সেতুতে উঠতে গর্ত, নামতে গর্ত। সেই গর্ত দিয়ে রড বেড়িয়ে আছে। লোহার কাঠামোতে মরিচা ধরেছে, কোথাও আবার ভেঙে আছে। শুধু তাই নয়, সংযোগ সড়কও বেহাল। পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার রাঙ্গাবালী ইউনিয়নের পশ্চিম নেতা ও গন্ডাদুলা গ্রামের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া রুপাইর খালের ওপর নির্মিত সেতুটির এ দশা।
এই সেতুতে পারাপার হওয়া পথযাত্রীরা বলছেন, একটি মটরসাইকেল পারাপার হলেও সেতুটি কেঁপে ওঠে। তবুও কাছাকাছি বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় ৬ গ্রামের মানুষকে ঝুঁকি নিয়ে এ সেতু পারাপার হতে হয়। সরেজমিনে দেখা গেছে, এই সেতুর দুই অংশের দুইটি গর্ত দিয়ে রড বেড়িয়ে আছে। লোহার ভিম ও পাতগুলো মরিচা ধরে কোথাও কোথাও ভেঙেও আছে। নড়বড়ে অবস্থা হলেও বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়ে এ সেতু দিয়ে লোকজন চলাচল করছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উপজেলা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৫-৯৬ সালে রুপাইর খালের ওপর এ আয়রণ সেতুটি নির্মাণ করা হয়। কয়েক বছর আগে একবার সেতুটির সংস্কার করা হয়েছিল। কিন্তু আবার সেতুটির দুইটি অংশে দুটি গর্তের সৃষ্টি হয়। এতে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে সেতুটি।
স্থানীয়রা বলেছেন, প্রায় দুই যুগ আগে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। সেতুটি দিয়ে প্রতিদিন অন্তত কয়েক হাজার লোক পারাপার হয়। উপজেলার গঙ্গিপাড়া, সামুদাবাদ, পুলঘাট, নেতা, জুগির হাওলা ও উনিশ নম্বর গ্রামের মানুষকে এই সেতু দিয়ে পারাপার হয়ে উপজেলা সদরে যেতে হয়। কিন্তু সেতুটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পরায় বিপাকে পড়েছেন তারা। ফলে অনেকে বিকল্প পথে কয়েক কিলোমিটার সড়ক ঘুরে গন্তব্যে পৌঁছতে হয়।
পশ্চিম নেতা গ্রামের বাসিন্দা রুবেল হাওলাদার বলেন, এই সেতুটি দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ পারাপার হয়। কিন্তু একটা মটরসাইকেল ওঠলেই সেতু থরথর করে কেঁপে ওঠে। দিনে কোন রকম মটরসাইকেল চলাচল করলেও রাতে সেতু পার হওয়ার সময় খুবই সতর্ক থাকতে হয়। রাতের বেলায় অসতর্কতার অনেক পথচারী প্রায়ই আহত হয়। ওখানে একটি নতুন সেতু দরকার।
গ-াদুলা এম এইচ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোসাঃ তাহমিদা সুলতানা বলেন, করোনার আগে এই ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটির দক্ষিণ পাড় থেকে প্রায় ৮৫জন কচিকাঁচা শিক্ষার্থী এই স্কুলে আসা-যাওয়া করতো। ক্লাস শুরু হলে আবার শিক্ষার্থীদের ওই সেতু পারাপার হতে হবে। কিন্তু সেতুটি সংস্কার নাহলে যেকোন মুহুর্তে মারাত্মক দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ডা. জহির উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, বর্তমানে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করবো। উপজেলা প্রকৌশলী মিজানুল কবির বলেন, দুইটি প্রকল্পে ওখানে একটি সেতু নির্মাণের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। ইতোমধ্যে সয়েল টেস্ট ও মাপ শেষ হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাশফাকুর রহমান বলেন, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জনগুরুত্বপূর্ণ ওই সেতুটির বিষয়ে এলজিইডিকে অবহিত করা হবে।