রংপুরের পীরগঞ্জে করতোয়া নদীর বুকে কালো থাবা বসিয়েছে প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতারা। একাধিক জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতারা নদীটির তলদেশ থেকে প্রতিদিনই অবৈধভাবে বালু লুটে নিচ্ছে। এমনকি অন্যের জমিও খনন করে বালু তুলছে। এ যেন, জোর যার, মুল্লুক তার ! নদীপাড়ের বেশ কয়েকটি স্থানে কোটি টাকা মুল্যের বালু মজুদ থাকলেও প্রশাসন নিশ্চুপ। অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন ও ড্রাম ট্রাকে বালু পরিবহনের কারণে পাকা ও কাঁচা রাস্তা ভেঙ্গে যাচ্ছে, ভেঙ্গে যাচ্ছে আবাদি জমি। সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রংপুর-দিনাজপুর জেলার পীরগঞ্জ, নবাবগঞ্জ, ঘোড়াঘাটের প্রায় ২৫টি গ্রামের বুক চিরে বয়ে গেছে করতোয়া নদী। নদীটির তলদেশে শ্যালোমেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলনে উপজেলার নেতাদের মাঝে তীব্র প্রতিযোগিতা চলছে। এতে নদীপাড়ের জমি, রাস্তা-ঘাট ভেঙ্গে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে। ফলে এলাকাবাসী তাদের সম্পদ ও রাস্তা রক্ষায় ইউএনও’র কাছে অসংখ্য লিখিত অভিযোগ ও মানববন্ধন করলেও প্রতিকার পায়নি। উল্টো নদীপাড়েই কোটি কোটি টাকা মুল্যের বালুর মজুদ করা হয়েছে। নদীটির টুকুরিয়া ইউনিয়নের জয়ন্তীপুর, দক্ষিণ দুর্গাপুর, বিছনা,মোনাইল,বড় আলমপুর ইউনিয়নের ৫টি স্থানে চতরা ইউনিয়নের পৃথক ৬টি স্থানে অভিন্ন প্রক্রীয়ায় অসংখ্য স্যালোমেশিন মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন চলছে। এছাড়াও অন্যের জমি থেকেও জোরপূর্বক বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এলাকাবাসী ওই নেতাদের নাম নিতেও ভয় পাচ্ছে। রহেস্যজনক কারণে প্রশাসন অভিযান পরিচালনা থেকে বিরত থাকছে বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেন। মদনখালীর জমি মালিক সুলতান মাহমুদ বলেন, বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েও আমার মায়ের নামে জমি থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ করতে পারছি না। এ যেন মগের মুল্লুক ! জোর যার, মুল্লুক তার ! ভুক্তভোগীরা জানান, জয়ন্তীপুর ঘাট থেকে গোপীনাথপুর মাদ্রাসার মোড় পর্যন্ত প্রায় ১ কিমি পাকা রাস্তা ভেঙ্গে কাঁচা রাস্তায় পরিণত হয়েছে। প্রতিবাদ করলে হামলা, মামলার ভয় দেখানো হয়। টুকুরিয়া ইউপির চেয়ারম্যান আতাউর রহমান রহমান মন্ডল বলেন, যারা নদী রক্ষা কমিটির সদস্য তারাই বালু তুলছে। প্রতিবাদ করায় আমার ভাই মান্নান মন্ডলকে হামলা করা হয়েছে। আর মোনাইল থেকে বেছনা পর্যন্ত পর্যন্ত রাস্তাও ভেঙ্গে গেছে। ইউএনও বিরোদা রানী রায় বলেন, আইনকে মান্য করা একজন নাগরিকের পবিত্র দায়িত্ব। যারা বালু উত্তোলন করছে সেক্ষেত্রে মাঝে মাঝে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হয়।