ভ্রাম্যমাণ আদালতের নিষেধাজ্ঞাকে উপেক্ষা করে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় ফসলি জমিতে গড়ে ওঠা সান-২ নামের অবৈধ ইটভাটায় পুনরায় ইট পোড়ানো শুরু করেছে ইট ভাঁটা মালিক কর্তৃপক্ষ।
সোমবার (৮ মার্চ) সকালে সরেজমিনে গেলে সান-২ নামের ওই ইট ভাটায় ইট তৈরী ও ইট পোড়ানোর কাজ দেখতে পাওয়া যায়।
এর আগে গত ২১ ডিসেম্বর বিকেলে উপজেলার সারপুকুর ইউনিয়নের বাড়বিষার দোলায় সান-২ ইটভাটা বন্ধ করে দেয় এবং এক লাখ টাকা জরিমানা আদায় করেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় ও স্থানীয় কৃষকরা জানান, উপজেলার সারপুকুর ইউনিয়নের বাড়বিষার দোলায় ফসলি জমির উপর অনুমোদনহীন সান-২ নামে একটি ইটভাটা গড়ে তোলেন এমদাদুল হক ওরফে এন্তাজ। ফসলি জমির উপর এ ভাঁটা তৈরির শুরু থেকে স্থানীয় কৃষকরা জেলা প্রশাসকসহ সরকারি বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু অদৃশ্য কারণে হাজারো কৃষকদের দাবিকে উপেক্ষা করে ইটভাটায় আগুন দেয় ভাঁটা মালিক এমদাদুল হক এন্তাজ। জীবন জীবিকা ও পরিবারের খাদ্যের একমাত্র পথ ফসলি জমি এবং ফসল রক্ষায় কৃষকরা ইটভাটাটি বন্ধের দাবিতে একাধিকবার মানববন্ধনও করেন।
অবশেষে টনক নড়ে প্রশাসনের। জেলা প্রশাসক আবু জাফরের নির্দেশে গত ২১ ডিসেম্বর বিকেলে আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিন পুলিশ নিয়ে ওই ইটভাটায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। এ সময় সান-২ ইটভাটা মালিক এমদাদুল হক এন্তাজ বৈধ কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ হলে ভাঁটা মালিকের এক লাখ টাকা জরিমানা আদায় করে বৈধ কাগজপত্র প্রদর্শন না করা পর্যন্ত ইট তৈরি ও পোড়ানোর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।
ভ্রাম্যমান আদালতের সেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সাম্প্রতিক সময়ে পুনরায় সেই ভাটায় ইট তৈরিসহ পোড়ানোর কাজ পুনরায় শুরু করেন। আদালতের নিষেধাজ্ঞাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে পুনরায় ভাঁটা চালু করায় ক্ষোভ প্রকাশ পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা।
বাড়বিষার দোলার কৃষক সাইদুল ইসলাম ও আবদুস সোবহান আলী বলেন, উপজেলার সব থেকে বেশি ধানের জমি এই বড়বিষার দোলায়। এ দোলার ইটভাটা বন্ধ না করলে হাজারো কৃষক পরিবারকে না খেয়ে মরতে হবে। ধানের জমি রক্ষায় অবৈধ ইটভাটা দ্রুত বন্ধ করতে জোড় দাবি জানান তারা।
সান -২ ইটভাটা মালিক এমদাদুল হক এন্তাজ বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালত জরিমানা নিয়ে বন্ধ করলেও আমি অনুমোদনের জন্য গত ১০ ফেব্র“য়ারি জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেছি। এসবের অনুমতি পেতে সময় লাগে। তাই অনুমোদনের কপি হাতে আসেনি।
আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিন বলেন, আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে সান -২ পুনরায় আগুন জ¦ালিয়ে কার্যক্রম শুরু করেছে বলে শুনেছি। খুব দ্রুত পুনরায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।