নরসিংদীর শিবপুরে এক ব্যক্তি তাঁর স্ত্রী ও বাড়িওয়ালাসহ তিনজনকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। গতকাল রোববার ভোরে শিবপুর উপজেলার পুটিয়া ইউনিয়নের কুমরাদী গ্রামে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলো; ঘাতক বাদলের দ্বিতীয় স্ত্রী নাজমা বেগম (৪০), বাড়িওয়ালা তাইজুল ইসলাম (৭০) ও তাঁর স্ত্রী মনোয়ারা বেগম (৬০)। আহত হয়েছে ঘাতক বাদলের ছেলে সোহাগ (১৫) ও বাড়িওয়ালা তাইজুল ইসলামের মেয়ে কুলসুম (২৬)। ঘটনার সংগে জড়িত বাদল মিয়াকে এলাকাবাসী গণপিটুনি দিয়ে পুলিশ সোপর্দ করেছে। আটকৃত বাদল মিয়া কুমরাদী এলাকায় কাঠমিস্ত্রীর কাজ করতো। তিনি দ্বিতীয় স্ত্রী নাজমা ও তাঁর আগের সংসারের ৪ সন্তানকে নিয়ে কুমরাদী গ্রামে তাইজুল ইসলামের বাড়ীতে ভাড়া থাকতেন। বাদলের বাড়ি কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার জাঙ্গালিয়া গ্রামে বলে জানা গেছে। আহত সোহাগ ও কুলসুম ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তাদের অবস্থা আশংকাজনক বলে জানা গেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রোববার ভোরে বাদল ও তাঁর স্ত্রী নাজমা বেগমের মধ্যে পারিবারিক কলহের জেড়ে কথা-কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে ধারালো ছুরি দিয়ে নাজমাকে কুপিয়ে জখম করেন বাদল। এ সময় তাঁর ছেলে সোহাগ এগিয়ে গিয়ে বাড়িওয়ালা তাইজুল ও তাঁর স্ত্রী মনোয়ারা বেগমের সাহায্য চান। বাড়িওয়ালার মেয়ে কুলসুম কী হয়েছে জানতে ঘটনাস্থলে যান। কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে ঘাতক বাদল মিয়া উত্তেজিত হয়ে নাজমা বেগম, সোহাগ, তাইজুল, মনোয়ারা ও কুলসুমকে ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। এতে তারা গুরুতর আহত হয় এবং তাদের ডাক চিৎকারে আশেপাশের লোকজন ছুটে আসে। পরে তাদেরকে উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নাজমা বেগম ও মনোয়ারা বেগমকে মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাইজুল ইসলাম, সোহাগ ও কুলসুমকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হলে পথিমধ্যে তাইজুল ইসলাম মারা যায়।
নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘দুজন নারীকে আমাদের হাসপাতালে মৃত অবস্থায় নিয়ে আসা হয়। অন্যান্যের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদেরকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তাদের পেটে, মুখে, গালে ও হাতে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। প্রাথমিকভাবে বলা যায়, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তাদের মৃত্যু হয়েছে।’
শিবপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোল্লা আজিজুর রহমান বলেন, স্ত্রীর সঙ্গে কথা-কাটাকাটি থেকেই ঘটনার সূত্রপাত। বাদল নামের এক ব্যক্তি একাই পাঁচজনকে কুপিয়েছেন। অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।