চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে দুই স্কুল ছাত্রীকে অপহরণের চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে কুড়িগ্রামরে রৌমারী উপজেলার খেয়ার চর নামক স্থানে। এ ঘটনায় রৌমারী থানায় অভিযোগ না নেয়ায় কুড়িগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেও কোন ফল পাচ্ছে না, অভিযোগ ভূক্তভোগী দুই কিশোরীর স্বজনদের।
ভূক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, “কুড়িগ্রামরে রৌমারী উপজেলার খেয়ার চর নামক এলাকার ইব্রাহীমের মেয়ে খেয়ারচর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণী পড়-য়া তাজমিনা (১৩) এবং এরশাদুলের মেয়ে বকবান্ধা উচ্চবিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণী পড়-য়া ইসানা (১৫) তারা দু’জন চাচাতো বোন। ২২ সেপ্টেম্বর এরশাদুলের স্ত্রী, ইসানার মায়ের অপারেশনের জন্য রংপুর মেডিকেলে নিয়ে যাওয়ায় ইসানা বাড়ীতে একাই অবস্থান করে। বাড়ী ফাঁকা বিধায় সন্ধায় ইসানার চাচাতো বোন তাজমিনাকে ডেকে এরশাদুলের বাড়ীতে এক সাথে ঘুমায় দুই বোন। ভোর সাড়ে ৫টায় ঘুম থেকে উঠে দাঁত ব্রাশ করা অবস্থায় একই এলাকার সহিদ আলীর দুই ছেলে মাসুম ও মামুন চাকুরী পাইয়ে দেয়ার নাম করে তাদের নৌকা যোগে কর্তিমারী ডিসি রাস্তায় এনে ঢাকার উদ্দেশ্যে রিফাত পরিবহণে তুলে দেয়। পরে স্বজনরা তাদের সায়েদাবাদ এলাকায় রিফাত পরিবহণ আটক করে তাদের উদ্ধার করে ফিরিয়ে নিয়ে যায় বাড়ীতে। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে গত ২৩ সেপ্টেম্বর দুই কিশোরির চাচা শুক্কুর আলী বাদী হয়ে রৌমারী থানায় মাসুম, মামুন ও তাদের পিতা সহিদ আলীর নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে যান। বিলম্ব কারণ দেখিয়ে রৌমারী থানা পুলিশ অভিযোগ গ্রহণ না করায়, ২০০০ইং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধনী/০৩) এর ৭/৩০ ধারায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল কুড়িগ্রামে মামলা দায়ের করেন।”
অভিযুক্ত মাসুম বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, “ওই ঘটনার দুই কিশোরীর সাথে আমার কোন সম্পর্ক বা যোগাযোগ নেই, তাছাড়া আমি ঢাকায় থাকি, টাইলস্ এর কাজ করে খাই। ঘটনার দিনও আমি ডাকায় ছিলাম। বিষয়টি আমি পরে শুনেছি। আমার জানামতে কিশোরীর বাপ-চাচারা সহজ সরল। আমাকে ফাঁসানোর জন্য কেউ উস্কানি দিচ্ছে।”
স্থানীয় ইউপি সদস্য হায়দার আলী জানান, “মিমাংশা করার জন্য দুই পক্ষকে বলেছিলাম, কিন্তু কোন পক্ষই মিমাংশায় বসে নাই।
এ বিষয়ে যাদুরচর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সরবেশ আলী জানান, “আমি ঘটনা শুনেছি, আমার কাছে কেউ আসেনি। সত্যতা কতটুকু আমি জানি না।”
এ বিষয়ে রৌমারী থানা পুলিশ জানিয়েছেন, “পরিবারটি খুবই গরীব, সাধারণ সহজ সরল মানুষ। মেয়ে দুটিকে জোর করে নিয়ে যাওয়ার কোন আলামত পাওযা যায়নি। গার্মেন্টসে চাকুরীর জন্য বাবা-মাকে না জানিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্য যাচ্ছিল। বিষয়টি গ্রাম্য শালিসের মাধ্যমে মিমাংশা করার জন্য ডেকেছিলাম, কিন্তু কোন পক্ষই থানায় আসে নাই। এ ছাড়া কুড়িগ্রাম থেকে মামলার কোন কাগজপত্র আমরা পাইনি। পাইলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।”