রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে উপজেলা যুবলীগ সভাপতি ও জেলা পরিষদের নবনির্বাচিত ১নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মো. ইউনুস মোল্লার বিরুদ্ধে উপজেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নুর আলমের স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আ.লীগের নেতা মো. নুর আলম তাঁর স্ত্রীর ওপর নির্যাতনের অভিযোগ করেন। নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করে ইউনুস মোল্লা রাজনৈতিকভাবে হেয় করার পাল্টা অভিযোগ করেছেন।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে গোয়ালন্দ প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নুর আলম অভিযোগ করেন, পৌরসভার ৭নম্বর ওয়ার্ড কুমড়াকান্দি গ্রামে রেলওয়ে কলোনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন তার বাড়ি। বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণের জন্য বাড়ির যাতায়াতের পথ বন্ধ করে কাজ শুরু করেন কর্তৃপক্ষ। যাতায়াতের সমস্যার কারণে বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটিসহ কর্তৃপক্ষের কাছে ৬ফুট জায়গা খালি রেখে কাজ করার অনুরোধ করেন। সোমবার (১ মার্চ) বিকেলে যাতায়াতের সমস্যা নিয়ে নির্মাণকাজে উপস্থিত ঠিকাদার আজাদ আবুল কালাম ও বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ইউনুস মোল্লার কাছে কৈফিয়ত চান। এ নিয়ে উভয়ের বাকবিতন্ডাকালে নুর আলমের স্ত্রী এগিয়ে আসে। একপর্যায়ে ইউনুস মোল্লা উত্তেজিত হয়ে নুর আলমের স্ত্রী রেহেনা আক্তার রানীর (৩৫) বাম পায়ে ইট দিয়ে থেতলে দেন। তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে স্ত্রীকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। আমি আমার স্ত্রীর ওপর এমন জঘন্য নির্যাতনের কঠোর শাস্তি দাবী করছি।
নুর আলম বলেন,বিষয়টি আমি বিচারের দাবীতে দলের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককেও জানিয়েছি। সোমবার রাতেই গোয়ালন্দ ঘাট থানায় ইউনুস মোল্লা ও ঠিকাদার আজাদ আবুল কালামের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছি। সংবাদ সম্মেলনে বাবা মোকছেদ শেখ, দুই শিশু সন্তান ও পরিবারের অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
অভিযোগ প্রসঙ্গে ইউনুস মোল্লা বলেন, সরকারি বরাদ্দকৃত স্কুলের ভবন নির্মাণের শুরু থেকেই নূর আলম আ.লীগ নেতার প্রভাব খাটিয়ে ঠিকাদারের কাছে চাঁদা দাবী করে আসছিল। চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে সে কাজ বন্ধ করে দেয়। সোমবার বিকেলে নুর আলম বিদ্যালয়ের ভবনের কাজ বন্ধ করে দিলে ঠিকাদারের কাছ থেকে সংবাদ পেয়ে বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি হিসেবে ঘটনাস্থলে স্কুলে ছুটে যাই। কাজ বন্ধ করার জানতে চাইলে নুর আলম ও তার স্ত্রী অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। একপর্যায়ে উভয়ের মধ্যে বাকবিতন্ডা হলে তার স্ত্রী হুচোট খেয়ে পায়ে আঘাতপ্রাপ্ত হন। রাজনৈতিকভাবে আমাকে হেয় করতে তার স্ত্রীকে নির্যাতনের মতো জঘন্য মিথা অভিযোগ করছেন। প্রয়োজনে এলাকার লোকজনও ঘটনার সত্যতা বলতে পারবেন। এ ছাড়া তার সাথে আমার কোন বিরোধ নেই। কিছু রাজনৈতিক নেতার মদদে এ ধরনের অভিযোগের বিচার দাবী করছি।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল তায়াবীর বলেন, সোমবার রাতে আ.লীগ নেতা নুর আলম বাদী হয়ে একটি অভিযোগ দিয়েছেন। যেহেতু উভয় ব্যক্তি ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী নেতা। তাই বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।