রংপুরের পীরগঞ্জে ভুয়া ভাতিজি ও আ.লীগ নেত্রী পরিচয়দানকারী একাধিক মামলার ওয়ারেন্ট ভুক্ত আসামি মেসকোয়ারা হাবিব মুক্তি ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরওয়ানা জারি হয়েছে। গত ১৪ জানুয়ারী রংপুরের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত সি আর ২৩৩/২০ নং মামলায় ৭ আসামীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী গ্রেফতারী পরওয়ানা জারি করেন। গত দু মাসেও আসামিরা গ্রেফতার না হওয়ায় মামলার বাদী দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। একাধিক অভিযোগ ও মামলা সুত্রে জানা গেছে, রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার গুর্জিপাড়া গ্রামের মেসকোয়ারা হাবিব মুক্তি আ.লীগ নেত্রী পরিচয়ে ও তার প্রধান সহযোগী এ আর সাগর চৌধুরী ও আবু হানিফ তুষারসহ অন্যান্য আরও অনেকের সহযোগিতায় একটি সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন। এ সিন্ডিকেট ২০১৭ সাল থেকে চাকরি দেয়া,পুলিশকে মিশনে পাঠানো, পুলিশের বিভিন্ন স্তরে নিয়োগ ও বদলী, গ্যাস ও বিদ্যুত সংযোগ এবং বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ে তদবিরের কথা বলে সাধারন মানুষের কাছ থেকে থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এ সিন্ডিকেটের কাছে প্রতারিত হয়ে অনেক ভুক্ত ভোগী একাধিক মামলাও করেন। প্রাপ্ত অভিযোগে জানা গেছে,উক্ত মেসকোয়ারা হাবিব মুক্তি ও তার সহযোগীরা রংপুর সদরস্থ নর্দান (প্রাঃ) মেডিকেল কলেজ এর প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ ও আসবাবপত্র সরবরাহের জন্য গত ২৩/০৮/২০১৭ ইং ৮৫ লাখ ও পরবর্তিতে আরও ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকা গ্রহন করেন। পরে মেসকোয়ারা হাবিব ও তার সহযোগীরা মালামাল সরবরাহে অনিহা প্রকাশ করলে নর্দান (প্রাঃ) মেডিকেল কলেজ এর প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোতাহার হোসেন ঢাকার গুলশান থানায় একটা মামলা করে। যার নং-২১ তারিখ-২৬/০২/১৮, ধারা-৪২০/ ৪০৬/৫০৬ পেনাল কোড। মামলাটি চলমান আছে। এ মামলার পরিপ্রেক্ষিতে গত ১১/০৪/২০১৮ ইং ঢাকাস্থ বাংলাদেশ পুলিশের সিআইডি বিভাগ মামলার প্রধান আসামি মেসকোয়ারা হাবিব মুক্তি ও তার স্বামীসহ প্রধান সহযোগী সাগর চৌধুরীকে ১৪/০৬/২০১৮ ইং সিঙ্গাপুরে পালিয়ে যাওয়ার সময় এয়ারপোর্ট থেকে গ্রেফতার করে। মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে। এ ছাড়া মেসকোয়ারা হাবিব মুক্তির বিরুদ্ধে রংপুর জজ কোর্টে ৮৫ লক্ষ টাকার চেক ডিজঅনার মামলা রয়েছে। যার মামলা নং-সিআর ৬৯৯/১৮,ধারা এনআই্ এ্যাক্ট ১৩৮। এ মামলাটি চলমান রয়েছে। মুক্তির প্রধান সহযোগী এআরএসডি সাগর চৌধুরীর নামে রংপুর জজ কোর্টে ৭০ লক্ষ টাকার একটি চেক ডিজঅনার মামলা রয়েছে,যার নং-সিআর ১২৫/২০। এ মামলাটিও চলমান রয়েছে। এ ছাড়া মেসকোয়ারা হাবিব মুক্তির স্বামী বাহিরে অবস্থান কালিন সময়ে তাহার ভাতিজা নাহিদকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকার ধানমন্ডিস্থ সিটি ব্যাংক লিমিটেড শাখার ২৮০১৮১৯২৯৪০০১ হিসাব নম্বরে তার স্বামীর নগদ অর্থ,স্বর্ণালংকারসহ প্রায় ১ কোটি টাকার অধিক অর্থ জমা করেন। পরে মেসকোয়ারা হাবিব মুক্তি ব্যাংকে টাকা প্রাপ্তি সাপেক্ষে গুর্জিপাড়াস্থ বাড়ী ঘর ছেড়ে ঢাকায় বড় বোনের বাসায় চলে যান। তিনি ঢাকায় অবস্থান কালে তার স্বামীকে তালাক দিয়ে এ সিন্ডিকেট চক্রের আবু হানিফ তুষার ও এআরএসডি সাগর চৌধুরীর সাথে বসবাস করছেন। এ ব্যাপারে তার স্বামী হাবিবুর রহমান রংপুর ম্যাজিষ্ট্রেট কোর্টে মোসকোয়ারা হাবিব, এসএ সাগর চৌধুরীও আবু হানিফ সহ ৭ জনকে অভিযুক্ত করে একটা মামলা করেন। যার মামলা নং-সি আর ২৩৩/২০, ধারা ৪০৬/৩৭৯/৩৮০/৪৯৭/৪৯৮/১০৯ দঃ বিধি। গত ১৪/০১/২০২১ ইং তারিখ রংপুরের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত মামলার আসামীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরওয়ানা জারি করেন। এ দিকে মামলার আসামিরা গ্রেফতার না হওয়ায় তারা মামলার বাদীকে বিভিন্নভাবে হুমকী দিচ্ছেন। ফলে বাদী নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। স্মরনযোগ্য যে,মেসকোয়ারা হাবিব দীর্ঘদিন ধরে প্রধানমন্ত্রীর প্রয়াত স্বামী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার ভাতিজি পরিচয় দিয়ে নান কৌশলে এসব প্রতারনা করে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে রাজধানীতে একটি বিলাসন বহুল ভড়াটে বাসায় আয়েশি জীবন যাপন করছেন।