নীলফামারী সহ উত্তর জনপদের ১৬টি জেলায় শীতের তীব্রতা দিন দিন নুতন করে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ অঞ্চলে শীতকাল এলেও শীতের কোন প্রকোপ ছিল না। অনেকটাই স্বাভাবিক ছিল এ অঞলের শীতকালীন জীবন যাত্রা। গত এক সপ্তাহ ধরে তথা পৌষের শেষে এসে শৈত্যপ্রবাহের সাথে ঠান্ডা হিমেল বাতাস জনজীবন দূর্বিষহ করে তুলেছে উত্তর জনপদের ১৬টি জেলার মানুষ, পশু, ফসলসহ সকল ক্ষেত্রে। সোমবার এ অঞ্চলের তাপমাত্রা ৮ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে এসেছে। এ অঞ্চলে গত শনিবার হত তাপমাত্রা শুরু করে। হিমশীতল উত্তরের বাতাস আর ঘন কুয়াশার কারণে শীতের দাপট ক্রমাগত বাড়ার কারণে নুতন করে ঠান্ডা জাঁকিয়ে বসেছে। এর ফলে শীতে কাঁপছে কুয়াশার চাদরে ঢাকা এ জেলার লক্ষ লক্ষ মানুষ। এ তীব্র ঠান্ডার কারণে জেলার তিস্তা বিধৌত গ্রাম ও চর গুলোর মানুষের অবস্থা শোচনীয়। হাসপাতালগুলোতে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর ভিড় বাড়ছে। ঘনকুয়াশা ক্ষতি করছে শীতকালীন সবজি আবাদে। বিশেষ করে আলু আবাদে চাষীরা ছত্রাক রোগ দেখার আশঙ্কা করছে। এ অবস্থায় কর্মজীবী খেটে খাওয়া ও ছিন্নমূল মানুষেরা ফুটপাতের পুরাতন গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে ভিড় করতে দেখা যাচ্ছে। হঠাৎ করে শীতের তীব্রতা বাড়ায় দাম বেড়েছে শীত বস্ত্রের। উত্তর জনপদের বিখ্যাত পাইকারী পুরাতন কাপড়ের বাজার বগুড়া, সৈয়দপুর ও দিনাজপুর। পাইকারী মার্কেটগুলোতেও প্রতি বেল (গাইট) এ ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা বেশী বলে ব্যাবসায়ীরা জানায়। এর ফলে ফুটপাতের খুচরা বিক্রেতারা এ বছর পুরাতন কাপড়ের চাহিদা ও ক্রয়মূল্য বেশীর কারণে দামও হাকছেন বেশি। শীতের তীব্রতার সাথে দামের ঊর্দ্ধগতিতে নিন্মবিত্ত ও ছিন্নমুল মানুষেরা চরম বিপর্যয়ে পড়েছে। খড়কুটে জ¦ালিয়ে অনেকে শীত নিবারনের চেষ্ট চালাচ্ছে। শীতের তীব্রতায় ডায়রিয়া, আমাশয়, নিউমোনিয়া, সর্দি-কাশিসহ শীত জনিত রোগে ভূগছে শিশু ও বৃদ্ধরা। গ্রামাঞ্চলের নিম্নবিত্ত ও ছিন্নমুল মানুষেরা জানায়, শীতের তীব্রতা ও শীতের গরম কাপড়ের অভাবে কাজকর্মে বিঘœ হচ্ছে। সঠিক সময়ে কাজে যেতে পারছেনা। শীতের তীব্রতায় কর্মহীন হয়ে পড়েছে গ্রামের খেটে খাওয়া দিনমজুর মানুষেরা। এ অবস্থায় উত্তর জনপদের এ জেলার শ্রমজীবী মানুষেরা পরিবার-পরিজন নিয়ে পড়েছেন মহাবিপাকে। কাজ করতে না পারায় পরিবারের খাদ্যের সংস্থান করতে পারছেন না অনেকে। শীতের তীব্রতায় গৃহপালিত পশু-পাখি যেমন গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, হাঁস-মুরগি নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। শীতের কারণে খামারীরা আশঙ্কা করছেন বৃদ্ধি ও উৎপাদন কমার। সেই সাথে কৃষক, কৃষি ও কৃষি অর্থনৈতি স্থবির হয়ে পড়াতে কৃষি প্রধান উত্তর জনপদ উৎপাদনে পিছিয়ে পড়বে। উত্তর জনপদে পর্যাপ্ত পরিমানে শীত বস্ত্র সরবরাহ ও নিম্নবিত্ত-ছিন্নমুল মানুষের দোঁড়গোড়ায় পৌঁছে দিতে সরকার ও বিত্তবানদের আবেদন জানিয়েছেন সুশীল সমাজ।