নীলফামারীর ডোমারে প্রযুক্তির সহায়তায় আন্তঃজেলা কুখ্যাত চার চোরকে গ্রেফতার করে সাফল্য দেখিয়েছে ডোমার থানা পুলিশ। রোববার দুপুরে তাদের আদালতের মাধমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তারা সবাই আদালতে স্বিকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। গত শনিবার রাত ১০ টা হতে রোববার ভোর পর্যন্ত পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের সবার নিজ নিজ বাড়ি হতে গ্রেফতার করে পুলিশ। চোরদের গ্রেফতারের খবরে চুরি যাওয়া দোকানের মালিক আতিকুর রহমান ডোমার থানা পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়েছে।
গ্রেফতারকৃত চোররা হলেন, জেলার কিশোরগজ্ঞ উপজেলার পানিয়াল পাড়া এলাকার কাশের আলীর ছেলে সদু মিয়া (৩৪), মৃত বাচ্চা মিয়ার ছেলে জিয়ারুল ইসলাম (৪৫), মহির উদ্দিনের ছেলে মহুবার রহমান (৫২) ও মৃত চালাক মাহমুদের ছেলে শফি (৫৫)।
থানা সুত্রে জানা গেছে, গত মাসের ২৭ তারিখ সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে ডোমার বাজারের সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধীকারী মোঃ আতিকুর রহমান কিছু সময়য়ের জন্য দোকানের বাইরে যান। ফিরে এসে সে দেখতে পান, তার ক্যাশবাক্সের তালা ভাঙা। সেখানে রাখা এক লক্ষ ৪৭ হাজার টাকাও নাই। তিনি সাথে সাথে ডোমার থানায় এসে একটি অভিযোগ করেন। ওই ব্যবস্যা প্রতিষ্ঠানে কোন সিসি ক্যামেরা না থাকায় ওই দিন দুপুরে পাশ্ববর্তী একটি ব্যাংকের সিসি ক্যামেরা দেখে, আতিকুর দোকানে না থাকার সময় যারা এসেছে তাদের ডোমার থানার অফিসার্স ইনচার্জ মোঃ মোস্তাফিজার রহমান ও পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) বিশ্বদেব রায় গোপনে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তাদের আচরণ বা কথায় কোন সন্দেহ না হওয়ায় সবাইকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর পুলিশ আরো ক্লু খুঁজতে থাকে। পরের দিন সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের সামনের একটি মিষ্টির দোকানের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পুলিশ সংগ্রহ করে। সেখানে পরিস্কার দেখা যায়, ওই চার চোর আগে থেকেই আতিকুরকে অনুসরণ করে। আতিকুর দোকান থেকে বের হতেই তারা আতিকুরের পিছনে কিছুদূর যায়। তারা দ্রুত ফিরে এসে চোর শফি তার হাতে থাকা ছাতা মেলে দিয়ে কুরিয়ার সার্ভিসের সামনে খোলা একমাত্র হাজী বিরিয়ানির দোকানদারকে আড়াল করে এবং জিয়ারুল সেই সময়ে এক প্যাকেট বিরিয়ানি কিনে অন্যান্য কর্মচারীদের ব্যস্ত রাখে। ওই সময় মহুবার পাশ্বের টিভির মেকানিকের সাথে বিভিন্ন কথাবার্তা বলে তাকে অন্যমনস্ক করে। এই সুযোগে সদু সুন্দরবন কুরিয়ারের ভিতরে ঢুকে সিঁদকাঠি দিয়ে ক্যাশবাক্স ভেঙে এক লক্ষ ৪৭ হাজার টাকা নিয়ে দ্রুত বেরিয়ে আসে। তার সাথে সাথে বাকিরাও ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। তবে ওই সিসি টিভি ফুটেজে চোরদের চিনতে কিছুটা অস্পস্টতা ছিল। এরপর পুলিশ বিভিন্ন সোর্স লাগিয়ে দেয়। বিভিন্ন স্থানে অভিযানও চালায়। সবশেষ শনিবার প্রযুক্তি ও সোর্সদের সহায়তায় ডোমার থানার পুলিশ চোরদের পরিচয় ও অবস্থান নিশ্চিত হয়। সন্ধ্যায় ডোমার থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) বিশ্বদেব রায়ের নেতৃত্বে এসআই কমলেশ চন্দ্র বর্মণ, সুমন রায়, শাহ আলম, এএসআই নির্মল রায়, আনোয়ার হোসেন, মিজানুর রহমানসহ সঙ্গীয় ফোর্স কিশোরগঞ্জ থানায় যায়। কিশোরগঞ্জ পুলিশের সহায়তায় শনিবার রাত ১০ টা হতে রোববার ভোর পর্যন্ত সবার নিজ নিজ বাড়িতে অভিযান চালিয়ে চোরদের গ্রেফতার করা হয় ডোমার থানার পুলিশ সদস্যরা। রাতেই তাদের ডোমার থানায় নিয়ে আসা হয়।
ডোমার থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ মোঃ মোস্তাফিজার রহমান চার চোর গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, তারা আদালতে স্বিকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। বিকালে তাদের জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।