নীলফামারীর সৈয়দপুরে অনেকটা ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে ওঠেছে বিভিন্ন বেসরকারী হাসপাতার,ক্লিনিক ও ডায়াগনোষ্ঠিক সেন্টার। স্বাস্থ্য সেবার নামে ওই প্রতিষ্ঠানগুলো গড়ে উঠলেও সেখানে সেবার মান নিয়ে শহরের সচেতন মহলের মধ্যে নানা প্রশ্নের সৃষ্ঠি হয়েছে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের সামনে বড় বড় সাইন বোর্ড ঝুলানো হয়েছে। ওই সাইন বোর্ডে প্রকাশ করা হয়েছে দেশের নাম করা চিকিৎসকের তালিকা। আসলে ওই সকল চিকিৎসক কি আদৌ সেখানে আসেন কিংবা বসেন্ তা নিয়ে অনেকের মনে দেখা দিয়েছে সংশয়। তাছাড়া প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মরত সেবিকা, টেকনেশিয়ান,চিকিৎসকদের দক্ষতা নিয়েও নানা অভিযোগ রয়েছে। রোগিরা ওই সকল প্রতিষ্ঠানে সেবা নিতে গিয়ে অহরহ হয়রানীর স্বীকার হচ্ছেন এমন অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। মাঝে মধ্যে এ প্রতিষ্ঠানগুলোতে র্যাব ও প্রশাসনের অভিযান চলে। এতে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ, পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার অভাব, দক্ষ নার্স ও টেকনেশিয়ান শূণ্য, ভ’ল অপারেশন, পরীক্ষার রিপোর্ট ভিন্ন হওয়াসহ নানাবিধ কারণে জরিমানা আদায় করা হয়। সাথে সতর্ক করা হয় এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকতে। মেডিকেল প্র্যাকটিস এবং বেসরকারি ক্লিনিক ও ল্যাবরেটরি নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ ১৯৮২ এর ৯ ও ১৩ (২) ধারা মোতাবেক ক্লিনিককে নার্স ও টেকনিশিয়ানদের প্রশিক্ষণের কাগজপত্র থাকতে হবে। বসতে হবে নিয়মিত ডাক্তার। নীলফামারীর সৈয়দপুরে কতগুলো ল্যাব, ক্লিনিক, প্যাথলোজি ও হাসপাতাল রয়েছে তার সঠিক হিসাব নেই জেলা সিভিল সার্জনের কাছে। তবে এ সমিতির একজন কর্মকর্তা জানান ৩৪ টি ডায়াগনোষ্ঠিক সেন্টার ও ক্লিনিক রয়েছে সৈয়দপুরে। তাদের কাগজপত্র রয়েছে কিনা তা আমি বলতে পারবো না। তবে আমার ক্লিনিকের বৈধ কাগজপত্র রয়েছে। এ ব্যাপারে নীলফামারী জেলা সিভিল সার্জন জানান, ইতোমধ্যে আমি বেশ কয়েকটি ডায়াগনোষ্ঠিক সেন্টার ও ক্লিনিক মালিককে সতর্ক করে দিয়েছি। স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে যেন কোন ব্যবসা করা না হয়। কোন রোগি যেন কারো দ্বারা হয়রানির শিকার না হয়।
রোগি হয়রানী, মৃত্যুর অভিযোগে কোন কোন ক্লিনিকে হামলা এবং কারো বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। তবও টনক নড়ছে না এখানের ওই সকল ডায়াগনোষ্ঠিক সেন্টারগুলোর পরিচালকের। বরং তারা আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠেছে। রোগি গেলেই অযথা পরীক্ষা, তাদের নির্দিষ্ঠ স্থানে ওষুধ ক্রয় এগুলো চলছে অনেকটা প্রকাশ্যে। এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে রোগির কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের। দুই একটি ক্লিনিক ঠিকঠাক থাকলেও বাকিগুলোর অবস্থা জোড়াতালি ছাড়া আর কিছু নেই। বর্তমানে দেখা যাচ্ছে কোন কোন ক্লিনিকের কারে অনুমোদনহীন অনলাইন টিভির ষ্ঠিকার ঝুলিয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি। সে ছবি আবার দেয়া হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। আসলে সৈয়দপুরে স্বাস্থ্য সেবার নামে এসকল প্রতিষ্ঠানে কি হচ্ছে তা জানা প্রয়োজন। সেই সাথে ওই সকল প্রতিষ্ঠানে আবারো ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান দাবি তুলেছে ভ’ক্তভোগি রোগিরা।