বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর প্রায় এক হাজার কোটি টাকার কাঁকড়া রফতানি হয়। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি ও চীনের নতুন শর্তের কারণে কাঁকড়া রফতানিতে ধস নেমেছে। এদেশের কাঁকড়ার সবচেয়ে বড় ক্রেতা চীনে রপ্তানি বন্ধ হওয়ায় স্থানীয় বাজারগুলোতে ভয়াবহ দরপতন হয়েছে। ফলে লোকসানে পড়েছে খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট অঞ্চলের হাজার হাজার কাঁকড়া খামারি। চীনে কাঁকড়া রফতানির ক্ষেত্রে ঘেরের বর্ণনা, পানি, তাপমাত্রা, পরিবেশ, চাষির তথ্য, কাঁকড়ার মান যাচাই, স্বাস্থ্যসনদসহ বেশ কয়েকটি নতুন শর্ত জুড়ে দেয়া হয়েছে। আর জটিল ওসব শর্ত মেনে কাঁকড়া রফতানি কঠিন হয়ে পড়েছে। কাঁকড়া খামারি ও রফতানিকারকদের সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, স্বাভাবিক সময় খামারগুলো থেকে প্রতিদিন গড়ে ২৫ টন কাঁকড়া রফতানিকারকদের কাছে পাঠানো হতো। কিন্তু চীনে রপ্তানি বন্ধ থাকায় বর্তমানে রফতানিকারকরাও কাঁকড়া কিনছে না। আর সময়মতো আহরণ না করায় খামারেই কাঁকড়া মরতে শুরু করেছে। রফতানিকারকরা শর্ত নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছে। কাঁকড়া রফতানির ক্ষেত্রে সরকারের দ্রুত হস্তক্ষেপ জরুরি হয়ে পড়েছে। অন্যথায় শে কাঁকড়া রফতানির বড় বাজার হারাবে।
সূত্র জানায়, বড় আকারের কাঁকড়া (প্রতিটি ওজন প্রায় ২০০ গ্রাম) চলতি বছরের শুরুতেও কেজি প্রতি ১২০০-১৫০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। কিন্তু বাজারে ক্রেতা সংকটে বর্তমানে তা ৩৫০-৪০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। উৎপাদিত কাঁকড়া বিক্রি করতে না পেরে চাষিরা নিঃস্ব হয়ে পড়ছে। মৎস্য পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ অফিসের তথ্যানুযায়ী ২০১৯-২০ অর্থবছরের অক্টোবর-ডিসেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে দেশের দক্ষিণাঞ্চল থেকে কাঁকড়া রফতানি হয়েছে ১২৮.৫২ মেট্রিক টন। কিন্তু করোনার কারণে চীনে রপ্তানি বন্ধ হওয়ায় জানুয়ারি-মার্চে রপ্তানি কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৩৫.৯৬ মেট্রিক টন।
এ প্রসঙ্গে রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান দিব্য এন্টারপ্রাইজের পরিচালক তপন কুমার জানান, এখন কাঁকড়া রফতানিতে ঘেরের তথ্য যাচাই, খামারির পরিচিতি, পরিবেশ, স্বাস্থ্যসনদসহ বেশ কয়েকটি নতুন শর্ত দিয়েছে চীন। রফতানিকারকরা ওসব শর্ত নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছে। তারা শর্ত পূর করতে রাজি আছেন। এ ক্ষেত্রে সরকারের দ্রুত হস্তক্ষেপ না নিলে দেশ কাঁকড়া রফতানির বড় বাজার হারাবে।