দিনে দিনে শীতের তীব্রতা বেড়েই চলছে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে। এই শীতে বিপর্যস্থ হয়ে পড়েছে জনজীবন। গত কয়েকদিনের শীতের তীব্রতায় বিপাকে পড়েছেন নি¤œ আয়ের মানুষ। বিশেষ করে সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত ঘন কুয়াশায় ঢাকা থাকে চারদিক। সামনের সবকিছুই দেখা যায় ধোয়াশার মতো। গুড়িগুড়ি বৃষ্টির মতোই ঝরতে থাকে হিম কুয়াশা। এতে করে বৃদ্ধ ও শিশুদেরকে নিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন পরিবারের লোকজন। ঘন কুয়াশায় যান চলাচলেও বিঘœ ঘটছে চালকদের। রাস্তায় হেড লাইট জ¦ালিয়েও কাটে না কুয়াশা। চারদিক কুয়াশায় আচ্ছন্ন থাকায় চরম ঠান্ডায় কাজে বেরুতে পারছিলেন না অনেকেই। বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন ইটভাটার শ্রমিক ও সকাল সকাল কাজে বের হওয়া মানুষজন। সেই সাথে নদী তীরবর্তী ও চরাঞ্চলের প্রান্তিক মানুষের মাঝেও বেড়েছে দুর্ভোগ। শীত জনিত রোগের প্রকোপ দেখা যাচ্ছে প্রত্যন্ত এলাকায়। এছাড়াও গৃহপালিত পশুপাখি নিয়েও চরম বিপাকে পড়েছেন খামারীসহ অন্যান্যরা।
শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রেও এর ব্যাপক প্রভাব পড়তে দেখা গেছে। উপজেলার রায়গঞ্জ ইউনিয়নের সাপখাওয়া এলাকার লাবনীসহ ৪ শিক্ষার্থী জানায়, তারা সকাল ৮টার দিকে টিউশন করার জন্য বাড়ি থেকে বের হন। পথ চলতে গিয়ে তীব্র শীতে কোনো কিছুই দেখা যায় না। ঠা-ায় পথ চলা কষ্টকর। তাই মাঝপথ থেকে বাড়ি ফিরতে হয়েছে তাদের বর্তমানের চলমান সংকট পরিস্থিতিতে ঘন কুয়াশায় নিরাপত্তাহীনতার আসঙ্কাও করেন আরেক কলেজছাত্রী।
রিকশাচালক মেছের উদ্দিন, আবুবক্কর জানায়, এই শীতের ঠা-ায় অনেকই বাড়ি থেকেই বের হন না। তাই রিকশা নিয়ে বের হলেও তেমন যাত্রী পান না। ফলে আয়ও অনেকটা কমে গেছে তাদের।
এদিকে শীত আর চরম ঠা-ার কারণে জমে উঠেছে মৌসুমী কাপড় ব্যবসাও। রাস্তার ধার, রাস্তার মোড়সহ বিভিন্ন অলিগলিতে এখন দেদারচে বিক্রি হচ্ছে শীতের কাপড়। ভিড় জমতে দেখা গেছে এসব দোকানে। ক্রোকারিজ ও হার্ডওয়্যার দোকানগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শীত বাড়তে থাকায় চাহিদা বেড়েছে ইলেক্ট্রিক কেটলি (ওয়াটার হিটার), হটপট ও গ্রিজারের। ব্যস্ততা বেড়েছে ধনুকারদেরও। ইতোমধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু করেছে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনগুলোও।
রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চলতি মাসের শেষের দিকে এ অঞ্চলে শৈত্য প্রবাহ বয়ে যেতে পারে। সে সময় তাপমাত্রা আরও হ্রাস পাবে।