নওগাঁর ধামইরহাটে দারিদ্রতাকে হার মানিয়ে শিক্ষা ও চাকুরীক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করায় সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায়ভুক্ত সফল নারী লাভলী হেমরমকে। সম্মাননা প্রদান করায় উপজেলা প্রশাসন ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরকে কৃতজ্ঞাত প্রকাশ করেছেন আদিবাসী ওই সফল নারী।
গতকাল দুপুর ২ টায় উপজেলা মহিলা বিষয়ক কার্যালয়ে জয়িতা অন্বেশন বাংলাদেশ অনুষ্ঠানে তালিকাভুক্ত সফল ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী নারী লাভলী হেমরমকে শিক্ষা ও চাকুরী ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করায় সম্মাননা স্মারক তুলে দেন ইউএনও’র পক্ষে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান। এ সময় সমাজসেবা কর্মকর্তা সোহেল রানা, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক কমান্ডার ফরমুদ হোসেন, মহিলা বিষয়ক অফিসের ট্রেড ইনস্ট্রাক্টর আলতাব হোসেন, উপজেলা প্রেস ক্লাব সভাপতি আবু মুছা স্বপন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সম্মাননা প্রাপ্ত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী নারী লাভলী হেমরম জানান, ‘পরিবারে ৪ বোন ও ১ ভাই। বোনের মধ্যে সে সবার বড়, মাধ্যমিক পাসের পর অল্প বয়সে বিয়ে ও বাবার মৃত্যুতে অনেকটাই ভেঙ্গে পড়েন তিনি। সংসারের ঝামেলায় লেখাপড়া করার সুযোগ পেতেন না লাভলী হেমরম। স্বামী সংসারের সহযোগিতা না পেয়ে একপর্যায়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার শপথ নিয়ে ঘুড়ে দাড়াবার চেষ্টা করেন, তিনি বিভিন্ন এনজিওতে চুক্তিভিত্তিক বেতনে চাকুরী করতে শুরু করেন, চাকুরীর অর্থ দিয়ে পরিবারে মায়ের সহায়তা, বোনদেরও লেখাপড়ায় সহযোগিতা করেন। পর্যায়ক্রমে উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যন্ত লেখা পড়া শেষ করেছেন তিনি, নিয়েছেন কম্পিউটার প্রশিক্ষণও এবং হয়েছেন দক্ষ আইটি এক্সপার্ট। এখন ব্রাক আইডিপি (ইন্টিগ্রেটেড ডেভলপমেন্ট প্রজেক্ট) তে প্রশিক্ষক হিসেবে ভালো বেতনে চাকুরীও করছেন তিনি। তার সফলতায় পরিবার ও গ্রামবাসীরা অভিভূত হয়েছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গণপতি রায় বলেন, ‘সমাজে নারীরা এখন আর অবহেলিত নয়, বিশেষ করে ধামইরহাট উপজেলায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের নারীদের জন্য লাভলী হেমরম একটি উদাহরণ, সমাজে যারা জীবন যুদ্ধে পরাজয়কে হার মানিয়ে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায় উপজেলা প্রশাসন তাদের পাশেও সহায়তার হাত বাড়িতে দিতে কোন কুণ্ঠাবোধ করবে না।