নীলফামারীতে আবার বাড়ছে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ। ঢেউ সামাল দিতে আগের থেকে প্রস্তুতি বাড়িয়েছে জেলা স্বাস্থ্যবিভাগ। ২ ডিসেম্বর ৪১টি নমুনায় নতুন করে আরও ৬ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর আগের দিন ১ ডিসেম্বর ১৫টি নমুনায় ৪ জন ও ৩০ নভেম্বর ৩৩টি নমুনায় ৯ জন করোনা শনাক্ত হয়। এ হিসেবে গড়ে প্রতি ৪টি নমুনার মধ্যে একটি পজিটিভ এসেছে। বুধবার রংপুর ও দিনাজপুর পিসিআর ল্যাব থেকে জেলার প্রাপ্ত করোনা রির্পোটে নতুন আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে নীলফামারী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মীর্জা মুরাদ হাসান বেগ (৪০) করোনা পজেটিভ এসেছে। অন্যান্য আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ৪জন সদরের ও ১জন সৈয়দপুর উপজেলার। আক্রান্তরা হলেন, শহরের পাঁচমাথা মোড় এলাকার কালিপদ রায় (৪০), কানিয়ালখাতা পাঁচমাথা মোড় এলাকার কবির হোসেন (৬০), সদরের শটিপাড়া এলাকার মনিরুজ্জামান (২৫)। সৈয়দপুর উপজেলা শহরের পুরাতন বাবুপাড়ার শ্যামলী রানী রায় (৫৬)। তিনি দিনাজপুর এম আবদুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে করোনা ইউনিটে পর্যবেক্ষনে রয়েছেন। এদিকে রংপুর করোনা ইউনিটে ভর্তি রয়েছেন মাবিয়া (৬০) নামে ১ বৃদ্ধা। বুধবার সন্ধ্যায় সিভিল সার্জন অফিসের করোনা ইউনিটের হিসাবের তথ্য মতে, জেলায় করোনা আক্রান্ত রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৪০জন। এ ছাড়া গত ৭ দিনে মোট ১শ ৭১টি নমুনা পরীক্ষায় ৩৫ জনের দেহে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়েছে। আর জেলায় করোনা শনাক্তকৃত রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২শ ৩৩ জনে। মৃত্যু হয়েছে ২৩ জন। সুস্থ্য হয়েছেন ১ হাজার ১শ ৬৮ জন। সুত্র মতে, নীলফামারী জেলায় পিসিআর ল্যাব নেই। ফলে দিনাজপুর ও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে নমুনা জমা দিতে হয়। রির্পোট আসে দুইদিন পর। কারণ ওই দুটি পিসিআর ল্যাবে রংপুর বিভাগের ৮টি জেলার নমুনা পরীক্ষা হয়। সরকার পর্যায়ক্রমে সব জেলায় পিসিআর ল্যাব স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিলেও নীলফামারী জেলার বিষয়টি এখনো কাগজে কলমে রয়েছে। তথ্যানুসন্ধ্যান করে জানা যায়, জেলায় প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় গত ৭ এপ্রিল জেলার কিশোরীগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালে কর্মরত এক চিকিৎসকে। এরপর জেলায় ৯ এপ্রিল সৈয়দপুর উপজেলার ১ যুবক, ১১ এপ্রিল ডিমলা উপজেলার ১জন এসএসসি পরীক্ষার্থী, ১৩ এপ্রিল জলঢাকা উপজেলার ১ কলেজ ছাত্র, ১৪ এপ্রিল ডিমলার ১ কলেজ ছাত্র এবং সদরের টুপামারীর এক ১৫ বছর বয়সী ইটভাটা শ্রমিক, ১৭ এপ্রিল সদরের ২জন ও ডিমলার ১ কিশোরী এবং ২১ এপ্রিল সদরের আরো ১ যুবক করোনাভাইরাস শনাক্ত হয় এদিকে করোনার প্রকোপ কিছুটা কমার পর মানুষের মধ্যে মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধির কোনো বালাই ছিলো না। তাই এটি কার্যকরে জোর পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে জানালেন জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরী। তিনি আরও বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে সচেতনতা বাড়ানো এবং বাধ্য করানোর জন্য মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা। মাস্ক না পরলে জরিমানা ও বিনামূল্যে মাস্ক বিতরন করা হচ্ছে।