‘‘যা দেবী সর্বভূতেষু শক্তিরূপেন সংস্থিতা নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমোঃ নমোঃ’’ এমনই মন্ত্র পড়তে শোনা যাচ্ছে নির্মান দত্তের মুখে। নিপুন হাতের ছোঁয়ায় নিজের হাতে প্রতিমাটি তৈরী করেছে নেত্রকোনার দুর্গাপুর পৌরএলাকার শিবগঞ্জের ১৪ বছরের কিশোর নির্মাণ দত্ত। কিশোর বয়সে নিজের হাতে প্রতিমা গড়ে মন্ত্র বলে পূজা করে সাড়া ফেলেছে কিশোর নির্মাণ দত্ত। প্রতিভাবান হতে কোন বয়সের প্রয়োজন হয় না, নিজের সুপ্ত ইচ্ছাকে জাগ্রত করতে পারলেই হয় এমনটাই প্রমান করেছে ঐ কিশোর।
এ নিয়ে শুক্রবার সকালে শিবগঞ্জ এলাকায় গিয়ে জানাগেছে, দুর্গাপুর পৌর শহরের শিবগঞ্জ গ্রামের গোপাল দত্ত ও নমিতা দত্তের ছোট ছেলে নির্মাণ দত্ত। চার বছর ধরেই নিজেই প্রতিমা তৈরি করে পূজা শুরু করে নির্মাণ দত্ত। সে দুর্গাপুর এমকেসিএম পাইলট সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র। ছোটবেলা থেকেই তার ছবি আঁকার প্রতি ঝোঁক ছিল। বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় তার মনে সাধজাগে প্রতিমা তৈরী করার। কোন ওস্তাদ না ধরেই বাড়িতে মাটি দিয়ে প্রতিমা তৈরীর চেষ্টা করতে থাকে সে। ২০১৬ সালে নিজের ঘরের বারান্দায় মাটি দিয়ে তৈরি করে দুর্গা প্রতিমা। তার প্রতিভা দেখে অবাক হয়ে যান মা-বাবা ও আত্মীয় স্বজনরা। এইভাবে প্রতি বছর বাড়ির আঙিনায় মন্ডপ তৈরী করে দূর্গাপূজা করছে নির্মাণ দত্ত। গত প্রায় এক মাসের চেষ্টায় নির্মাণ তৈরি করল দুর্গা, কার্তিক, গনেশ, মহিষাসুর, লক্ষী ও স্বরস্মতির প্রতিমা। মনের মাধুরী দিয়ে রং তুলির কাজটিও নিজের হাতে করে সে। কোন ডাইস বা ফর্মা ছাড়াই নিজ হাতে প্রতিমাগুলোর মুখমন্ডল তৈরি করেছে, যা খুবই আশ্চর্য্যজনক।
পাল বংশের সন্তান না হয়েও নির্মাণ দত্ত যে প্রতিমা তৈরি করেছে তা দেখে হতবাক স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন। এলাকার একাধিক বাসিন্দারা বলেন, নির্মাণ দত্তের আত্মবিশ্বাস ও সাহস দেখে আমরা অবাক হয়েছি। প্রতিমা তৈরিতে তার নিখুঁত কাজ সত্যিই অসাধারণ ও প্রসংশার দাবি রাখে।
নির্মাণ দত্ত এ প্রতিনিধি কে জানায়, আমি নিজ হাতে দেবী দুর্গা মাকে বানাবো, এটা আমার ইচ্ছে ছিলো অনেক দিনের। সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছে ও সকলের আশির্বাদে আজ আমি সেটা করতে পেরেছি। এজন্য আমার খুব আনন্দ ও ভাল লাগছে। আপনারা আমার জন্য আশির্বাদ করবেন আমি যেন আমার সুপ্ত ইচ্ছে নিয়ে সামনে এগুতে পারি।
দুর্গাপুর উপজেলার পূজা উদ্যাপন কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মানেশ চন্দ্র সাহা এ প্রতিনিধি কে বলেন, প্রতিমা তৈরিতে তার নিখুঁত কাজ সত্যিই অসাধারন। নির্মাণ কিশোর বয়সে কোন সাহায্য ছাড়াই দুর্গা প্রতিমা তৈরী করেছে। বিষয়টি সত্যিই প্রশংসনীয় আমরা তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি।