কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় ৪১ গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উপহার হিসেবে দুই শতাংশ জমির দলিল ও ঘরের চাবি হস্তান্তর করেছে উপজেলা প্রশাসন। শনিবার (২৩ জানুয়ারি) সকালে উপজেলা পরিষদ হলরুমে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারকে জমির দলিল ও ঘরের চাবী হস্তান্তর করা হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে আধুনিক ও উন্নত জীবনমানের সকল সুযোগ-সুবিধাসহ এসব জমি ও ঘর উপহার দিয়েছেন। মাথার উপর সবুজ টিনের ছাউনি, দুই কক্ষ বিশিষ্ট পাকা ঘর, প্রতি ঘরের সামনে বারান্দা, দুটি শয়ন কক্ষ, রান্নাঘর, টয়লেটসহ সংযুক্ত গোসলখানা। সামনে ফাঁকা বিশাল উঠান। থাকছে বিদ্যুৎ সংযোগ ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা।
শনিবার (২৩ জানুয়ারি) সকাল ১১ টার দিকে ঢাকার গণভবন থেকে ভিডিও কনফান্সের মাধ্যমে সারাদেশে ৬৬ হাজার ১৮৯টি ঘর বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরমধ্যে পাকুন্দিয়া উপজেলায় ৪১টি ঘর রয়েছে। একই সঙ্গে জমির দলিল ও ঘরের চাবি তুলে দেওয়া হয় তাদের হাতে। বানেছা, আমিন, পারভীন, কল্পনা, রুবিয়া, কবিতা রানী, স্বরস্বতী রানী, কৃষ্ণ রানীর মত বহু নারী যারা এতদিন কেউ অন্ধকার কুড়ে ঘরে,কেউ ভাঙ্গা বেড়া ও ভাঙ্গা টিনের চালের ঘরে বাস করতেন। রোদে পুড়তেন, বৃষ্টিতে ভিজতেন, আজ তারা দুই শতাংশ জমি ও দুই কক্ষ বিশিষ্ট পাকা স্বপ্নের নীড়ে থাকার সুযোগ পেয়ে উচ্ছ্বাস ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
ঘর পেয়ে আবেগে আপ্লোত বানেছা খাতুন বলেন, আমার কোন জায়গা ছিল না, ঘরও ছিল না। নামাজ পড়ার জায়গাটিও ছিল না। অন্যের বাড়িতে থাকতাম। শেখ হাসিনা আমারে একটি ঘর দিয়াছে। ঘর পেয়ে আমি খুবই খুশি। আমি শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞ। নামাজ পড়ে আমি তার জন্য দোয়া করব। তিনি যেন দীর্ঘায়ূ লাভ করেন।
পাকুন্দিয়া উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে বড় পর্দায় অনুষ্ঠিত প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও কনফারেন্স শেষে ৪১ ভূমিহীনের হাতে ঘরের দলিল ও চাবি তুলে দেন পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নাহিদ হাসান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) একেএম লুৎফুর রহমান, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. রওশন করিম, জাংগালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান সরকার শামীম আহমেদ, চন্ডিপাশা ইউপি চেয়ারম্যান মো. শামছুদ্দিন, সুখিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আঃ হামিদ টিটু, হোসেন্দী ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মজিবুর রহমান হামদু ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার মিছবাহ উদ্দিন প্রমুখ।
পাকুন্দিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের আওতায় মুজিবর্ষ উপলক্ষে পাকুন্দিয়া উপজেলায় প্রথম পর্যায়ে ৪১টি ঘর নির্মাণ করে ভূমিহীন ও গৃহহীনের মধ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে পাকুন্দিয়া পৌর এলাকায় ১৪টি, হোসেন্দী ইউনিয়নে ৫টি, নারান্দী ইউনিয়নে ৫টি ও সুখিয়া ইউনিয়নে ১৭টি ঘর ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে। দুই কক্ষ বিশিষ্ট সেমিপাকা প্রতিটি ঘর নির্মাণে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা। আর ৪১টি ঘর নির্মাণে ব্যয় করা হয়েছে ৭০ লাখ ১১ হাজার টাকা।