্তাভাবনা চলছে।
অনলাইনে ক্লাস করা ছাত্রছাত্রী সাথে যোগাযোগ করলে তারা জানায়, আমরা রুবেল স্যারের অনলাইনে ক্লাস দেখি ও পড়ি তার বোঝানোর কৌশলটা খুবই সহজ সরল আমরা বাড়িতে বসে তারদ্বারা উপকৃত হয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছি।
করোনা শাক্ষা যোদ্ধা শিক্ষক রুবেল হোসেন বলেন, ছাত্রছাত্রীরা আমার প্রান আজ তারা মরনঘাতি করোনা ভাইরাসের কারনে স্কুলে যেতে না পারায় মনের তাগিদ, কর্তব্য ও দায়িত্ববোধ থেকে এই ক্ষুদ্র প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছি এবংযাবো। তবে কিছু পৃষ্ঠপোষকতা পেলে পরিধি বাড়িয়ে দিব । সকলের নিকট দোয়া প্রার্থনা কামনা করি সুস্থ্য থেকে ছাত্রছাত্রীদের জন্য কিছু করে যেতে পাড়ি।