‘‘জয়িতা অন্বেষনে বাংলাদেশ” কমলা রঙ্গের বিশ্বে নারী, বাদার পথ দেবেই পাড়ি স্লোাগান কে সামনে রেখে বুধবার দুপুরে আন্তজার্তিক নারী নিার্যতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবস-২০২০-২১ইং উপলক্ষ্যে ‘‘জয়িতা অন্বেষনে বাংলাদেশ” র্শীষক কার্যক্রমের আওতায় শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলা পর্যায়ে উপজেলার শ্রেষ্ঠ জয়িতাদের সংর্বন্ধনা দেওয়া হয়েছে।
নালিতাবাড়ী উপজেলা পরিষদ হল রোমে উপজেলা প্রশাসন ও মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ের আয়োজেন কর্মক্ষেত্রে সফল ৫ জয়িতাদের উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সাজেদা আরেফিনের সার্বিক সহযোগিতায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজুল আলম মাসুমের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, নালিতাবাড়ী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোকছেদুর রহমান লেবু। এ সময় অতিথিবৃন্দ নির্বাচিত জয়িতাদের সংর্বন্ধনা প্রদান করেন।
জয়িতারা হলেন, নালিতাবাড়ী পৌরশহরের চকপাড়া মহল্লার মৃত মোক্তার হোসেনের কন্যা মোছাঃ লাবনী অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী হিসাবে লাবনী মহিলা প্রশিক্ষন কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষন নিয়ে সেলাইয়ের কাজ শুরু করে পরবর্তীতে কাপড়ের দোকান দিয়েছে। নিজে সেলাই করার পাশাপাশি অন্যদেরকে প্রশিক্ষন দিয়ে সেলাইয়ের কাজে সম্পৃক্ত করেছে। ৭ বছরে ৩৫ জনকে বিনামূল্যে প্রশিক্ষন দিয়েছে। ১৭ বছর আগে এসএসসি পরীক্ষা দেয়াার সময় বাবা মারা যায়। ভাই নাই। নিজের চেষ্টায় বোনের বিয়ে দিয়েছে। মায়ের সংসারেও সহযোগিতা করে যাচ্ছে। স্বামী অটোরিকশাচালক। বর্তমানে তার মাসিক আয় ১৫ হাজার টাকা।
অন্যদিকে শিক্ষা ও চাকরীর ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী উপজেলা রুপনারায়নকুড়া ইউনিয়নের গাছগড়া গ্রামের অশোক থিগিদীর কন্যা আশা রাংসা ক্ষুদ্র নৃতাত্বিক গোষ্ঠীর একজন শিক্ষক হিসাবে ১৯৯৯ সাল থেকে সফলতার সাথে শিক্ষকতা করে আসছেন। বর্তমানে তিনি রুপনারায়নকুড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং নালিতাবাড়ী উপজেলার সংগীত বিষয়ের প্রশিক্ষক। বাবা এনজিওতে স্বল্প বেতনে চাকুরী করায় প্রতিকুল পরিবেশে পড়াশোনা করতে হয়েছে। বর্তমানে তিনি শিক্ষা ও চাকরীর ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করেছেন।
সফল জননী নারী হিসাবে পৌরশহরের কাচারীপাড়া মহল্লার মৃত আঃ রহমান মাষ্টারের কন্যা শিক্ষিকা মাহমুদা শিরিন একজন সফল জননী। মাহমুদা শিরিন সন্নাসীভিটা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তার ১ মেয়ে নাহিদ সুলতানা লিয়া এমবিবিএস ডাক্তার, সূর্যের হাসি, নেটওয়ার্ক, খরমপুর, শেরপুর এ কর্মরত এবং ১ ছেলে মোঃ শিবলী সাদিক টেক্্রটাইল ইঞ্জিনিয়ার। বর্তমানে জাপানী নিকা ক্যামিকেলস লিঃ, উত্তরা, ঢাকায় কর্মরত। বাল্য বিবাহের শিকার মাহমুদা শিরিনের অল্প বয়সে বিয়ে হলেও প্রতিকুল অবস্থার মধ্যে নিজের পড়াশুনা, চাকরী, সংসার এবং ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা করিয়ে সফল মানুষ হয়েছেন।
এদিকে নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যমে জীবন শুরু করেছে যে নারী তিনি হলেন, পৌরসভার গোবিন্দনগর মহল্লার আরশাদ আলীর কন্যা রাশিদা আক্তার বুলবুলি তিনি যৌতুকের কারণে নির্যাতনের স্বীকার। কর্মজীবি মহিলা হোষ্টেল থেকে প্রশিক্ষন নিয়ে গাজীপুরস্থ আর.এফ.এল. কোম্পানীতে সিনিয়র অপারেটর হিসাবে কর্মরত আছেন। ২০০৭ সালে ১৫ বছর বয়সে বিয়ে হয়। ৭ মাসের অন্তস্বত্তা অবস্থায় বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। বর্তমানে মাসিক বেতন ১১০০০/- টাকা। বাড়ী করার জন্য ৫ লাখ দিয়ে ১৫ শতাংশ জমি কিনেছে। ছেলেকে মানুষ করাই তার মূল লক্ষ্য।
নালিতাবাড়ী উপজেলার রানীগাঁও গ্রামের জুলফিকার আলীর কন্যা মোছাঃ শহর বানু সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রেখেছে। তিনি বাঘবেড় ইউনিয়নের ১,২,৩,ওয়ার্ডের সদস্য। জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের কমিটির সাধারন সদস্য। বাল্যবিবাহ, যৌতুক, নারী শিশু নির্যাতন প্রতিরোধসহ বিভিন্ন সামজিক আন্দেলনের সাথে জড়িত। সংরক্ষিত আসনের সদস্য হিসাবে বিভিন্ন সরকারী দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। এ সময় মানুষকে অনুপ্রেরনার লক্ষ্যে অতিথিবৃন্দ এদের জীবন বৃত্তান্ত তুলে ধরার জন্য গনমাধ্যমকে আহবান জানান।