চারঘাটের নিমপাড়া ইউনিয়নের মাঠ জুড়ে চাষ হয়েছে গম, মশুর, পেঁয়াজ, রসুনসহ বিভিন্ন ফসল। চোখ মেললে সেখানে সবুজের সমারোহে মনটা ভরে উঠে। কিন্তু সেই সবুজের বুক চিড়ে খনন করা হচ্ছে অবৈধভাবে একের পর এক পুকুর। যেনো দেখার কেউ নেই। প্রভাবশালী পুকুর খননকারীদের কাছে অসহায় হয়ে পড়েছে সেখানকার কৃষকরা।
এভাবে চলতে থাকলে চারঘাটের অন্য বিলের কৃষকদের মত নিমপাড়ার কৃষকরাও একসময় চরম সংকটের মধ্যে পড়বে। জলাবদ্ধতার কারণে পুকুরের আশেপাশের জমিগুলো অনাবাদী হয়ে পড়বে। কৃষকদের পথে বসতে হবে। এভাবেই আক্ষেপ জানান ভুক্তভোগীরা।
সরেজমিন নিমপাড়া ইউনিয়নের ঝাউবনা বিলে গিয়ে দেখা যায়, ফসলী মাঠ জুড়ে এসকেভেটর দিয়ে রিতিমত পুকুর খননের উৎসবে মেতেছে রতন আলী নামের কথিত এক দন্ত ডাক্তার। মুনসুর আলী নামে এক ব্যাক্তির প্রায় ৮ বিঘা জমি লিজ নিয়ে চলছে পুকুর খনন। তার পাশেই ভাটপাড়া বিলে পাপুল নামে আরেক ব্যাক্তির পুকুর খনন চলছে।
নাম প্রকাশে অনইচ্ছুক পুকুরের পাশ্ববর্তী জমির কৃষকরা জানান, কথিত দন্ত ডাক্তার রতন আলীর দাপটের কাছে সেখানকার কৃষকরা অসহায়। রতন ও তার লোকজনের ভয়ে স্থানীয় কৃষকরা নিশ্চুপ। নিঃশব্দে চোখের পানি ফেললেও তারা বাধা দেওয়ার সাহস পাচ্ছেনা। তবে পুকুরগুলো খনন হলে শতশত বিঘা জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে। তাই দ্রুত এসব অবৈধ পুকুর খননকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানান তারা।
ঝাউবনা বিলে অবৈধ পুকুর খনন বিষয়ে জানতে চাইলে পুকুর খননকারী রতন আলী বলেন, সবখানেই তো পুকুর খনন চলছে, শুধু আমার ক্ষেত্রেই বাধা। জমির শ্রেণি পরিবর্তন করতে হলে ভুমি মন্ত্রনালয়ের অনুমতি প্রয়োজন হয়। আপনি কি সেই অনুমতি নিয়েছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এত কথা বলতে পারছি না। দেখা করে কথা বলবো।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার জানান, অপরিকল্পিত ভাবে পুকুর খননের কারণে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হলে চরম ভাবে কৃষি জমির উপর প্রভাব পড়বে। এতে কৃষি জমি সংকটে পড়বে। ফসল উৎপাদন কমে যাবে, সেজন্য দ্রুত প্রতিকার প্রয়োজন।
এ বিষয়ে চারঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা সামিরা বলেন, ফসলি জমিতে পুকুর খনন করে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করা যাবেনা। অবৈধ পুকুর খননকারীদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলমান আছে।বিষয়টি খোঁজ নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।