সারাদেশের দেশের আগামী ৩০ জানুয়ারী নেত্রকোনার দুর্গাপুর পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচন কে ঘিরে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা প্রচার প্রচারনায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। পৌর শহরের চায়ের দোকান থেকে শুরু করে ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মাঝে চলছে আলোচনা, কে হচ্ছেন আগামী দিনের নগর পিতা। সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীরা সামাজিক অনুষ্ঠান ও ধর্মীয় উৎসবে যোগদান সহ, পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন লাগিয়ে ডিজিটাল প্রচারে মুখরিত করে রেখেছে পৌরশহর। অপরদিকে নানা যোগাযোগ ও সৃজনশীল কর্মের মাধ্যমে পৌর নাগরিকদের মন জয়ের চেষ্টায় তৎপর রয়েছেন। সেই সাথে তরুণ ভোটারদের মন জয় করার মধ্যদিয়ে, জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে নিয়ে প্রতিনিয়ত পথসভা ও শেষ প্রচারনায় ব্যস্ত রয়েছেন তারা। নির্বাচন কে ঘিরে বৃহস্পতিবার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমনটাই দেখাগেছে।
দুর্গাপুর পৌরসভায় মোট ভোটার সংখ্যা ২০,০১৯। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার সংখ্যা ৯,৬৬৪, এবং মহিলা ভোটার ১০,৩৫৫। দলীয় প্রার্থীদের নিয়ে ভোট আদায় সহ নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে সাধারণ ভোটারদের কাছে যাচ্ছেন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী শহীদ পরিবারের সন্তান, বিশিষ্ঠ সমাজসেবক আওয়ামী লীগ নেতা আলা উদ্দিন আলাল, বিএনপি মনোনীত প্রার্থী স্বরণিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, তরুণ নেতা আলহাজ¦ জামাল উদ্দিন, সিপিবি মনোনীত প্রার্থী সাবেক ছাত্র নেতা কমরেড শামছুল আলম খান এবং ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশ এর প্রার্থী মুহাম্মদ আবদুল মান্নান নিজ নিজ দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে মাঠে কাজ করছেন প্রতিনিয়ত। এখানে কোন দলেরই বিদ্রোহী প্রার্থী না থাকায় যে প্রার্থী সাধারণ ভোট বেশী সংগ্রহ করতে পারবেন, সে প্রার্থীই হবে আগামী দিনের মেয়র এমনটাই ধারণা করছেন সুধীজনেরা। এক অনুসন্ধানে জানা গেছে, দুর্গাপুর পৌরসভার মধ্যে প্রায় ২৯% ভোটারই সাধারণ শ্রমিক।
আগামী পৌর নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আলা উদ্দিন আলাল প্রতিনিধিকে বলেন, দল আমাকে মাঠের অবন্থা যাচাই করে মনোনয়ন দিয়েছেন। সে জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। আমি মেয়র নির্বাচিত হলে, দুর্গাপুর পৌরসভাকে একটি আধুনিক পৌরসভায় রুপান্তরিত করবো। নাগরিক সেবাই আমার কাছে সবচেয়ে বেশী প্রাধান্য পাবে। নিষ্ঠার সাথে পৌরবাসীর সেবা দিতে দলীয় নেতা-কর্মীদের সাথে নিয়ে কাজ করে যাবো। পরিকল্পনা ছাড়া কোন কাজই বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। পৌরসভার একটি টাকাও যেন নষ্ট না হয়, সেদিক বিবেচনা করে সঠিক পরিকল্পনা তৈরী করে সকল কাজ করে যাবো। আমি আশাকরি অন্ত:ত ৫ হাজার ভোট বেশীপেয়ে পাশ করবো ইনশাহ্আল্লাহ।
এ প্রসঙ্গে বিএনপির মেয়র প্রাথী প্রধান শিক্ষক আলহাজ¦ জামাল উদ্দিন বলেন, ভোট একটি নাগরিক অধিকার। মানুষ যদি ভোট দেয়ার সুযোগ পায় তাহলে আমি বিপুল ভোটি নির্বাচিত হবো। আমি নির্বাচিত হলে, সকলের সহযোগিতা নিয়ে, পৌরবাসীর নাগরিক সুবিধা দিতে সুপেয় পানি, উন্নত ডেনেজ ব্যবস্থা, রাস্তায় পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা, শৌচাগার নির্মান সহ বিকল্প রাস্তায় ট্রাক চলাচলের কাজ আগে সম্পন্ন করবো।
সিপিবি মনোনীত প্রার্থী কমরেড শামছুল আলম খান বলেন, পৌরসভার ভোটারগন সবাই সচেতন, চারদিকে চলছে আঙুল ফুলে কলাগাছ বনে যাওয়ার রাজনীতি। শুকনা মৌশুমেও শহরের রাস্তা ভিজা থাকে সব সময়। পর্যাপ্ত আলো না থাকায় প্রায়ই ঘটে ছিনতাইয়ের ঘটনা। পরিকল্পনা মোতাবেক ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় বর্ষায় রাস্তা ঘাটে পানি জমে থাকে। একটি ২য় শ্রেনীর পৌরসভার হাল এমন হতে পারে না। আমি নির্বাচিত হলে নাগরিক সুবিধা দেয়ার জন্য কাজ করবো।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর প্রার্থী মুহাম্মদ আবদুল মান্নান বলেন, বর্তমানে হক কথা বলতে গেলেই বন্ধু বেজার হয়ে যায়। দুর্গাপুর পৌরসভার রাস্তা ঘাটের যে অবস্থা, তা দেখে আমাদেরই লজ্জা হয়। ক্ষমতাসীন দলের বার বার মেয়র নির্বাচিত হয়েও যে উন্নয়ন করেছেন তা যথেষ্ট নয়। ইনশাহ্আল্লাহ আমি নির্বাচিত হলে, শিক্ষা ও পৌরসভার নাগরিক সুবিধাকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করবো।
পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ড মিলে সংরক্ষিত মহিলা আসনে ১৩জন ও সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৪১ প্রতিদ্ব›িদ্ধতা করছেন। নানা প্রতিশ্রুতি আর মুরুব্বীদের দোয়া চেয়ে মাঠে কাজ করে পৌরবাসীর মন জয় করার চেষ্ট চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। বিভিন্ন এলাকায় কিছু বিশৃঙ্খলার খবর পাওয়া গেলেও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর থাকায় পরবর্তিতে তা মিটিয়ে শন্তিপুর্ন ভাবেই কাজ করে যাচ্ছেন সংরক্ষিত মহিলা প্রার্থী ও সাধারণ কাউন্সিলরগন।
এ নিয়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ফারহানা শিরীন প্রতিবেদককে বলেন, দুর্গাপুর পৌরসভা নির্বাচন কে ঘিরে ইতোমধ্যে ০৯টি কেন্দ্রের মধ্যে সবগুলোই ভিজিট করা হয়েছে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীও প্রস্তত রয়েছে, বিশৃঙ্খলা এড়াতে শহরে টহল দিচ্ছে। ভোট কেন্দ্রের মালামালও তৈরী আছে। এলাকার পরিবেশ যথেষ্ট শান্ত রয়েছে। কোন কেন্দ্রই ঝুকিপুর্ন হিসেবে চিহ্নিত হয়নি। ইতোমধ্যে প্রিজাইডিং, সহকারী প্রিজাইডিং ও পোলিং এজেন্ট নিয়োগের কাজও শেষ করা হয়েছে। আশা করছি শান্তিপুর্ন পরিবেশে আগামী ৩০ জানুয়ারী ভোটগ্রহন সম্পন্ন করতে পারবো।