স্বাধীনতার ৪৯ বছর পর প্রধান মন্ত্রীর সহায়তা পেলেন গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বীরাঙ্গনা জোহরা বেগম। মঙ্গলবার সকালে অসুস্থ বীরাঙ্গনা জোহরা বেগমের বাড়িতে গিয়ে প্রধান মন্ত্রীর সহায়তা পৌছে দিলেন গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক মো: আবদুল মতিন। প্রধান মন্ত্রীর সহায়তা হিসেবে জেলা প্রশাসক বীরাঙ্গনা জোহরা বেগমের হাতে নগদ ২০ হাজার টাকা, একটি ফলমূলের ঝুড়ি, শীতবস্ত্র হিসেবে ৫টি কম্বল ও এক মাসের বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রীর চারটি বস্তা প্রদান করেন। এর আগে বীরাঙ্গনা জোহরা বেগমকে ফুলেল শুভেচ্ছা প্রদান করা হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এনডিসি) এসএম ফয়েজ উদ্দিন, সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আল মারুফ, জেলা ত্রাণ ও পূনর্বাসন কর্মকর্তা একেএম ইদ্রিস আলী, সহাকরি কমিশনার ভূমি শাকিল আহমেদ, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ওয়ালিফ মন্ডল, সর্বানন্দ ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান প্রমূখ।
বীরাঙ্গনা জোহরা বেগম উপজেলার সর্বানন্দ ইউনিয়নের রামভদ্র সর্দারপাড়া গ্রামের আহমদ হোসেনের স্ত্রী। বর্তমান তার বয়স ৬৮ বছর। জোহরা বেগমের ছোট ছেলে মাহফুজ কবির জানান, দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে মানসিকসহ নানাবিধ জটিল কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়ে নিজ বাড়িতেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন তার মা। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সরকারি ভাতা দিয়ে চলছে তাদের সংসার। তার পিতা আহমদ হোসেন ২০১৪ সালে মৃত বরণ করেন। তারা চার ভাই ও তিন বোন। অর্থাভাবে বড় তিন বোন আঞ্জুমান আরা বেগম (৫২), শাহনাজ বেগম (৪৪) ও আরজুমান বেগমকে (২৩) পাত্রস্ত করতে পারেনি। বর্তমানে অবিবাহিতা অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন। চার ভাই এটিএম জাহাঙ্গীর কবির, এটিএম ফিরোজ কবির, মাহমুদ কবির ও মাহফুজ কবির সকলে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করার পরও বেকার অবস্থায় বাড়িতে অবস্থান করছি। বসতবাড়ি, পুকুর ও আবাদি জমিসহ মোট ৮২ শতক জমি রয়েছে তাদের। তিনি আরও বলেন, বীরাঙ্গনা জোহরা বেগমের চিকিৎসাসহ বিভিন্ন সহায়তার জন্য প্রধান মন্ত্রীর বরাবর আবেদন করা হলে জেলা প্রশাসক মহোদয় তাদের বাড়িতে প্রধান মন্ত্রীর সহায়তা পৌছে দেন।
জেলা প্রশাসক মো: আবদুল মতিন বীরঙ্গনা মহীয়সী জোহরা বেগমের নামে সর্বানন্দ ইউনিয়নের রামভদ্র গ্রামে তাঁর নামে একটি সড়ক ও বাড়িতে একটি সেমি পাকা ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। এ ছাড়া বেকার ছেলে ও কন্যাদের জন্য যোগ্যতা অনুযায়ী সুযোগ-সুবিধা মোতাবেক জিও এবং এনজিও সংস্থায় চাকরি ব্যাপারে সহায়তা প্রদানের আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এমনকি বীরাঙ্গনা জোহরা বেগমের চিকিৎসার জন্য জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে সহায়তা প্রদানেরও প্রতিশ্রুতি দেন।