রাজবাড়ীতে এতিমখানার শিক্ষার্থীদের ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের দায়ে শিক্ষককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও মোট ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। বুধবার দুপুরে রাজবাড়ী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্রুনালের বিচারক শারমিন নিগার এই রায় দেন।
বাদীপক্ষের মামলা পরিচালনা করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী গণেশ নারায়ন চৌধুরী। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আইনজীবী অনুপ কুমার দাস।
আইনজীবী অনুপ কুমার দাস বলেন, রবিউল ইসলামকে আদালত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯/১ ধারায় তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয়মাসের কারাদন্ডের আদেশ দেন। এ ছাড়া একই আইনের ১০ ধারায় তাকে ৮ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনদায়ে তিনমাসের কারাদন্ডের আদেশ দেন।
দন্ডপ্রাপ্ত শিক্ষকের নাম রবিউল ইসলাম (৩১)। তিনি রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার নারুয়া ইউনিয়নের মধুপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি পারিজাত এতিমখানায় শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
বালিয়াকান্দি মধুপুর গ্রামের বাসিন্দা ফারুক আহম্মেদ বাদী হয়ে ২০১৯ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি বালিয়াকান্দি থানায় মামলাটি দায়ের করেন। ফারুক পারিজাত এতিমখানা ও বৃদ্ধাশ্রমের ভাইস চেয়ারম্যান।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, বালিয়াকান্দির মধুপরে পারিজাত এতিমখানা ও বৃদ্ধাশ্রম আছে। রবিউল এতিমখানার শিক্ষক হিসেবে শ্রেনিকার্যক্রম পরিচালনা করায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রয়েছে। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত টাকা দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে চতুর্থ শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে (বাবলী-১২) বিভিন্ন সময়ে ধর্ষণ করে। ২০১৮ সালের জুন মাসের ২০ থেকে ২৫ তারিখের মধ্যে কোনো একদিন ছাত্রীদের গোসলখানায় এক শিক্ষার্থীকে (আঁখি) মুঠোফোনে পর্ণছবি দেখায়। এ সময় তাকে যৌন নিপীড়ন করে। ২০১৯ সালের ২ জানুয়ারি (আছমা) এক শিক্ষার্থীকে গোসলখানায় মুঠোফোনে পর্ণ ছবি দেখায় ও যৌন নির্যাতন করে। এক শিক্ষার্থী অভিভাবককে বিষয়টি অবহিত করলে বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়। এরপর প্রতিষ্ঠানটির ভাইস চেয়ারম্যান বাদী হয়ে বালিয়াকান্দি থানায় মামলা দায়ের করেন।