দক্ষ জনশক্তি ছাড়া অদক্ষ আধাদক্ষ কর্মীর চাহিদা দিন দিন কমে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে দক্ষ জনশক্তি গড়ার ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। সেজন্য সরকার দেশের সবগুলো জেলাতেই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। বর্তমানে ৪৭টি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। ওসব কেন্দ্রে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন নতুন নতুন ট্রেড চালুর পরিকল্পনা করারও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি ইতিমধ্যে দেশের সব জেলায় প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) নির্মাণের কাজও শুরু করা হয়েছে। কারণ করোনা পরিস্থিতি শেষ হওয়ার পরই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দক্ষ কর্মীর প্রয়োজন হবে। ওই কারণেই দক্ষ কর্মী তৈরির ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বাংলাদেশের প্রবাসী কর্মীরা দেশকে ভালোবেসে বিদেশ থেকে প্রতিনিয়ত বিপুল অঙ্কের রেমিটেন্স পাঠাচ্ছে। কিন্তু যথাযথ প্রশিক্ষণ দিয়ে অধিক সংখ্যক দক্ষ কর্মী বিদেশে পাঠাতে পারলে রেমিটেন্সের উর্ধগতি অব্যাহত থাকবে। তাছাড়া যেসব জেলা থেকে কমসংখ্যক কর্মী বিদেশে যায়, সেসব জেলা থেকে সরকারের পক্ষ থেকে অধিকসংখ্যক দক্ষ কর্মী বিদেশে পাঠানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রবাসীদের আয় এদেশের অর্থনীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি খাত। দেশের বৈদেশিক মুদ্রার অন্যতম উৎস হচ্ছে প্রবাসী আয়। তাই এই খাতকে এগিয়ে নিতে সরকার আরো সচেষ্ট হচ্ছে। দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করে প্রবাসী আয় বৃদ্ধির জন্য সরকার নতুন নতুন উদ্যোগও নিচ্ছে। কারণ বিদেশে এখন দক্ষ ও প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন কর্মীদের চাহিদা অনেক বেশি। তাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলোতে যুগোপযোগী কোর্স তৈরি করা হবে। কারণ দক্ষতার অভাবে প্রবাসী কর্মীরা অনেক সময় বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়। তাদের সমস্যাগুলো গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। দক্ষ কর্মীরা বিদেশে চাকরি নিয়ে গেলে বেশি বেতনে ভাল চাকরি পাবে। তখন আর কর্মীদের নিয়ে এতো বেশি সমস্যা হবে না। দারিদ্র বিমোচনে ও নারীর ক্ষমতায়নে বৈদেশিক কর্মসংস্থান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। সুষ্ঠু অভিবাসন নিশ্চিতকরণ একটি সামষ্টিক দায়িত্ব। আর সেক্ষেত্রে গণসচেতনতার কোন বিকল্প নেই।
সূত্র জানায়, দক্ষ জনশক্তি তৈরির জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ও একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। কারিগরি শিক্ষার উন্নয়ন অব্যাহত রাখা ও উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাসমূহ মোট এক হাজার ৭৮২ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। তার মধ্যে প্রাথমিকভাবে ৮৪৯ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ের পর প্রকল্পটির বাস্তবায়ন অগ্রগতি সন্তোষজনক হওয়ায় উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাসমূহ আরো ৯৩৩ কোটি টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দ দিয়েছে। ওই টাকা দিয়ে আরো অনেক বেশি দক্ষ জনশক্তি তৈরি করা সম্ভব হবে।
এদিকে এ প্রসঙ্গে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ জানান, দেশের সব জেলায় প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে এ বিষয়ে কাজও শুরু করেছে মন্ত্রণালয়। বিদেশের শ্রমবাজারে দক্ষ জনশক্তি পাঠানোর লক্ষ্যে সরকার কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলোতে যুগোপযোগী ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন নতুন নতুন ট্রেড চালুর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে। দক্ষ কর্মী তৈরির লক্ষ্যে ইতোমধ্যেই মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে একটি বিশেষায়িত বায়ো- মেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এ্যান্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউট নির্মাণ করা হচ্ছে।