নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে চাড়ালকাটা নদী পুনঃখননের স্তুপকৃত বালু লুটপাটের মহোৎসব চলছে। ইজারা দেয়ার দরপত্র আহবানে পানি উন্নয়ন বোডের (পাওবোর) গড়িমশির কারণে সরকার কোটি টাকা রাজাস্ব হারাচ্ছে। এসব বালু অবৈধ উপায়ে বিক্রির জন্য এলাকাভিত্তিক সিন্ডিকেট গড়ে ওঠেছে। ট্রলি প্রতি ৭/৮শ’ টাকায় প্রায় ৮৫ স্থানে স্তুপকৃত বালু দিনে-রাতে পাচার করছে। প্রশাসনের ঢিলেমিতে পাচারকারীরা প্রতিদিন মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
পাওবো সুত্রে জানা যায়, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে নীলফামারী জেলায় ২৫ কিলোমিটার অংশে চাড়ালকাটা নদী খননের জন্য ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে প্রায় ৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। ঠিকাদার বোমা মেশিন দিয়ে নদী খনন করে উত্তোলনকৃত বালু নদীর তীর সংলগ্ন ৮৫ স্থানে স্তুপ করে রাখেন। এসব বালুর স্তুপ ইজারা দেয়ার জন্য দরপত্র আহবান করা হলে কোটি টাকার ওপরে সরকারের রাজাস্ব আয় হবে। সৈয়দপুর পাওবো’র এক প্রকৌশলী নদীর তীর সংলগ্ন বালুর স্তুপ জরিপ করে রাজাস্ব আয়ের টাকার পরিমান নিশ্চিত করেছেন।
সরেজমিনে জানা যায়, নদীর তীর সংলগ্ন স্তুপকৃত এসব বালু রাতের আঁধারে পাচারের সবচেয়ে বেশি মহোৎসব চলছে বাহাগিলী ইউনিয়নের সন্নাসীপাড়া গ্রামে। বালু খেকো যুগল ও তার লোকজন প্রতি রাতে অর্ধশত ট্রলি বালু বিভিন্ন স্থানে পাচার করছেন। এ ছাড়া ওই ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া, ময়দানেরপাড় ও ময়নাকুড়ি ঘোপাপাড়া থেকে অবাধে স্তুপকৃত বালু পাচার হচ্ছে। এদিকে পুটিমারী ইউনিয়নের শাল্টিবাড়ি, কালিকাপুর ও চৌধুরীর বাজার সংলগ্ন এলাকায় একাধিক বালু পাচারকারী সিন্ডিকেট সক্রিয় রয়েছে। এ ছাড়া নিতাই ইউনিয়নের বেলতলী ও কালুরঘাট ব্রিজ এলাকার একাধিক স্থানে নদী খননের স্তুপকৃত বালু হরিলুটের মহোৎসব চলছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোকসানা বেগম জানান, নদী খননের স্তুপকৃত বালু রক্ষায় কয়েক জনকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে সাজা দেয়া হয়েছে। ওইসব বালু মহাল ইজারা দেয়ার জন্য দরপত্র আহবানের বিষয়টি জেলা প্রশাসন ও পাওবো’র। উপজেলা পর্যায়ে এ ব্যাপারে তেমন কোন কার্যক্রম শুরু হয় নাই। পাওবো দরপত্র আহবানের বিষয়টি ভালো বলতে পারবে।
এব্যাপারে সৈয়দপুর পাওবো’র নির্বাহী প্রকৌশলী কৃষ্ণ কমল সরকার জানান, নদী খননের স্তুপকৃত বালু ইজারা দেয়ার জন্য পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কাছে চিঠি পাঠিয়ে দেয়া হবে। তারপর স্তুপকৃত বালু ইজারা দেয়ার জন্য দরপত্র আহবান করব।