মাত্র ৩৬ ঘন্টার মধ্যে স্কুলে শাহিনা হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে লালমনিরহাট সদর থানা পুলিশ। গলায় রশি ও ওড়না পেচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয় বিধবা শাহিনাকে। পরে তিস্তা নদীর দোলায় ফেলে দেয়া হয়। এ মামলায় গ্রেফতার হওয়া দবিয়ার রহমান (৪০) ও তার স্ত্রী শাহিনা বেগম (৩৩) দম্পতি আদালতে হত্যাকান্ডের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
সোমবার (৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আফাজ উদ্দিনের আদালত তাদের জবানবন্দি গ্রহণ করেন। গ্রেফতার দম্পতি লালমনিরহাট সদর উপজেলার খোচাবাড়ি এলাকার মৃত মহির উদ্দিনের ছেলে দবিয়ার রহমান ও তার স্ত্রী শাহিনা বেগম বলে জানা গেছে।
এর আগে শনিবার (৭ নভেম্বর) সকালে সদর উপজেলার তিস্তার চরাঞ্চল খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের কালমাটি আনন্দ বাজার পাকার মাথা এলাকা থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বিধবা শাহিনার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মৃত শাহিনা আদিতমারী উপজেলার পূর্ব ভেলাবাড়ি গ্রামের কমর উদ্দিনের বিধবা মেয়ে।
লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহা আলম জানান, মৃত শাহিনা পেশায় একজন কবিরাজ। তার রোগী ছিলেন সদর উপজেলার খোচাবাড়ি এলাকার দবিয়ার রহমান। চিকিৎসার একপর্যায়ে কবিরাজ শাহিনার স্বামীর মৃত্যু হয়।
এরপর রোগী দবিয়ারের সঙ্গে তিনি পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। চিকিৎসায় দবিয়ার সুস্থ হলে বিয়ের জন্য চাপ দেন শাহিনা। কিন্তু স্বামীর পরকীয়া প্রেম ও বিয়ে মানতে নারাজ দবিয়ারের স্ত্রী শাহিনা বেগম। বিয়ের জন্য প্রায় সময় দবিয়ারের বাড়িতে অবস্থান নেন শাহিনা বেওয়া।
এতে অতিষ্ঠ হয়ে দবিয়ার রহমান ও তার স্ত্রী শাহিনা বেগম পরিকল্পনা করে শুক্রবার (৬ নভেম্বর) কৌশলে ডেকে নিয়ে পরকীয়া প্রেমিকা শাহিনা বেওয়াকে হত্যা করে। পরদিন শনিবার (৭ নভেম্বর) সকালে কালমাটি আনন্দবাজার পাকার মাথা চরাঞ্চলে অজ্ঞাত নারীর মরদেহ দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেন। মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিলে তার আত্মীয়-স্বজনরা মৃত শাহিনা বেওয়ার পরিচয় শনাক্ত করেন।
এ ঘটনায় নিহত শাহিনা বেওয়ার ভাই একরামুল হক বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। প্রযুক্তি ব্যবহার করে এ মামলার মূলহোতা পরকীয়া প্রেমিক দবিয়ার ও তার স্ত্রী শাহিনা বেগমকে রোববার (৮ নভেম্বর) রাতে গ্রেফতার করে সদর থানা পুলিশ।
গ্রেফতার দবিয়ার-শাহিনা দম্পতিকে সোমবার (৯ নভেম্বর) সন্ধ্যার পর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আফাজ উদ্দিনের আদালতে হাজির করে পুলিশ। সেই আদালতে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলে সদর থানার ওসি শাহা আলম জানান।