রাজশাহীর চারঘাটে আমন ধানে খোলপচা ও পাতামোড়ানো রোগের সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। ফসল রক্ষায় কীটনাশক দিয়েও তেমন উপকার পাচ্ছেন না কৃষকরা। সেইসঙ্গে রয়েছে ইঁদুরের উপদ্রব। সবমিলিয়ে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
উপজেলার নিমপাড়া ইউনিয়নের ভাটপাড়া গ্রামের কৃষক আবদুল কাদের জানান, ৯ কাঠা জমিতে পাতামোড়া ও খোলপচা রোগ দেখা দিয়েছে।
এ সময় তিনি মরা ধানের ছোপা ও মোড়ানো পাতার ভেতরে পোকার অসংখ্য সাদা ডিম বের করে দেখান। ওই ডিম থেকে ছোট ছোট লম্বাকৃতির পোকা হয়ে ধানের পাতা মরে যায়।
তিনি জানান, দোকানির পরামর্শে কীটনাশক স্প্রে করেছেন। কিন্তু তাতে তেমন কাজ হচ্ছে না।
একই ইউনিয়নের কৃষক রেজাউল ইসলাম জানান, তিনি দেড় বিঘা জমিতে আমন ধান আবাদ করেছেন। কয়েকদিন ধরে তার খেতে খোলপচা ও পাতামোড়ানো রোগ দেখা দিয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসে গিয়ে পরামর্শ নিয়ে কীটনাশক স্প্রে করায় এখন কিছুটা উন্নতি হয়েছে।
সদর ইউনিয়নের রাওথা গ্রামের শফিকুল ইসলাম বলেন, ২ বিঘা জমিতে আমন ধানের চাষ করেছি। প্রায় মাসখানেক আগে সার দিয়েছি। বীজ এখন ঘনসবুজ হতে শুরু করছে। কয়েক দিনের মধ্যেই থোর (ধানের ছড়ার প্রাথমিক অংকুর) আসবে। এখন পাতা মোড়ানো ও খোলপচা রোগ দেখা দিয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসে গিয়ে পরামর্শ নিয়ে কীটনাশক স্প্রে করতে হচ্ছে।
এদিকে আমন খেতে পোকা আক্রমণের পাশাপাশি ইঁদুরের উপদ্রব দেখা দিয়েছে। ইঁদুরের হাত থেকে ফসল বাঁচাতে খেতজুড়ে ছেঁড়া কাপড়, কাগজ, শুকনা কলাপাতা টানিয়ে রাখছেন কৃষকরা।
চাষি মহিদুল ইসলাম জানান, তিনি ১৮ কাঠা জমিতে আমন আবাদ করেছেন। পোকায় ধানের ক্ষতির পাশাপাশি কয়েকদিন ধরে খেতে ইঁদুরের উপদ্রব দেখা দিয়েছে। ধানের গোছার মধ্যে থেকে দু’তিনটি করে চটা কেটে ফেলে চলে যায় ইঁদুরের দল।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার জানান, এ বছর উপজেলায় ৪ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। মৌসুমের শুরুতেই কয়েক দফা দূর্যোগ, অতিবৃষ্টিতে বীজতলা নষ্ট ও রোপণকৃত আমনের চারা পচে যাওয়ায় কৃষকদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছিল। তবে বীজের সংকট কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছি। এখন শুনছি পোকার আক্রমণ শুরু হয়েছে।
তিনি বলেন, খোঁজ নিয়ে জেনেছি কোনো কোনো এলাকায় খোলপচা ও পাতামোড়ানো রোগ স্বল্পাকারে দেখা দিয়েছে। তবে এসব প্রতিরোধে কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। সব রকম সমস্যা কাটিয়ে উপজেলায় আমনের ফলন ভাল হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।