বৌদ্ধ ধর্মীয় মহাসাধক শ্রাবক বুদ্ধ শ্রীমৎ ভদন্ত সাধনানন্দ মহাস্থবির বনভান্তের ৯ম পরিনির্বাণ (মৃত্যু) বার্ষিকী উপলক্ষে ধর্মীয় মহাপুণ্যানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (৩০ জানুয়ারী) সকালে রাঙ্গামাটি রাজবন বিহার, যমচুগ বনাশ্রম ভাবনা কেন্দ্র, নানিয়ারচরের রতœাংকুর বনবিহারসহ বিভিন্ন শাখা বন বিহারে হাজারো পুণ্যার্থীদের ভক্তি শ্রদ্ধায় বনভান্তের অস্থায়ী বেদীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের মাধ্যমে স্মরণ করা হয়েছে বৌদ্ধদের মহাসাধক বনভান্তেকে।
গত শুক্রবার দুপুর থেকে দূর-দূরান্ত থেকে অনুষ্ঠানে যোগ দেন হাজারো বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী পুণ্যার্থীদের ঢল। পরিনির্বাণ (মৃত্যু) বার্ষিকী উপলক্ষে নানা রঙে তৈরি তোরণ ও বেলুনে সাজানো হয় গোটা বিহার এলাকা। আজ সকালে বৌদ্ধ পতাকা উত্তোলন, পঞ্চশীল প্রার্থনা, বুদ্ধপূজা, ত্রিপিটক পূজা, সংঘদান, অষ্টপরিস্কার দান, বুদ্ধমূর্তি দান, প্রদীপ পূজা ও ধর্মীয় সভাসহ শহরে ধর্মীয় শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পুণ্যার্থীদের মাঝে ধর্মদেশনা দেন, বোধিরতœ উপাধিপ্রাপ্ত ও বনভান্তের প্রধান শিষ্য ভদন্ত শ্রীমৎ নন্দপাল মহাস্থবির। এ সময় শ্রীমৎ প্রিয়নন্দ মহাস্থবির, দীঘিনালা বন বিহারের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ শুভবর্ধন মহাস্থবির, ধুতাঙ্গটিলা বিহারের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ দেবধাম্মা মহাস্থবির ও যমচুগ বনাশ্রম ভাবনা কেন্দ্রের বিহার অধ্যক্ষ কল্যাণ জ্যোতি মহাস্থবির।
যমচুগ বনাশ্রম ভাবনা কেন্দ্র বিহার পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে গুনীজনদের সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়। এ সময় ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পঞ্চশীল প্রার্থনা পাঠ করেন, বিহার পরিচালনা কমিটির অর্থ সম্পাদক প্রদীপ চাকমা। অনুষ্ঠান পরিচালনায় ছিলেন, বিহার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রূপক চাকমা। এছাড়াও অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি পূর্ণচক্র চাকমা, তথ্য ও প্রচার সম্পাদক প্রভাত চাকমা।
উল্লেখ্য, বৌদ্ধ ধর্মীয় এই মহাগুরু ১৯২০ সালের ৮ জানুয়ারি রাঙ্গামাটি সদরের ১১৫ নম্বর মগবান মৌজার মোরঘোনা নামক গ্রামের এক নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন। তিনি মহামতি গৌতম বুদ্ধের পথ অনুসরণ করে ১৯৪৯ সালে গৃহত্যাগ করেছিলেন। ২০১২ সালের ৩০ জানুয়ারি মহাপরিনির্বাণ লাভের মধ্যদিয়ে দেহত্যাগ করেন তিনি। জীবদ্দশায় রাঙ্গামাটি রাজবন বিহারের অধ্যক্ষ ছিলেন, বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মহাগুরু।