ডিসেম্বর মাসে পৌরসভার নির্বাচনের তফসিল ঘোষনা করে বগুড়ার সান্তাহার পৌরসভাসহ বেশ কয়েকটি পৌরসভায় নির্বাচন স্থানীয় সরকারের অধীনে ভোট গ্রহন অনুষ্ঠিত হবে। এমন সংবাদ দেশের বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রচারিত হলে সান্তাহার পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী আসনের কাউন্সিলর পদের সম্ভাব্য প্রার্থীরা আগাম গনসংযোগ ও কৌশলে প্রচার-প্রচারনা শুরু করেছেন। সম্ভাব্য প্রাথীদের দৌঁড় ঝাঁপে পৌর এলাকা এখন সরগরম হয়ে উঠেছে। নির্বাচনের দিনক্ষন নির্ধারন না হলেও প্রার্থীদের দৌর ঝাঁপে নির্বাচনের আমেজ দিন দিন জমে উঠছে। ইতোমধ্যে সম্ভাব্য প্রার্থীরা পৌরবাসীর দোয়া কামনা করে নিজেদের ছবি সম্বলিত পোষ্টার লাগিয়ে গোটা পৌর এলাকা ছাপিয়ে ফেলেছেন। শহরের পাড়া মহল্লায় এখন নির্বাচনের আলাপ চারিতাই প্রাধান্য পাচেছ। ভোটারদের সমর্থন নিতে তারা নিচেছন নানা কৌশল। কোন পাড়ায় বা মহল্লায় কোন ব্যাক্তির মৃত্যু সংবাদ পেলেই সম্ভাব্য প্রাথীরা ছুটছেন মৃতের বাড়ীতে। কি মুসলীম, কি হিন্দু, কি খৃষ্টান এমনকি হরিজনদের বাড়ীতে যেতেও তারা ভুল করছেন না। মৃত ব্যাক্তির বাড়ীতে গিয়ে তারা পরিবারের লোক জনদের দিচেছন শান্তনা। তবে ভোটাররা করছেন অন্য হিসাব নিকাস। তারা হিসেব কষছেন অতীত ও ভবিষ্যৎ নিয়ে। অতীতে কে কি করেছেন এবং ভবিষ্যতে কার দ্বারা পৌর সভার উন্নয়ন হবে এসব হিসেব কষতেও ভুল করছেননা সাধারন ভোটাররা। দলীয় ভাবে নির্বাচন করার কারণে দলীয় মনোনয়ন পেতে তাই সম্ভাব্য প্রার্থীরা দৌড়ঝাঁপ, লবিং, গ্রুপিং শুরু করেছে। দলীয় মনোনয়ন পেতে প্রার্থীরা উপজেলা, জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন। কে পাচ্ছেন আওয়ামী, বিএনপি ও জাতীয় পাটির মেয়র পদে মনোনয়ন এনিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। কে হচ্ছেন পৌরসভার আগামী দিনের পৌর পিতা তা নিয়ে পৌরবাসী কৌতুহলের শেষ নেই।
দলীয় সুত্রে জানা গেছে, আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের যোগ্য ও ত্যাগী নেতাদের প্রাধান্য দেবে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ। এজন্য কেন্দ্রীয় ভাবে মেয়র মনোনয়ন দিতে চাচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ। আর অপরদিকে রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ হিসেবে আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে যাচ্ছে বিএনপি। ইতোমধ্যে দলের হাই-কমান্ডের কাছে সম্ভাব্য মেয়র তালিকা যাচাই বাছাই চলছে। তবে বড় দুই দলের দাবী যে সব প্রার্থী দলের জন্য যারা নিবেদিত প্রান, দলীয় বিভিন্ন কর্মকা-ে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে দল কে সামনে দিকে এগিয়ে নিয়ে গেছে এমন ত্যাগী নেতা কে আগামী পৌরসভার নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হবে। ১৯৮৮ ইং সালে সান্তাহার পৌরসভা স্থাপিত হয়। এই পৌরসভায় মোট ভোটার সংখ্যা ২৬ হাজার ১৭২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১২ হাজার ৮০৪ জন আর নারী ভোটার ১৩ হাজার ৩৬৮ জন। ২০১৫ ইং সালের ৩০ ডিসেম্ভর অনুষ্ঠিত সান্তাহার পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে বিএনপির সমর্থিত ধানের শীষ মার্কা প্রার্থী তোফাজ্জল হোসেন ভুট্টু মেয়র নির্বাচিত হন। আসন্ন সান্তাহার পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আগাম প্রচারনা ও গনসংযোগে মাঠে নেমেছেন তাদের মধ্যে রয়েছে- ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ৪ জন, বিএনপির ৬ জন, জাতীয় পাটীর ১ জন মেয়র প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে। মেয়র পদে আওয়ামী লীগ থেকে যারা নির্বাচনে মাঠে নেমেছেন তারা হলেন আদমদীঘি উপজেলা জাতীয় শ্রমিকলীগের আহ্বায়ক রাশেদুল ইসলাম রাজা, আদমদীঘি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও পৌরসভার প্যানেল মেয়র জার্জিস আলম রতন, আদমদীঘি উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ন সম্পাদক ও সাবেক সান্তাহার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম মন্টু, সান্তাহার পৌর আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক ও বগুড়া জেলা পরিষদের সদস্য এস এম জাহিদুর বারী, বিএনপির ৬ জন প্রার্থী হলেন সান্তাহার পৌর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও পরপর ২বার নির্বাচিত বর্তমান পৌরসভার মেয়র তোফাজ্জল হোসেন ভুট্টু, সান্তাহার পৌরসভার সাবেক মেয়র ফিরোজ মোঃ কামরুল হাসান, সান্তাহার পৌর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও ছাত্রদল নেতা এস এম আখতারুজ্জামান মিঠু, সান্তাহার পৌর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও ছাত্রদল নেতা এ এফ এম সিদ্দিকী গুড্ডু এহসান, জাতীয়তাবাদী নির্মান শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি সাধারন সম্পাদক লায়ন ফরিদ আহমেদ ও সান্তাহার পৌর যুবদলের সাবেক সাধারন সম্পাদক ও ছাত্রদল নেতা ফরহাদ হোসেন আর জাতীয় পাটী থেকে আদমদীঘি উপজেলা জাতীয় পাটির সাধারন সম্পাদক ফেরদৌস হাসান সুমন। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী সব মেয়র প্রার্থীদের দাবী তারা বিভিন্ন সময়ে আন্দোলন সংগ্রাম ও উন্নয়ন মুলক কর্মকা-ে সামনে থেকে কর্মসূচি পালন করেছে আর নিজের যোগ্যতার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আসন্ন পৌর নিবার্চনে নানা কৌশলে বিভিন্ন মাধ্যমে দীর্ঘদিন থেকে প্রচার প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাই তাদের সবার বিশ্বাস আর আশা দলীয় ভাবে মেয়র হিসেবে মনোনয়ন পাবেন।