ফরিদপুরে জেলা সদর থেকে ভাঙ্গায় ফৌজদারি পাঁচটি আদালত স্থনান্তরের প্রক্রিয়ার প্রতিবাদে বিভিন্ন মহলের উদ্যোগে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। ওই কর্মসূচিতে অংশ গ্রহণকারীরা বলেন, ফরিদপুরের ঐতিহ্য ধ্বংস করে কোন অবস্থাতেই ওই আদালতগুলি ভাঙ্গায় নিতে দেওয়া হবে না, প্রয়োজনে রক্ত দিয়ে প্রতিরোধ করা হবে।
শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ভালোবাসী ফরিদপুর এবং দুপুর ১২টার দিকে সালথা-নগরকান্দা ছাত্রসমাজের উদ্যোগে অভিন্ন দাবিতে পৃথক দুটি মানববন্ধ কর্মসূচি পালিত হয় ফরিদপুর প্রেসক্লাব চত্ত্বরে মুজিব সড়কের পাশে।
ভালোবাসী ফরিদপুর এর মানববন্ধন কর্মসূচি চলাকালে সংহতি প্রকাশ করতে আসেন সাবেকমন্ত্রী প্রয়াত চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফের মেয়ে মহিলা বিএনপির কেন্ত্রীয় যুগ্ম সম্পাদক চৌধুরী নায়াব ইউসুফ আহমেদ।
নায়াব ইউসুফ বলেন, ফরিদপুরের ঐতিহ্যের সাথে জড়িত ফরিদপুরের আদালত। এ আদালতকে কোন অবস্থাতেই ভাঙ্গতে দেওয়া যাবে না। অমরা ফরিদপুরের বিভাজন কোন অবস্থাতেই মেনে নেব না। সম্মিলিত ভাবে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ করে আমাদের অতীত ও ঐতিহ্যকে আমরা রক্ষা করবো।
মানববন্ধন চলাকালে অংশ গ্রহণকারীরা ‘ফরিদপুর থেকে আদালত সরিয়ে নেওয়ার নেওয়ার পরিকল্পনা রুখে দাও জনতা’, ‘ক্ষমতা না জনতা, আদালন সরানো চলবে না, মানি না’, ফরিদপুরবাসীর এক দফা এক দাবি, আদালত সরবে না’, ‘ফরিদপুরের আদালত, ফরিদপুরেই থাকবে’ শিরোনামে বিভিন্ন প্লাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে এ কর্মসূচিতে অংশ নেন।
কর্মসূচি চলাকালে ফরিদপুরবাসীর পক্ষে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন আইনজীবী মামুন অর রশীদ, এ কে কিবরিয়া, মো. সেলিম, আফজাল হোসেন, তানজিবুর রহমান, শাহরীয়ার রিমন, রাবিকুল রহমান প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, যারা আদালত ভাঙ্গার এ ষড়যন্ত্রে জড়িত তাদের দাঁত ভাঙ্গা জবাব দেওয়া হবে। কোন কুচক্রি মহলের কোন সড়যন্ত্র সফল হতে দেব না। প্রয়োজনে বুকের রক্ত দিয়ে এ ষড়যন্ত্র রুখে দেব।
সালথা-নগরকান্দা ছাত্রসমাজের উদ্যোগে আযোজিত মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য দেন কাজী তামজিদ হাসান, দেবাশীষ নয়ন, শ্রাবণ হাসান, শেখ জাফর, আশিকুর রহমান প্রমুখ।
প্রসঙ্গত সম্প্রতি ফরিদপুর জেরা সদরে অবস্থিত ভাঙ্গা, সদরপুর, চরভদ্রাসন, সালথা ও নগকান্দা উপজেরার দেওয়ানী ও ফৌজদারি আদালত ভাঙ্গায় স্থনান্তরের উদ্যোগ নেওয়ার বিষয়টি জানাজানি হয়। ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন নিয়ে গঠিত ফরিদপুর-৪ আসনের স্বতন্ত্র দলীয় সাংসদ মুজিবর রহমান ও রফে নিক্সন চৌধুরীর এক ডিও লেটারের কারণে এ উদ্যোগ নেয় আইন মন্ত্রণালয়। গত ৪ মার্চ ফরিদপুরের জেলা ও দায়রা জজ এ-সংক্রান্ত ইতিবাচক মতামত দিয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠান। গত ৯ মার্চ বিষয়টি জানাজানি হয়ে পড়লে আইনজীবীদের সাথে বিক্ষোভে পেটে পড়ে ফরিদপুরের বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যাক্তিবর্গ।
প্রসঙ্গত ভাঙ্গায় আগে থেকেই ভাঙ্গা, সদরপুর, নগরকান্দা ও সালথা উপজেরার দেওয়ানী আদালতগুলি চালু ছিল। বর্তমানে ওই উপজেলারসমূহের ফৌজদারি আদালত এবং চরভদ্রাসন উপজেরার দেওয়ানী ও ফৌজদারি দুটি আদালতই ভাঙ্গায় নিয়ে যাওয়ার এ পক্রিয়া শুরু হয়।