একই অধিদপ্তরে একই ঘটনায় আইনের ভিন্ন ভিন্ন প্রয়োগে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হ”েছ। কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের এহেন কর্মকাণ্ড নানা বিতর্কের জন্ম দি”েছ। সময়োচিত পদক্ষেপ এর অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হ”েছন ভিকটিম। কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁও খোদাই বাড়ি এলাকার এক নির্যাতিতা মহিলা (নাম প্রকাশে অনি”ছুক) অভিযোগ করে জানান, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষ চাকুরী বিধিমালা সঠিক প্রয়োগ করছেন না। একেকজনের বেলায় এক একরকম আইন প্রয়োগ করা হ”েছ। অথচ নিয়ম ছিল সকলের ক্ষেত্রে একই আইন প্রয়োগ করা। তিনি বলেন, তার স্বামী মোঃ নুর জামাল মিয়া বর্তমানে নরসিংদী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের গার্মেন্টস ডিজাইন অ্যান্ড প্যাটার্ন মেকিং টেকনোলজি (জি,ডি,পি,টি) বিভাগের জুনিয়র ইনসট্রাক্টর। ২০১২ সালে ঐ শিক্ষকের সাথে তার বিয়ে হয়। তখন তিনি চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের একই বিভাগের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক হিসাবে বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব ছিলেন। পূরব বিয়ের তথ্য গোপনের মাধ্যমে তিনি তাকে বিয়ে করেন। ওই ঘরে তার তিন সন্তান- সন্ততিও ছিল। পরে তিনি তাকে ডিভোর্স দেন। এরপরও ভবিষ্যৎ সুখের আশায় তিনি তার সাথে দীর্ঘ পাঁচ বছর সংসার করেন। এ সময় তার স্বামী জামাল মিয়া ছাত্রীদের যৌন হয়রানি, ইভটিজিং সহ নানা অপরাধে অভিযুক্ত হন। বিগত প্রায় সাড়ে তিন বছর যাবত তিনি বাধ্য হয়ে পিত্রালয়ে অব¯’ান করছেন। এ সময় স্বামী তার খোঁজ খবর নেয়া তো দূরের কথা বরং তাকে বিভিন্ন সময়ে শারীরিক ও মানসিক নিপীড়ন চালিয়ে আসছিল। গত ২২ সেপ্টেম্বর প্রকাশ্য দিনদুপুরে স্বামী তার পিত্রালয়ে এসে তিনি, তার মা ও ছোট বোনকে কোপানো সহ অমানুষিক নির্যাতন করেন।
এ-সংক্রান্ত ঘটনায় পরদিন ২৩ সেপ্টেম্বর তিনি কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলা করেন। ফৌজদারি আইনে দায়েরকৃত এ মামলার নম্বর ৩৫/৭১৭। ১৭ অক্টোবর স্বামী জামাল মিয়া অন্য দুইজনসহ কক্সবাজার শহরের হোটেল আল গনি থেকে আটক হলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস,আই মোঃ দস্তগীর হোসাইন পরদিন ১৮ অক্টোবর তাদেরকে জেলহাজতে সোপর্দ করেন। এ-সংক্রান্ত রিপোর্টে মামলার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদšÍের স্বার্থে আটক আসামীদেরকে জেলহাজতে রাখতে তিনি চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিসট্রেট বরাবর আবেদন করেন। আটককৃতরা হ”েছ টাঙ্গাইল জেলার সখীপুর উপজেলার বাঘের বাড়ি ইউনিয়নের হামিদপুর গ্রামের মৃত বন্দে আলী মিয়ার পুত্র মোঃ নুর জামাল মিয়া (জুনিয়র ইনসট্রাক্টর ও ভুক্তভোগীর স্বামী), তার আÍীয়, একই এলাকার আবেদ আলী মাস্টারের পুত্র ফরিদ হোসাইন এবং ওই জেলা ও উপজেলার বড়চওনা ইউনিয়নের জিতাসরী গ্রামের আবদুল বারেক এর পুত্র শফিকুল ইসলাম। শেষোক্ত দুইজন বর্তমানে কক্সবাজার শহরে ভাড়া বাসায় বসবাস করেন। তারা আন্তর্জাতিক অভিবাসন সং¯’া- আইওএম এ কর্মরত। এদের মধ্যে একজন সং¯’াটির পক্ষ থেকে উখিয়া উপজেলা স্বাসথ্য কমপ্লেক্সে চাকুরী করে আসছেন। দীর্ঘ ২৪ দিন কারাভোগের পর স্বামী নুর জামাল দুই হাজার টাকা মুচলেকায় জামিন পেয়ে
নরসিংদী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে গিয়ে গত ১১ নভেম্বর যোগদান করেন। এর আগে তার নির্যাতিতা সত্রী কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষের নিকট গিয়ে মোঃ নুর জামালের বিরুদ্ধে মামলার কাগজপত্র, পূরবোক্ত কর্ম¯’লের বিভিন্ন অপকর্মের পেপার কাটিং সহ অন্য ডকুমেন্ট দাখিল করে বিধিমতে তাকে সাময়িক বহিষ্কারসহ অন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার আবেদন জানান। আবেদনের একটি কপি নরসিংদী সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ বরাবর ও পাঠান। নির্যাতনের শিকার মহিলাটি কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট থেকে নেয়া চাকুরী বিধিমালার অংশবিশেষ উপ¯’াপন করে জানান যে, সং¯’াপন মনত্রণালয়ের ২১/১১/১৯৭৮ তারিখের স্মারক নম্বর ইডি(রগ-৬)-এস-১২৩/৭৮/১১৫(৫০০) মোতাবেক কোন সরকারি কর্মচারী গ্রেপ্তারের পর বা আÍসমর্পণের পর জামিনে মুক্তিলাভ করলেও মামলার কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত সাময়িক বরখাস্ত অবস্থায়ই থাকবেন। কোন সরকারি কর্মচারী গ্রেপ্তার হওয়ার সাথে সাথে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সাময়িক বরখা¯Íের আদেশ জারি করতে হবে এবং বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত ওই আদেশ বহাল রাখতে হবে। আইনটিতে আরো বলা হয়েছে, কোন সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে অসদাচারণ, ডিজারশন বা দুর্নীতির অভিযোগে বিভাগীয় কার্যক্রম গ্রহণের সিদ্ধান্ত হলে সেক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ সমীচীন মনে করলে ওই কর্মচারীকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করতে পারবেন।
রেফারেনস হিসেবে এ ভিকটিম মহিলাটি উল্লেখ করেন যে, গেল বছরের ২৭ জুলাই আগ্রাবাদ মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের গার্মেন্টস ডিজাইন অ্যান্ড প্যাটার্ন মেকিং টেকনোলজি বিভাগের ষষ্ঠ সেমিস্টারের ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান সিএমপির আওতাধীন চট্টগ্রামের হালিশহর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন- ২০১৮ এর আলোকে অত্র পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের একই বিভাগের অপর এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা (নঃ ২৩/১৮৫) দায়ের করেন। পরবর্তী মাসের প্রথম তারিখ (১ আগস্ট) কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর যথাসময়ে এ মামলার একমাত্র আসামি তথা ওই শিক্ষককে সাময়িক সাসপেন্ড করেন। মামলার কার্যক্রম শেষ না হওয়ায় বর্তমানে তিনি সাসপেন্ড অবস্থায় আছেন। এর কয়েক বছর পূরবে অত্র মহিলা ইনস্টিটিউটের একই বিভাগের অন্য আরেক শিক্ষকের সত্রীর দায়ের করা মামলায় অভিযুক্ত শিক্ষক ও চাকুরি হারান। তাছাড়া এ একই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আরো একজন অভিযুক্ত শিক্ষকের ও এভাবে চাকুরী চলে যায় বলে সূত্রে জানা গেছে।
ভুক্তভোগী মহিলা প্রশ্ন তুলেন যে, একই ধরনের ঘটনায় আইনের ভিন্ন প্রয়োগ কেন? আইনের অপপ্রয়োগ এর ফলে তিনি চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হ”েছন। তার স্বামী জেল থেকে জামিনে এসে তাকে নানাভাবে হুমকি ধামকি দি”েছন। কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের এমনতর কর্মকাণ্ডে তিনি চরমভাবে অবহেলিত ও অধিকার বঞ্চিত হ”েছন। ন্যায় বিচার পা”েছন না।
মহিলার অভিযোগ, কর্তৃপক্ষের কালক্ষেপণ ও সিদ্ধান্তহীনতার কারণে তার জীবন বিষিয়ে উঠছে। তার অভিযুক্ত আসামি বীরদর্পে কর্ম¯’লে যোগদান করছেন। সংশ্লিষ্ট পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ যোগদানের বিষয়টি তার কাছে স্বীকারও করেন নি। কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষ তদšÍের নামে টালবাহানা শুরু করেছেন। যা তাকে দিন দিন মানসিক বিপর্যস্ততার দিকে নিয়ে যা”েছ।
অতীত পর্যালোচনায় করে দেখা যায়, অভিযোগকারীর স্বামী নুর জামাল ২০০৫ সালের ২০ আগস্ট চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। তিনি গার্মেন্টস ডিজাইন অ্যান্ড প্যাটার্ন মেকিং টেকনোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্বে নেন। এ সময় তিনি সেশনাল মার্ক কম দেয়া ও নন কলেজিয়েট করার ভয় ভীতি দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের মানসিক চাপে রাখতেন। একইসাথে ছাত্রীদের যৌন হয়রানি করতেন। ২০১১ সালে তার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠ। এ সময় ছাত্রীরা আন্দোলন ও করে।
ব্যক্তিগত জীবনে তিনি তিন সন্তানের জনক হলেও এক ছাত্রীর বড় বোনের সাথে স¤পর্ক করে তাকে বিয়েও করেন। পরে ওই ছাত্রীর দিকে চোখ দেন। এ সময় তার বড় বোন পিত্রালয়ে চলে আসতে বাধ্য হন। ২০১৩ সালের ২৮ আগস্ট রাত ১.৩৭ মিনিটের সময় ওই শিক্ষক মোবাইল থেকে এক ছাত্রীকে অশ্লীল ভাষায় খুদে বার্তা পাঠান। এর প্রায় দুই মাস পর ওই ছাত্রীর পিতা চট্টগ্রামের হালিশহর থানায় তার বিরুদ্ধে একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। যার নাম্বার-১৫১। তখনকার অধ্যক্ষ বরাবর তিনি একটি লিখিত অভিযোগ দেন। এ-সংক্রান্ত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে তিনি দোষী সাব্যস্ত হলে তাকে ওই সালের ১ নভেম্বর সিলেটের ছাতকে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের স্কুল ও কলেজে বদলী করা হয়। সেখানে তার বিভাগে তাকে পদায়নের সুযোগ না থাকায় দশ মাস পর ২০১৪ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর তাকে আবারো চট্টগ্রাম মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে পদায়ন করা হয়। এখানে এসেও তার পুরনো চরিত্র বদল না হওয়াই ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ১ মাস পর্যবেক্ষণের পরে ১৯ অক্টোবর রোববার ইনস্টিটিউটের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে সকাল সাতটা থেকে দুপুর পর্যন্ত অবরোধ ও বিক্ষোভ করে। এ সময় তারা ক্লাস নেয়া থেকে বিরত থাকে।
বাংলাদেশ কারিগরি ছাত্র পরিষদ চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট শাখা আয়োজিত এ কর্মসূচিতে ৯ দফা দাবি তোলে ধরা হয়েছিল। এর মধ্যে প্রধান দাবি ছিল দুর্নীতিবাজ ও ইভটিজিংকারী শিক্ষক নুর জামাল কে অপসারণ। পরবর্তী সাত দিনের মধ্যে এসব দাবি পূরণের আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছিল ইনস্টিটিউটের তৎকালীন অধ্যক্ষ মোঃ রিহান উদ্দিন কে। ছাত্রীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিনি অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। অধ্যক্ষ সহসা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণের আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা ক্লাস রুমে ফিরে যায়।
অত্র ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী ও বাকাছাপের কেনদ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক শারমিন মুনমুন সুমি এ আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিলেন। ইলেকট্রনিক্স বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মৃদুল কাšÍি দে-র নেতৃত্বে ননটেক বিভাগের ইনসট্রাক্টর শাহনুর আমিন এবং আর্কিটেক্ট বিভাগের জুনিয়র ইনসট্রাক্টর রুমানা পারভীনকে তদন্ত কমিটির সদস্য নিয়োগ করা হয়েছিল। কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের তৎকালীন মহাপরিচালক মোঃ শাহজাহান মিয়া অভিযোগ উঠা ওই শিক্ষককে ১০ দিনের মধ্যে সরিয়ে দেয়ার আশ্বাস দিয়েও একমাস যাবত সরিয়ে না নেয়ায় শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমেছিল। এ সময় ডিজি প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ কে সাত দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলেছিলেন। সে সময় অভিযুক্ত শিক্ষক আÍপক্ষ সমর্থন করে তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ মিথ্যা ও ষড়যনত্রমূলক বলে অভিহিত করে বলেছিলেন, তিনি মহল বিশেষের ষড়যনত্রের শিকার। অন্য কেউ কারসাজি করে তার মোবাইল থেকে ছাত্রীর কাছে খুদে বার্তা বা মেসেজ পাঠিয়েছে। শিক্ষক স্বল্পতার কারণে তাকে সিলেট থেকে আবারো চট্টগ্রাম মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে। অধ্যক্ষ মোঃ রিহান উদ্দিন সে সময় বলেছিলেন, অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে সিলেটে বদলি করা হয়েছিল। পরে ফিরে আসলে ছাত্রীরা আবারো অভিযোগ তোলায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
এ ব্যাপারে গত মে থেকে নরসিংদী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্বে থাকা উপাধ্যক্ষ ইঞ্জিনিয়ার মোঃ সাজেদ উর রহমান জানান, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর গঠিত তদন্ত কর্মকর্তা আগামীকাল শনিবার (২১/১১/২০ ইংরেজি) তদšÍে আসার কথা ছিল। পরে তিনি নিজে ফোন করে তা বাতিল করে দেন। তিনি বলেন, তদন্ত কর্মকর্তার পদোন্নতি ও বদলি জনিত কারণে এটা বাতিল করা হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষক মোঃ নুর জামাল গত ১১ নভেম্বর তার প্রতিষ্ঠানে যোগদান করেছেন। বর্তমানে তিনি নরসিংদীতে অব¯’ান করছেন। তিনি আমার সাথে দেখাও করেছেন। তিনি নুর জামাল এর বিরুদ্ধে অধিদপ্তরে দায়েরকৃত তার সত্রীর অভিযোগের একটি কপি পেয়েছেন স্বীকার করে বলেন, ইতোপূরবে অধিদপ্তর থেকে আমাকে নুর জামালের বর্তমান অব¯’ার ব্যাপারে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছিল। আমি পরোক্ষভাবে কক্সবাজার মডেল থানায় ফোন করে তার গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর সেভাবে যথাসময়ে অধিদপ্তরে রিপোর্ট দিয়ে দিয়েছি। অনানুষ্ঠানিকভাবে অভিযুক্ত শিক্ষকের সাথে এ ব্যাপারে কথাবার্তা হয়েছে কিনা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি যেহেতু আদালতে বিচারাধীন। সেহেতু এ ব্যাপারে আমরা হস্তক্ষেপ করতে পারি না। তাছাড়া যেহেতু আমরা সরকারি চাকুরীজীবী সেহেতু আমাদের তেমন কোন সুযোগ নেই।
এর আগে এ বিষয়ে আরো একবার কথা হলে তিনি এবং তার সাথে উপ¯ি’ত থাকা ইনসট্রাক্টর রতন চনদ্র পাল জানিয়েছিলেন, ভুক্তভোগী মহিলাটি বেশ কয়েক বার এসে আমাদের সাথে দেখা করেছিলেন। আমরা তাদের পারিবারিক বিরোধ মীমাংসায় যথাসম্ভব সহায়তা করেছি। এরপর বেশ কয়েক বছর তাদের মধ্যে বেশ মিলামিল ও লক্ষ্য করা গেছে।
এদিকে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক তদšÍের দায়িত্ব প্রাপ্ত অধিদপ্তরের সং¯’াপন শাখার সহকারী পরিচালক-৩ নাজমুন নাহার জানান, তদšÍের দায়িত্ব পাওয়ার পর আমি পদোন্নতি পেয়ে ঢাকার বাইরে অন্য প্রতিষ্ঠানে উপাধ্যক্ষ হিসেবে বদলি হয়েছি। পরে আমাকে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরে আবারো পদায়ন করা হয়। আমাকে যেহেতু সহকারি পরিচালক থাকাকালে এ দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। এখন যেহেতু আমি সে দায়িত্বে নেই। তাই পদোন্নতির পরে নতুন করে বর্তমান পদবী অনুসারে কর্তৃপক্ষ আমাকে আবারো দায়িত্ব দিলে আমি যথাযথভাবে তদন্ত করব ইনশাআল্লাহ।
বর্তমানে তদšÍের দায়িত্বে না থাকলেও ভিকটিমের সাথে কেন যোগাযোগ করেছেন জানতে চাইলে এ নারী কর্মকর্তা বলেন, কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহের জন্য আমি তাকে ফোন দিয়ে প্রাসঙ্গিক তথ্য উপাত্ত দিতে বলেছিলাম। ভিকটিম প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করলে আমি তা কর্তৃপক্ষ বরাবর উপ¯’াপন করব।
কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতীত তথ্য দেয়া যায় না জানিয়ে তিনি রিপোর্টে তার নাম ও পদবী ব্যবহার না করার অনুরোধ করেন। তিনি নিজেকে অধিদপ্তরের পদ¯’ কোন কর্মকর্তা নয় বলে জানান এ প্রতিনিধিকে। তিনি আরো জানান, পদবী পরিবর্তন হওয়ায় দাপ্তরিকভাবে তিনি এখন আর তদšÍের দায়িত্বে নেই। আর মন্তব্য করেন, মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে নারী হিসেবে তিনি অভিযোগদাতার সাথে কথা বলেছেন। কর্তৃপক্ষের পরবর্তী নির্দেশক্রমে যা করার তাই করবেন। অর্থাৎ দায়িত্ব পেলে সংশ্লিষ্ট সকলের সাথে এ বিষয়ে কথা বলবেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, সাময়িক অব্যাহতি দেয়ার ক্ষমতা বা এখতিয়ার ওঁর নেই। কেবল নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ তথা সরকারের শিক্ষা মনত্রণালয় এ আদেশ জারি করতে পারেন।
নুর জামালের জেলহাজতে থাকার বিষয়টি জানেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে থাকবে। তিনি বর্তমানে তার মূল পদবী ঢাকার বাহিরের প্রতিষ্ঠানে জানিয়ে আরো বলেন, পুনরাদেশ পেলে অবশ্যই এ বিষয়ে কাজ করব। দায়িত্ব দিলে আপনাদের যে কোনো ধরনের তথ্য সরবরাহ করবো।
সরবশেষ এ বিষয়ে কথা হয় কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক (এডি-১) মোঃ জাহেদুল কবির খানের সাথে। তিনি জানান, সংশ্লিষ্ট মহিলার অভিযোগ ও এতদসংক্রান্ত তথ্যাদি মনত্রণালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছি। এখন মনত্রণালয় থেকে যে সিদ্ধান্ত আসবে তা বাস্তবায়নের জন্য আমরা প্রস্তুত আছি। তদন্ত কার্যক্রম এর ব্যাপারে কিছু জানেন কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, তদšÍের বিষয়টি আলাদা। অভিযোগের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় তথ্য পেতে বিলম্ব হয়ে গেছে। নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিতে পারেন। অধিদপ্তরের সে রকম কোনো ক্ষমতা নেই। অধিদপ্তর কেবল কার্যক্রম অগ্রায়ন করেন। তবে অভিযুক্ত শিক্ষক মোঃ নুর জামাল মিয়া সাময়িক বরখাস্ত হতে পারেন বলে মন্তব্য করেন এ পদ¯’ কর্মকর্তা।
উপরোক্ত অভিযোগের ব্যাপারে অভিযুক্ত নরসিংদী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের গার্মেন্টস ডিজাইন অ্যান্ড প্যাটার্ন মেকিং টেকনোলজি বিভাগের (জিডিপিটি) জুনিয়র ইনসট্রাক্টর নুরজামালের মোবাইলে একাধিকবার
কল করলেও মোবাইল বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে তিনি কোনো বক্তব্য বা প্রতিক্রিয়া দিলে তা যথাসময়ে প্রকাশ করা হবে।