নেত্রকোণার বারহাট্টা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের ১২ গ্রামের ২০ হাজার মানুষের পা’ যেন চলে না। ৫ কিলোমিটার রাস্তায় ২০ সাঁকো। নড়বড়ে। একটি সাঁকো পার হয়ে কিছুদূর এগুতেই আর একটি। এমনি করে ২০। পা’ ফেলার জন্য একটি মাত্র বাঁশ বিছিয়ে তৈরী এসব সাঁকোর কোন কোনটির নিচ দিয়ে বইছে প্রবল স্রােত। এপার-ওপার হওয়ার সময় প্রায়শঃ ঘটে দূর্ঘটনা। এসব দেখার যেন কেউ নেই- এমনি অভিযোগ এলাকাবাসির।
জানা যায়, রায়পুর ইউনিয়নের এই রাস্তাটি (নং- ৩৭২০৯৩০০৮) অনেক দিনের পুরাতন। রাস্তাটি বারহাট্টা উপজেলার ফকিরের বাজারে অবস্থিত রায়পুর ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় ও তেঘরিয়া বাজার সংলগ্ন নেত্রকোণা-ঠাকুরাকোণা-কলমাকান্দা রাস্তার মাঝে সংযোগ সৃষ্টি করেছে। রাস্তাটি এলাকার ঝাউয়াইল, শিমুলিয়া, মাইঝপাড়া, পারুয়া, নগদাপাড়া, হাপানিয়া, চাকুয়া, চিচড়াকান্দা, রায়পুর, কান্দাপাড়া, তিলসিন্দুর, গাইকুড়িবর প্রভৃতি গ্রামের মানুষের চলাচলের একমাত্র পথ। দীর্ঘদিন যাবত সংস্কার না হওয়ায় রাস্তাটির বিভিন্ন অংশে অসংখ্য ভাঙ্গা ও খাদের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিটা ভাঙ্গা স্থানের উপর একটি বাঁশ রেখে সাঁকো তৈরী করেছেন স্থানীয়রা। বার-বার সাঁকো পেরুতে গিয়ে সবাইকে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হয়। শিশু, নারী ও বয়স্কদের দূর্ভোগ অবর্ণণীয়। ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা সাঁকো পার হতে গিয়ে দূর্ঘটনায় পড়ে অনেক সময় বই-খাতা হারায়। কৃষকরা তাদের পণ্য বাজারে নিয়ে যেতে না পারায় মূল্য কম পায়।
এই প্রতিনিধি সোমবার রাস্তাটি পরিদর্শন করেন। রাস্তায় দেখা পাওয়া পথিক শিমুলিয়া গ্রামের নূরজাহান বেগম বলেন, ুএকটু পর পরই ভাঙ্গা। সাঁকো পার অইতে সমস্যা অয়।” পারুয়া গ্রামের আব্দুছ ছাত্তার বলেন, ুবাড়িত বইয়া থাহন যায় না, কাজ-কামের লাইগ্যা বাইর অইতে অয়। কষ্ট কইর্যাই যাওয়া-আসা করি।”
তেঘরিয়াবাজারের নেক্সাস রয়েল ক্লাবের সাধারন সম্পাদক ফয়সল আলম খান বাপ্পী বলেন, “৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৬টি মাদ্রাসা, ১ টি উচ্চবিদ্যালয় ও ১ টি কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ এলাকার ১২ গ্রামের ২ থেকে ৩ হাজার মানুষ প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করে। তাদের দূর্দশা লাঘবে জরুরীভিত্তিতে রাস্তাটির সংস্কার প্রয়োজন।
রায়পুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রতন কুমার সাহা বলেন, ১৯৯২-৯৩ সনে রাস্তাটির কিছুটা কাজ হয়েছিল। এরপর আর কিছু হয় নাই।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম মোরশেদ বলেন, রাস্তাটির উন্নয়নের জন্য এলাকাবাসীর একটি দরখাস্ত পেয়েছি। দরখাস্তটি সুপারিশসহ জেলা প্রশাসকের বরাবরে পাঠানো হয়েছে।”