রাজশাহীর পুঠিয়ায় বিভিন্ন স্থানে যত্রতত্র ভাবে গড়ে উঠেছে ১৪টি ইটভাটা। বেশির ভাগ গ্রামঞ্চলের ইটভাটাগুলিতে অতি নি¤œমানের কয়লা এবং কাঠ পোড়ানোর কারণে আশেপাশের পরিবেশ বিপর্যয় হয়ে দেখা দিয়েছে। প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ না থাকার কারণে,ভাটাগুলি প্রতিদিন ফসলী জমির উর্বর অংশ কেটে এনে ভাটায় জমা করছে। আর ভাটার মালিকরা বলছে, প্রতিবছর এলাকায় নতুন নতুন যে পুকুর খনন হচ্ছে,তাদের নিকট হতে ভাটার মালিকরা মাটি কিনে নিয়ে ইট পোড়াচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ১৪টি ইটভাটা গড়ে উঠেছে। হাতেগুনা দুুই/তিনটির ভাঁটা আধুনিক ভাবে কয়লা দিয়ে ইটপোড়ানো হয়ে থাকে। বাঁকি ইটভাটাগুলি প্রকাশ্যে নি¤œমানের কয়লা ও বিভিন্ন রকম গাছের গুড়ি ব্যবহার করতে দেখা যাচ্ছে। বেশীর ভাগ ইটভাটাগুলির কোনো বৈধ কাগজপত্র নেই। তারা আইনশৃঙ্খাবাহিনীর বিভিন্ন দপ্তরে বিশেষ সুবিধা দিয়ে ইট পোড়ানোর ব্যবস্থা করে চলছে। শিলমাড়িয়া ইউনিয়নের আবুল কাশেম নামের ব্যক্তি বলেন, উপজেলা সদর থেকে এই ইউনিয়নের দুরত্ব বেশি হওয়ার জন্য এবং ভাটাগুলি দেখভালের দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের গাফলতির কারণে, ফসলী মাঠের মধ্যে নিয়ম ভর্হিভূত ভাবে ইটভাটা গড়ে উঠেছে। ইটভাটার কালোধোঁয়ার কারণে প্রতিবছর আমাদের এলাকায় বিভিন্ন ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। বিশেষ করে চলতি মৌসুমে আমের গাছের যে মুকুল বাহির হবে। তা শুধুমাত্র ভাটার কালোধোঁয়ার জন্য উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। এলাকার কিছু হাতে গোনা দু’চার জন ইটভাটার মালিকরা লাভবান হবে। কিন্তু শতশত ফসল উৎপাদনকারী চাষীরা ইটভাটার দ্বারায় ক্ষতির শিকার হবে। কৃষকদের পক্ষ থেকে বাধ্য হয়ে, বিভিন্ন সময় উপজেলা কৃষি অফিস ও নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একাধিক বার অভিযোগ দিয়েও এর কোনো সুফল পাচ্ছে না। যার জন্য, অনেক কৃষকরা বাধ্য হয়ে ফসলী জমিতে পুকুর খননের দিকে ঝুকেছে। প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ না থাকার কারণে,ভাটাগুলি প্রতিদিন ফসলী জমির উর্বর অংশ কেটে এনে ভাটায় জমা করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইটভাটার এক মালিক বলেন, প্রতি বছর পরিবেশ অধিদপ্তরের আঞ্চলিক কর্মকর্তাদের ভাটার মালিকদের নিকট থেকে মোটা অংকের টাকা দিতে হয়। কোনো কোনো ভাটার মালিকরা আবার সরকারকে ভ্যাট,কর ফাঁকি দেয়ার জন্য প্রতিবছর ইট তৈরির নাম পরির্বতন করছে। পুঠিয়া পৌরসভা পাশে একটি ইটভাটা নাম পরিবর্তন করে ভাঁটা চালু করেছে। বর্তমানে তার নাম দিয়েছে এমএসবি। এলাকাবাসীরা বলছে, ইটভাটাগুলিতে ভোক্তা অধিকার আইনের কর্মকর্তারা অভিযান না করার ফলে জন্য সব ভাটার ইটের আকার সঠিক নেই। ইট ক্রেতাদের অভিযোগ, এদিকে ইটের মাফ সঠিক নেই। তারপর ভাটার মালিকরা ইট তৈরির করার সময় ইটের ভেতর কী যেন পদার্থ মাটির সঙ্গে মিশ্রণ করে ইট পোড়াচ্ছেন। যার কারণে নতুন ভাবে ঘববাড়ি নির্মাণ করার পর। কিছুদিন না যেতেই সেগুলোতে নোনা লেগে সিমেন্ট খুলে পড়ছে।
পুঠিয়া উপজেলা ভাঁটা মালিক সমিতির সভাপতি নাসির উদ্দিন মন্ডল বলেন, আমরা কোনো নি¤œমানের কয়লা ব্যবহার করি না। কারণ, সরকার যে কয়লা আমদানি করে, সে কয়লাগুলে আমরা ইট পোড়ানোর কাজে ব্যবহার করে থাকি। এই উপজেলার প্রায় সবগুলে ভাটার পরিবেশ অধিদপ্তরের ছারপত্র রয়েছে। আমরা ফসলী জমির উর্বর অংশ কেটে ইট পোড়ায় না। প্রতিবছর এলাকায় নতুন নতুন যে পুকুর খনন হচ্ছে,তাদের নিকট হতে ভাটার মালিকরা মাটি কিনে নিয়ে ইট পোড়াচ্ছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরুল হাই আনাছ বলেন, যদি কোনো ইটভাটার মালিক নি¤œমানের কয়লা, গাছের কাঠ ব্যবহার করে থাকেন। আমরা এবং পরিবেশ অধিদপ্তর কর্মকর্তারা মিলে সেই ভাটাগুলি বন্ধ করে দেব। আমি কয়েক দিনে ভেতর ভাটাগুলি পরিদর্শন করে, কোনো রকম গাফলতি দেখতে পেলে সেই ভাটাগুলি বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করব।