লালমনিরহাটের বুড়িমারীতে পিটিয়ে হত্যার পর লাশ পোড়ানোর ঘটনায় জুয়েলের পরিবারকে আর্থিক অনুদান দিয়েছে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসন।
রোববার দুপুরে ডিসি সম্মেলন কক্ষে নিহত জুয়েলের মেয়ে জেবা তাসনিয়ার হাতে ২০ হাজার টাকার চেক তুলে দেন ডিসি আবু জাফর। এ সময় নিহত জুয়েলের বড় ভাই আবু ইউসুব মো. তওহিদুন্নবী ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
নিহত জুয়েলের মেয়ে জেবা তাসনিয়া জানায়, যারা আমাকে এতিম করেছে, পিতৃহারা করেছে, তাদের কঠোর শাস্তি চাই। শুধু অনুদান নয়, বাবার হত্যাকারীদের বিচার চাইতেই এসেছি।
জুয়েলের বড় ভাই আবু ইউসুব মো. তওহিদুন্নবী বলেন, আমাদের বিশ্বাস, প্রশাসনের তৎপরতায় ন্যায় বিচার পাব। ন্যায় বিচারের অপেক্ষায় রয়েছি। তবে দ্রুত বিচার কাজ শেষ করতে কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানাই।
শহিদুন্নবী জুয়েল রংপুর শহরের শালবন মিস্ত্রিপাড়ার আবদুল ওয়াজেদ মিয়ার ছেলে। তিনি রংপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক গ্রন্থাগারিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র। গত বছর চাকরিচ্যুত হওয়ায় কিছুটা মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন তিনি।
জানা গেছে, গত ২৯ অক্টোবর লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারীতে জুয়েল ও তার সঙ্গী একই এলাকার সুলতান রুবায়াত সুমনকে গণপিটুনি দিয়ে ইউপি ভবনে আটকে রাখেন স্থানীয়রা। পরে সন্ধ্যায় ইউপি ভবন ভেঙে জুয়েলকে পিটিয়ে হত্যা করে লাশ আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়। ওই দিন রাত সাড়ে ১০টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় পুলিশ। এতে স্থানীয়দের ছোঁড়া পাথরের আঘাতে পাটগ্রাম থানার ওসি সুমন কুমার মহন্তসহ ১০ পুলিশ সদস্য আহত হন। পুলিশ জুয়েলের সঙ্গী সুমনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ ঘটনায় নিহত জুয়েলের চাচাতো ভাই সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা এবং পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ও ইউপি ভবন ভাঙচুরের দায়ে ইউপি চেয়ারম্যান বাদী হয়ে অপর একটি মামলা দায়ের করেন। আলোচিত এ ঘটনায় তিনটি মামলা ১১৪ জনের নামসহ শত শত অজ্ঞাত আসামির মধ্যে পুলিশ এখন পর্যন্ত ২৯ জনকে গ্রেফতার করেছে।