কৃষিমন্ত্রী ডঃ মোঃ আবদুর রাজ্জাক বলেছেন, বর্তমানে দেশে বছরে ১ কোটি টনের বেশি উন্নত জাতের আলু উৎপাদন হয়। দেশে চাহিদা রয়েছে ৬০/৭০ লক্ষ টনের মত। আলু উৎপাদনে দেশ স্বয়ংসম্পুর্ন হয়েছে বলেও তিনি দাবী করে বলেন, দেশে উৎপাদিত আলুতে পানির পরিমান বেশি হওয়ায় বিদেশে আমাদের আলুর চাহিদা কম। সেজন্য বিদেশে চাহিদার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে রপ্তানি ও শিল্পে ব্যবহারযোগ্য আলুর আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধিতে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে এবং সে লক্ষ্যেই কৃষি মন্ত্রণালয় কাজ করে যাচ্ছে। মন্ত্রী বুধবার ২৭ জানুয়ারী সকালে নীলফামারীর ডোমার উপজেলায় বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনে (বিএডিসি) এর বীজ আলু উৎপাদন খামার পরিদর্শন শেষে এসব কথা বলেন। মন্ত্রী আরো বলেন, বিএডিসির মান সম্পন্ন বীজআলু উৎপাদন ও সংরক্ষণ এবং কৃষক পর্যায়ে বিতরণ জোরদারকরন প্রকল্পের আওতায় ডোমার খামারে ভিত্তি বীজআলূ উৎপাদন করা হচ্ছে। পাশাপাশি নতুন জাতের উপযোগিতা যাচাইয়ের জন্য ট্রায়াল প্লট স্থাপন ও পর্যবেক্ষন করা হচ্ছে। এ ছাড়া প্রকল্পের আওতায় সারাদেশে ২৮টি জোনে চুক্তিবদ্ধ চাষীর মাধ্যমে কৃষক পর্যায়ে ব্যবহৃত বীজ আলু উৎপাদন করা হচ্ছে। এ প্রকল্পের আওতায় উচ্চ ফলনশীল, রপ্তানি ও শিল্পে ব্যবহার উপযোগী আলুর জাত পরিচিতি ও জনপ্রিয়করনের জন্য বিএডিসি আমদানিকৃত এবং বারি উদ্ভাবিত সম্ভাবনাময় ২০টি জাত নিয়ে এ বছর সারাদেশে ৩০০টি প্রদর্শনী প্লট ও মাল্টিলোকেশন টেষ্ট পরিচালনা করা হচ্ছে। ২০২০-২১ উৎপাদন বর্ষে বিভিন্ন মানের ৩৭ হাজার ৫শত মেট্রিকটন বীজআলু এবং ৫ হাজার মেট্রিকটন রপ্তানি উপযোগী আলুসহ ৪২ হাজার ৫শত মেট্রিকটন আলূ উৎপাদন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। মন্ত্রী আরো বলেন, বীজআলুর মান অক্ষুন্ন রাখতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বীজআলু উৎপাদন, সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াজাতকরনের জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে এর কার্যক্রম ডোমার খামারে শুরু হয়েছে। তিনি জানান, আলুবীজ উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি সংরক্ষন ক্ষমতা বাড়াতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সারাদেশে ২৮ জোনে ৩০টি হিমাগার রয়েছে। যার বর্তমান ধারন ক্ষমতা ৪৫ হাজার ৫শত মেট্রিকটন। এই প্রকল্পের মেয়াদে ২ হাজার মেট্রিকটন ধারন ক্ষমতা সম্পন্ন আরো ৪ টি হিমাগার নির্মান করা হবে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, কৃষি সচিব মোঃ মেবাহুল ইসলাম, বিএডিসির চেয়ারম্যান মোঃ সায়েদুল ইসলাম, কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ আসাদুল্লাহ, বারির মহাপরিচালক নাজিরুল ইসলাম, গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ডঃ মোঃ এছরাইল হোসেন প্রমুখ। পরিদর্শন শেষে মন্ত্রী বিএডিসি কার্যালয়ে কৃষি কর্মকর্তাদের সাথে মত বিনিময় সভায় মিলিত হন। দুপুরের খাবার শেষে মন্ত্রী পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার তিস্তাপাড়ায় কাজুবাদাম, মিষ্টিআলু, কফি চাষ, প্রসেসিং ও কৃষকদের প্রশিক্ষন কর্মশালা, বারির বীজ বর্ধন খামার, গম ও ভুট্টা বীজ উৎপাদন খামার পরিদর্শন করেন।