৬ ডিসেম্বর ঝিনাইদহ হানাদার মুক্ত দিবস। দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধ শেষে ৬ ডিসেম্বর পাক হানাদার ও তাদের দোসরদের হটিয়ে ঝিনাইদহকে শত্রুমুক্ত করে বাংলার বীর দামাল ছেলেরা।
১৯৭১ সালের স্বাধীনতা সংগ্রামে এ দেশে প্রথম যে সম্মুখ সমর হয়. তা সংঘটিত হয়েছিল ২ এপ্রিল ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বিষয়খালীতে। ৪ এপ্রিল শৈলকুপা উপজেলার গাড়াগঞ্জ যুদ্ধ, ৪ আগস্ট একই উপজেলার আলফাপুর যুদ্ধ, ১৪ অক্টোবর আবাইপুর যুদ্ধ ও ২৬ নভেম্বর কামান্না যুদ্ধ। এছাড়াও ৬ আগস্ট, ১৭ আগস্ট ও ১১ই নভেম্বর জেলার বিভিন্ন স্থানে যুদ্ধ সংঘটিত হয়।
১৯৭১ এর নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে একদিকে গেরিলাযুদ্ধ চরম আকার ধারণ করে অপর দিকে ভারতীয় বাহিনী ও মুক্তি বাহিনী যৌথভাবে (মিত্রবাহিনী) সীমান্ত অতিক্রম করে ভিতরে ঢুকে পড়ে। দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাকহানাদার বাহিনী পিছু হটতে থাকে। বিভিন্ন এলাকা থেকে শত্রুমুক্ত হওয়ার সংবাদ আসতে থাকে। মুক্তিসেনাদের আক্রমণে পাক হানাদাররা যশোর ক্যান্টনমেন্টের দিকে পিছু হটতে বাধ্য হয়। ৩ ডিসেম্বর মুক্ত হয় মহেশপুর, ৪ ডিসেম্বর কোটচাঁদপুর, ৫ ডিসেম্বর কালীগঞ্জ মুক্ত হয়।
এদিকে, চুয়াডাঙ্গা এলাকা দিয়ে কপোতাক্ষ ও চিত্রানদী অতিক্রম করে ৬ ডিসেম্বর মুক্তিকামীরা ঝিনাইদহে প্রবেশ করে জেলা শহর মুক্ত করে। এসব যুদ্ধে সারা জেলায় ২৭৬ মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। কিন্তু খেতাব প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা রয়েছে জেলায় দু’জন। তারা হলেন বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান ও বীর প্রতীক সিরাজুল ইসলাম।
ঝিনাইদহ জেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মকবুল হোসেন বলেন, ৬ ডিসেম্বর ঝিনাইদহে মুক্ত হওয়ার সাথে সাথে বাড়ি ঘর থেকে দলে দলে সর্বস্তরের মানুষ রাস্তায় নেমে এসে জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে উল্লাস করতে থাকে। ফুল দিয়ে তারা মুক্তিসেনাদের বরণ করে নেয়। ঝিনাইদহ বাসীর কাছে দিনটি চীর স্মরণীয়।