রাজশাহীর বাগমারার ভবানীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীর ওপর হামলা ও পোস্টার ঝুলাতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থকদের হামলায় দুখু কুমার (৩০) নামের একজন কর্মী আহত হয়েছেন।
তাঁকে আশংকাজনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এই ঘটনায় হামলার শিকার যুবকের পক্ষে তাঁর ভাতিজা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে পোস্টার টাঙ্গাতে বাধা দেওয়ায় সহকারী রির্টানিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। আগামী ১৬ জানুয়ারি দ্বিতীয় ধাপে এই পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বর্তমান মেয়র আবদুল মালেক ম-ল, বিএনপির আবদুর রাজ্জাক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে ভবানীগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এসএম মামুনুর রশিদ মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পর রাতে স্বতন্ত্র প্রার্থী এসএম মামুনুর রশিদের জগ প্রতীকের পোস্টার ঝুলানো শুরু হয়। রাত সাড়ে নয়টার দিকে তাঁর কর্মী ভবানীগঞ্জ হিন্দুপাড়ার দুখু কুমার গোডাউন মোড় এলাকায় পোস্টার ঝুলাতে যান। এ সময় আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আবদুল মালেক ম-লের দেহরক্ষি হিসাবে পরিচিত ভবানীগঞ্জ পৌর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক নাহিদ হোসেনসহ ৫/৭জন কর্মী সেখানে যান। তাঁরা স্বতন্ত্র প্রার্থী মামুনুর রশিদের পোস্টার ঝুলানো থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেন। দুখু নির্দেশ মানতে না চাইলে তাঁদের সঙ্গে বাকবিত-া শুরু হয়। এক পর্যায়ে রড ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে জখম করে। মাটিতে পড়ে গেলে সেখানে ফেলে পা দিয়ে খুঁচিয়ে চলে যান। পরে স্থানীয় লোকজন অচেতন অবস্থায় দুখুকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে তাঁর অবস্থার অবনতি হলে রাতেই রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বর্তমানে সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। রাতেই আহত দুখুর ভাতিজা শ্রী মিঠু বাদী হয়ে ছাত্রলীগ নেতা নাহিদ হোসেনসহ ৫/৭ জনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, তাঁর চাচা স্বতন্ত্র প্রার্থীর পোস্টার ঝুলাতে গেলে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থকদের হামলার শিকার হয়েছেন। এই ঘটনার পর থেকে তাঁরা আতঙ্কে আছেন।এদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী এসএম মামুনুর রশিদ অভিযোগ করেন, তাঁর পোস্টার ঝুলাতে দেওয়া হচ্ছে না। আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সমর্থকেরা বাধা প্রদান করছেন। তিনি এই বিষয়ে বৃহস্পতিবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে আলাদা আলাদা অভিযোগ দিয়েছেন। এই বিষয়ে হামলার নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রলীগের নেতা নাহিদ হোসেনের সঙ্গে কথা হলে, তিনি হামলার সাথে জড়িত না বলে দাবি করেন।
মেয়র আবদুল মালেক ম-লের সঙ্গে মুঠোফোনের মাধ্যমে কয়েক দফা যোগাযোগের চেষ্টা করেও সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়াতে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
তবে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মতিউর রহমান ওরফে টুকু বলেন, এসব বিষয়ে তিনি জানেন না।
বাগমারা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আফজাল হোসেন মুঠোফোনে বলেন, আহত দুখুর পক্ষে একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে সব ধরণের পদক্ষেপ নেওয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরিফ আহম্মেদ ও নির্বাচন কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা এই সংক্রান্ত অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।