নোয়াখালীর ৩ যুবক ওমানে কর্মরত অবস্থায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নিহত হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ৯টায় তিন বাংলাদেশি রেমিট্যান্স যোদ্ধা কূপে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে তাদের মৃত্যু হয়। নিহতদের বাড়ি নোয়াখালী জেলার সুবর্ণচর উপজেলায়। তাদের অকাল মৃত্যুতে পরিবারে শোকের ছায়া নেমে আসে।
বুধবার সকালে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নিহত মোস্তফা ও নাছিরের বড় ভাই ওমান প্রবাসী ইব্রাহিম।
তিনি জানান,মঙ্গলবার দুপুরে মোবাইলে বাড়িতে বিষয়টি করেন নিহত নাছির এর শ্যালক জিয়া উদ্দিন ফারুক।
নিহতরা হলেন, উপজেলার চর আমানউল্যা ইউনিয়নের সাতাশদ্রোণ গ্রামের ফখরুল ইসলামের ছেলে মো. মোস্তফা (৫০), নূর হোসেন নাছির (৪০) ও একই উপজেলার পূর্ব চরবাটা ইউনিয়নের আনছার মিয়ারহাট এলাকার বাহার উদ্দিনের ছেলে আলমগীর হোসেন (৩৫)।
নিহত নূর হোসেন নাছির এর শ্যালক জিয়া উদ্দিন ফারুক জানান,জীবিকার সন্ধানে প্রায় ৩০ বছর আগে নিহতদের বড় ভাই মো. ইব্রাহিম (৫৫) ওমানে যান। তিনি যাওয়ার ১০ বছর পর ছোট ভাই মো. মোস্তফাকে ওমানে নিয়ে যান। এর প্রায় ৫ বছর পর আরেক ছোট ভাই নাছিরকেও ওমানে নিয়ে যান। ২ বছর পূর্বে তাদের ভাগিনা কামরুল (২৫) কে ওমানে নিয়ে যান। প্রায় ৬/৭ বছর আগে একই উপজেলার পূর্ব চরবাটা ইউনিয়নের আলমগীর হোসেন কুয়েত থেকে ওমানে গিয়ে তাদের সাথে একই ইলেকট্রিক কোম্পানীতে যোগ দেন। সেখানে ইলেকট্রিক মিস্ত্রি হিসেবে আল ওয়াফা শহরের একই কোম্পানিতে ৩ ভাই ইব্রাহিম, মোস্তফা, নাছির ভাগিনা কামরুল এবং আলমগীর কাজ করতেন। তারা পাঁচ জন একই কোম্পানিতে কাজ করার পাশাপাশি একই সাথে বসবাস করতেন। প্রতিদিনের ন্যায় স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকাল ৯টায় তারা একটি কূপে বিদ্যুতের কাজ করতে যান। প্রথমে আলমগীর হোসেন ওই কূপে নামেন। অনেক সময় পার হলেও বের না হয়ে আসায় মোস্তফা কূপে নামেন। কিন্তু দীর্ঘ সময় পার হওয়ার পর কূপ থেকে আলমগীর ও মোস্তফার কোন সাড়া না পেয়ে নূর হোসেন নাছিরও কূপে নামেন। পরে তাদের তিন জনের কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে মো. ইব্রাহিম সহ সহকর্মীরা বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসন ও ফায়ার সার্ভিসে জানান। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এসে আলমগীর, মোস্তফা ও নাছিরকে ওই কুপ থেকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তৃব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষনা করেন। লাশ বর্তমানে হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। ঘটনার আকস্মিকতায় বড় ভাই মো. ইব্রাহিম অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভাগিনা কামরুল তাকে দেখাশুনা করছেন।
এদিকে,দুই ছেলেকে হারিয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় রয়েছেন ফখরুল ইসলাম। কান্না করতে করতে মূর্চ্ছা যাচ্ছেন মোস্তফার স্ত্রী মাহবুবা সুলতানা, দুই মেয়ে এক ছেলে, নাছিরের স্ত্রী কুলছুম বেগম, দুই ছেলে ও দুই মেয়ে। একই অবস্থা অপর নিহত আলমগীরের বাড়িতেও। নিহতদের পরিবারের লোকজন তাদের লাশ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করেছেন।