বাংলাদেশের সর্বকনিষ্ঠ উপজেলা গুলির মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভোলাহাট উপজেলা অন্যতম। আম, রেশম, মাছ আর ধানে ধন্য ও শিল্প সংস্কৃতির অঙ্গণে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। আধুনিক বিজ্ঞানের উৎকর্ষতার যুগেও এ উপজেলায় যোগাযোগ ব্যবস্থা সে ধরনের না থাকায় বহুবিধ সমস্যার আর্বতে নিপতিত থাকার কারণে অনেকেই এ জনপদকে বলে থাকেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ। চাকরী জীবিরা বলে থাকেন‘ পানিষ্টম্যান্ট এরিয়া’। উন্নত অর্থনৈতিক অঞ্চল ও পর্যটন উপজেলা হিসেবে বিল ভাতিয়ায় সরকারী ভাবে প্রকল্প গ্রহণ করলে ব্যাপক সম্ভাবনার সৃষ্টি হতে পারে। দেশের ২য় বৃহত্ততম বিল বিলভাতিয়া সরকারী বেসরকরী মিলিয়ে ধানী ও বিল প্রায় ৬হাজার ৮৬ ও জলাশয় প্রায় ৩শ’২ একর। বিশাল এ বিলে উন্নয়নের জন্য প্রকল্প গ্রহণ করলে কৃষি, মৎস্য, বনায়ন, ভূ-গর্ভস্থ্য পানির অপচয় রোধ হবে, অতিথি পাখির অভয়ারণ্য, বিনোদন কেন্দ্র ও বন্যা রক্ষা বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে ব্যাপক অর্থনৈতিক আয় সম্ভব হবে। তাছাড়া ভোলাহাট উপজেলাসহ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার অনেক নাগরিকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এ বিলটিকে খনন করলে পানি রিজার্ভাব হিসেবে পানি সংরক্ষণ করা যাবে। এ পানি দিয়ে হাজার হাজার একর কৃষি জমি চাষাবাদ করা সম্ভব হবে। এতে করে গভীর নলকূপের মাধ্যমে পানি উত্তোলন বন্ধ হলে ভূ-গর্ভাস্থ পানির অপচয় রোধ হবে এবং ভূ-উপরস্থ পানির ব্যবহার বৃদ্ধি পাবে। ফলে কৃষক কৃষি জমি চাষে অল্প খরচে অধিক ফসল উৎপাদন করতে সক্ষম হবে। এদিকে বিলটি খননে চারেদিকে পাড় নিমার্ণ করে জলাশয়ে মধ্যস্থানে একটি বিনোদন কেন্দ্র তৈরী করা হলে বিনোদন কেন্দ্র করা সম্ভব। ফলে বিলটি দৃষ্টিনন্দন হবে তেমনি অর্থনৈতিক আয় বেড়ে যাবে। এদিকে বিলটির ফাঁকা স্থানে চুরি ছিন্তাই হয় সেটিও নিয়ন্ত্রণ হবে। কমবে মাদক সেবীদের সংখ্যাও। এদিকে পাড় বা রাস্তার দু’পাশে বনজ বা ফলজ গাছ রোপন করলে অর্থনৈতিক আয় ব্যপক হারে বৃদ্ধি পাবে। মনোরম দৃষ্টিনন্দন এ বিলভাতিয়া দেখতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ছুটে আসবেন বিনোদন প্রেমীকেরা। বনায়ন হতে পারে আয়ের বড় একটা উৎস এবং পর্যটন এলাকা। বিল ভাতিয়া কালের বির্বতনে জলাশয়ের অংশ তলানিতে পৌঁচ্ছে। ফলে মৎস্য উৎপাদন ব্যাপক ভাবে হ্রাস পেয়েছে। বিলটি খননে জলাশয়ের অংশ প্রস্থ্য হলে মাছ উৎপাদন ব্যাপক ভাবে বৃদ্ধি পাবে। ভোলাহাট উপজেলাসহ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সকল মানুষের মাছের চাহিদা পূরণ করে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করে প্রচুর অর্থ আয় সম্ভব হবে। এদিকে উপজেলার আলালপুর হয়ে শিবগঞ্জ উপজেলার শিয়ালমারা পর্যন্ত রাস্তা করা হলে শিবগঞ্জ উপজেলার সাথে যোগাযোগ সহজ হবে এবং রাস্তাটি বন্যা রক্ষা বাঁধের সৃষ্টি হবে স্থানীয় অর্থনিতিরা বলেন। অপরদিকে ১৯৬২সালে কানাডা থেকে এক দল গবেষক বিলভাতিয়া জুড়ে খনিজ সম্পদ বিষয়ে গবেষনা চালিয়ে পিট কয়লা ও তেলের সন্ধান পেয়ে ছিলেন। অনেকে বলেন সীমান্ত জটিলতা আবার কেউ বলেন ৪০ বছর না হলে পরিপক্কতা না হওয়ায় সম্পদগুলো উত্তোলন সম্ভব হয়নি। ফলে এ বিষয়টিও ভেবে দেখা যেতে পারে। এখান থেকেও অর্থনৈতিক চাকা ঘুরে যেতে পারে। এ বিলভাতিয়াটিতে সরকারী ভাবে উদ্যোগ নিয়ে খনন করলে কৃষি, মৎস্য, বনায়ন, বিনোদন, মাদক, চুরি-ছিন্তাই, কর্মসংস্থানসহ উন্নয়নে ব্যাপক লাভবান হবে দেশে ঘুরে যাবে দেশের অর্থনৈতির চাকা। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মশিউর রহমান সরজমিন বিলভাতিয়া পরিদর্শন করে বলেন, বিশাল এ বিলভাতিয়ায় পরিকল্পিত প্রকল্প গ্রহণ করা হলে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভাগ্য বদলে দিবে। পর্যটন এলাকা হিসেবে কক্সবাজারকে ছাড়িয়ে যাবে। তিনি বলেন, তার অবস্থানে থেকে যত দূর সম্ভব প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান। এ সময় উপজেলা চেয়ারম্যান রাব্বুল হোসেন বলেন, বিলভাতিয়া অর্থনৈতিক চাকা ঘুরিয়ে দিবে সারা দেশের। ফলে সরকারের কাছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী করেন।