জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে গ্রামীণ সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিঃ এর সাধারণ সম্পাদক চন্দ্রলাল রবিদাস গ্রাহকের প্রায় কোটিরও অধিক টাকা নিয়ে উধাও হয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছে ঐ সমিতিতে সঞ্চয় রাখা কয়েক শত গ্রাহক। তবে সংশ্লিষ্ট নিবন্ধন প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ বলছে বিষটির তদন্ত চলছে, তদন্ত রির্পোট সাপেক্ষে আইনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জানা গেছে, গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার বক্সিগঞ্জ গ্রামের মূল চাঁদ রবিদাসের ছেলে চন্দ্রলাল রবিদাস (৫৫) পাঁচবিবি পৌর এলাকার দমদমা গ্রামে বাড়ী ভাড়া নিয়ে স্বপরিবারের বসবাস করতো এবং উপজেলা সমবায় অফিস থেকে গ্রামীণ সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিঃ নামের সমিতিটি ২০১৩ সালে নিবন্ধন (যার নং ৫৪৯/১২) নিয়ে শহরের কৃষি ব্যাংক মোড় সংলগ্ন আনজু ট্রেড সেন্টার ভবনের দ্বিতীয় তলায় অফিস ভাড়া নিয়ে এর কার্যক্রম শুরু করে। এলাকার মানুষের মাঝে ডিপিএসে শতকরা ১৫টাকা এবং এফডিআরে দ্বিগুন অর্থ প্রদানের লোভনীয় লাভ্যাংশের অফার দিয়ে গ্রাহক সংগ্রহ করে। লাভের আশায় ডিপিএস, এফডিআর ও সঞ্চয় হিসাবে টাকা রাখে প্রায় শতাধিক লোকজন। কিছু গ্রাহক তাদের সঞ্চয় ফেরত চাইলে সমিতির সাধারণ সম্পাদক চন্দ্রলাল রবিদাস বিভিন্ন ধরনের তালবাহনা করতে থাকে। একপর্যায়ে ১৩ নভেম্বর শুক্রবার বিকেলে স্বপরিবারের সে পালিয়ে যায়।
ভূক্ত ভোগীরা জানায়, মাসে লাখে ১৫শ টাকা করে লাভ্যাংশ দেওয়ার কথা বলে উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের গ্রাহক নাফিজুর রহমান নাহিদ হোসেনের কাছ থেকে ১২লক্ষ টাকা, গনেশপুর গ্রামের আদিবাসী সাঙ্গাল উড়াও এর কাছ থেকে ৪লক্ষ টাকা, শিমুলতলী গ্রামের রুনা মার্জিয়া বানু কাছ থেকে ৪লক্ষ টাকা, দমদমা গ্রামের দুলাল হোসেনের কাছ থেকে ৬ লক্ষ টাকা, রাসিদার ২ লক্ষ ৬০ হাজার,আবু সাঈদের ৮০ হাজার, খলিলের ৩০ হাজার, পাঁচবিবি মহল্লার জয়নুলের ২ লক্ষ ৫০হাজার টাকা, রতন চন্দ্র চক্রবর্তীর কাছ থেকে ২লক্ষ টাকা নেন। এসমিতির মাঠ কর্মকর্তা উপজেলার ঢাকারপাড়া গ্রামের রাশেদ মন্ডল জানান, সে ও তার স্ত্রী ১০লক্ষ টাকা জামানত দিয়ে মাসে ২২ হাজার টাকা বেতনে সেখানে চাকুরী নেয়। এছাড়াও ওই মাঠ কর্মী নিজের নামে ৪লক্ষ এবং তার স্ত্রীর নামেও ৩লক্ষ টাকা সঞ্চয় রাখে। গত মার্চ থেকে বেতন ও লাভের টাকা দেয়নি কর্মকর্তা। অপর মাঠকর্মী জাহাঙ্গীর আলম জানান, আমরা শুধু মাঠ পর্যায়ে সঞ্চয় ও ঋণ আদায় করতাম, আর এফডিআরের সঞ্চয় গুলো ম্যানেজার চন্দ্রলাল বাবু নিজে আদায় করতেন। তিনি আরো বলেন, কর্মকর্তা আমাদের ৫/৬মাস থেকে বেতনও দেননি। গ্রামীণ সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতির লিঃ কার্যালয়ের ভবন মালিক সুহেল বাবু জানান, প্রায় ৭/৮বছর আগে দোতলায় অফিসটি ভাড়া নেন হরেন চন্দ্র নামের ব্যক্তি। হঠাৎ শুনি অফিসে তালা লাগিয়ে কর্মকর্তা উধাও হয়েছে। তিনি আরো বলেন, গত মার্চ মাস থেকে অফিসের ভাড়াও পাওনা রয়েছে।
সমিতির সভাপতি শ্রী হরেন চন্দ্র বলেন, আমি বিগত ২০১৬ সালে সমিতি থেকে বের হয়ে এসেছি। আমি এর কার্যক্রমের সাথে জড়িত নই। অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমি কিভাবে এখনও সভাপতি আছি এটি সমবায় অফিস ও তার কর্মকর্তারাই ভাল বলতে পারবেন। এ বিষয়ে উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা লুৎফুল কবীর সিদ্দিকীর নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, গ্রামীণ সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিঃ নামের একটি সমিতি বন্ধের অভিযোগ পেয়েছি। এবিষয় আমার উর্ধত্ত্বন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছি। এটির তদন্ত চলছে। তদন্ত রিপোর্ট পেলে আইনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।