পৌর নির্বাচন-২০২০ কে ঘিরে ১৬ জানুয়ারী শুরু হয়েছে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা। দ্বিতীয় ধাপে ৬১টি পৌরসভায় ১৬ জানুয়ারী ভোট গ্রহণের দিন নির্ধারণ করে তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী এসব পৌরসভায় মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ২০ ডিসেম্বর এবং মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ২২ ডিসেম্বর। প্রার্থীতা প্রত্যোহারের শেষদিন ২৯ ডিসেম্বর। চূড়ান্ত প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে ৩০ ডিসেম্বর। এ নিয়ে দুই ধাপে ৮৬টি পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। ইভিএম : ২৯টি পৌরসভায় ইভিএম ব্যবহার করে ভোট হবে। তার মধ্যে ফেনীর দাগনভূঞা, নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভা রয়েছে। ব্যালটের মাধ্যমে ৩২ পৌরসভায় ভোট গ্রহণ হবে। আসন্ন বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন চূড়ান্ত করেছে। বিএনপির উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের সিদ্ধান্ত মোতাবেক মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে।
বসুরহাট পৌরসভার ভোটারদের মধ্যে পুরুষ ১০৬৩৬, মহিলা ১০৪৯৪ ভোটারসহ সর্বমোট ২১১৩০ জন ভোটার রয়েছে। ৯টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলো হলো- ১,৪,৭, ৮, ৯, নং ওয়ার্ডের। ওদিকে পৌরসভার ভোটকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসী ও বহিরাগত লোকজনদের আনাগোনা পৌরসভায় বেশি বেশি দেখা যাচ্ছে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই বসুরহাট পৌরসভার বর্তমান মেয়র আবদুল কাদের মির্জাকে সরকারী দল আওয়ামী লীগের মেয়র পদে প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত করেছে। কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ, বসুরহাট পৌরসভা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলো অতিসম্প্রতি একটি বিশেষ বর্ধিত সভার মাধ্যমে আবদুল কাদের মির্জাকে মেয়র পদে প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত করে ঘোষণা দেয়। মনোনয়ন চূড়ান্ত পর ইতোমধ্যে আবদুল কাদের মির্জা নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। গত কয়েকদিন তিনি পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে শো-ডাউন, দোয়া মাহফিল ও সভা সমাবেশ করছেন। প্রতিদিনই আবদুল কাদের মির্জা পৌর এলাকার প্রত্যন্ত পথে-প্রান্তরে সরব করছেন। অপরদিকে মির্জা কনোনা কালীন সময়ে বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন শ্রেণীর করোনায় আক্রান্ত মানুষকে বিশেষভাবে সাহায্য সহযোগিতা করেন। ওই সময় অন্যান্য দলের তেমন কোন ভূমিকা ছিল না। আবদুল কাদের মির্জাকে ব্যবসায়ী ও সর্বস্তরের জনগণ শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছিল। ও
ওদিকে, বাংলাদেশ আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়াদুল কাদের কোম্পানীগঞ্জে বিশেষ বিশেষ মেগা প্রজেক্ট এর অধিনে বসুরহাট বাই পাস সড়ক, যোরালগঞ্জ সড়ক, মুছাপুর রেগুলেটরের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করণসহ চর ছোটধলী, ব্রিজ নির্ধাণসহ উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন ও মির্জা টাওয়ার হওয়ায় সাধারণ মানুষ আবদুল কাদের মির্জাকে উন্নয়নের স্বার্থে আবারও মেয়র পদে নির্বাচিত করতে চায়। আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা হলেন- ১নং ওয়ার্ডে সোহাগ হাজারী, ৩নং ওয়ার্ডে আবুল খায়ের, ৪নং ওয়ার্ডে বেলাল, ৫নং ওয়ার্ডে কামল কান্তি মজুমাদার, ৭নং ওয়ার্ডে রাসেল, ৮নং ছায়েদল হক বাবুল, ৯নং ওয়ার্ডে এ.বি.এম ছিদ্দিক, মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী রৌশন আরা মিলি, ২নং ও ৬নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থীর বিষয়ে এখন সিদ্ধান্ত হয়নি।
বিএনপির মেয়র পদে প্রার্থী কামাল উদ্দিন চৌধুরী বসুরহাট পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের নেতাকর্মীদেরকে নিয়ে খালেদাজিয়া ও ব্যারিষ্টার মওদুদ আহমদের সালাম পৌঁছাচ্ছেন এবং সাথে সাথে সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিষ্টার মওদুদ আহমদের ক্ষমতার আমলে উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরছেন। উল্লেখ্যযোগ্য উন্নয়নগুলো হলো, বসুরহাট সরকারী মুজিব কলেজ, বসুরহাট এ.এইচ.সি হাইস্কুল, মাকসুদাহ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়কে সরকারী করণ ও রাস্তাঘাটের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির নেতৃবৃন্দ। অপরদিকে ৫শতাধিক শিক্ষিক যুবককে বিভিন্ন দপ্তরে চাকুরির ব্যবস্থ করে দিয়েছিলেন। বিএনপির কাউন্সিলর পদে প্রার্থীরা হলেন- ১নং ওয়ার্ডে আনোয়ার হোসেন মানিক, ২নং ওয়ার্ডে আহসান উল্যাহ শিপন, ৩নং ওয়ার্ডে মাইন উদ্দিন কচি, ৪নং ওয়ার্ডে মাজহারুল হক তৌহিদ, ৫নং ওয়ার্ডে হুমায়ন কবির, ৬নং ওয়ার্ডে আবদুল আউয়াল, ৭নং ওয়ার্ডে, ওমর ফারুক, ৮নং নুর নবী সবুজ, ৯নং ওয়ার্ডে ছালা উদ্দিন সুমন ও মহিলা কাউন্সিলর তাহেরা ফিরোজ, জোসনা আক্তার। এ ছাড়া আরও স্বতন্ত্র কাউন্সিলর প্রার্থী ৭নং ওয়ার্ডে মোস্তফা, ৩নং ওয়ার্ডে খাজা নজরুল ইসলাম। ১টি পৌরসভা ও ৯টি ওয়ার্ডে শত শত কোটি টাকার উন্নয়ন হলেও স্থানীয় বিএনপি নেতাদের নেতৃত্বহীনতার কারণে সেগুলো বাটা পড়ে যায়।
যেহেতু দলীয় নিবন্ধন ও প্রতীক নেই, সেহেতু স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে গতবাবের ন্যয় এবারও উপজেলা জামায়াত ইসলামের সেক্রেটারী সাবেক ছাত্রনেতা মাওলানা মোশাররফ হোসাইন মেয়র পদে নির্বাচন করবেন এটাই জামায়াতের সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত এবং জামায়াত কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে রয়েছেন ৩নং ওয়ার্ডে মোঃ নুর উদ্দিন (সাবেক কমিশনার), ৬নং ওয়ার্ডে আবদুল মন্নান, ৮নং ওয়ার্ডে মাওলানা হেলাল উদ্দিন, ৯নং ওয়ার্ডে মাওলানা মহি উদ্দিন।
বর্তমান জাতীয় সংসদের বিরোধীদল জাতীয় পার্টির এখানে দলীয় তেমন কোন তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচনকে ঘিরে। জাতীয় পার্টির মেয়র পদে প্রার্থী হেকিম শহিদুল্লাহ এবং কাউন্সিলর পদে প্রার্থী মাসুম নির্বাচন করবেন বলে জানা যায়।
ভোটের দিনে ভোট দেওয়ার ব্যাপারে এক রিক্সা চালক হামিদ উলাহ, সিএনজি চালক শাহাব উদ্দিন জানান, আমরা কি ভোট কেন্দ্র গিয়ে ভোট দিতে পারব? গত কয়েক বার ভোট দিতে গিয়ে সন্ত্রাসী হামলার স্বীকার হয়ে ভোট দিতে পারিনি।
পৌর সংক্রান্ত বিষয়ে উপজেলা আ.লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খান বলেন, নির্বাচন শতভাগ সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ হবে। তিনি আরও জানান, আমরা চায় সকলের অংশগ্রহণ নির্বাচনে হোক।
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান রিপন জানান, নির্বাচন সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ হলে আমরা বিপুল ভোটে জয় লাভ করতে পারব।
এ বিষয়ে উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারী মাওলানা মোশারফ হোসেন জানান, আমরা চাই অবাধ ও সুষ্ঠ নির্বাচন।