জামালপুরে পিতাকে হত্যার দায়ে পুত্রকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ডাদেশসহ ৫০হাজার জরিমানা আদায়ের আদেশ দিয়েছেন বিজ্ঞ আদালত। রোববার (১৪মার্চ) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মো: জুলফিকার আলী খান এক জনাকীর্ণ আদালতে এই রায় ঘোষনা করেন।
দন্ডপ্রাপ্ত সবুজ মিয়া (৩৬) জামালপুর সদর উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের দক্ষিন কৈডোলা গ্রামের মৃত ইমান আলীর ২য় পুত্র। মামলার রায়ে বলা হয়েছে, ইমান আলীর সাথে তার পুত্র সবুজ মিয়ার জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। সবুজ মিয়া স্থানীয় ইউপি নির্বাচনের সদস্য পদে অংশগ্রহনের জন্য জমি লিখে দেওয়ার চাপ প্রয়োগ করেন বাবা ইমান আলীকে। ইমান আলী রাজি না থাকায় ২০১৬ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি সবুজ মিয়া তার গ্রামের দাখিলী মাদ্রাসার সামনে বাবা ইমান আলীকে ব্যাপক মারধর করে। স্থানীয়রা গুরুত্বর আহতবস্থায় তাকে উর্দ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে ইমান আলী মারা যান।
এই ঘটনায় নিহতের বড় ছেলে বাদল মিয়া বাদি হয়ে জামালপুর সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় ২২জন স্বাক্ষীর মধ্যে ১৭জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহন শেষে সবুজকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ডাদেশসহ আরোও ৫০ হাজার টাকা জরিমানার আদায়ের আদেশ দেন আদালতের বিজ্ঞ বিচারক।
মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট নির্মল কান্তি ভদ্র বলেন- “আমরা এই রায়ে সন্তুষ্ট এবং আমরা এই রায় দ্রুত কার্যকরের দাবি জানাই। ”
আসামী পক্ষের আইনজীবী মো: আশরাফুল হোসাইন সোহাগ বলেন-“আমরা এই রায়ে সন্তুষ্ট না। আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করবো। উচ্চ আদালতে ন্যায় বিচার পাবো আমরা ইনশাল্লাহ।”
অপর দিকে একই দিন দুপুরে জেলার বকশিগঞ্জ উপজেলায় এক শিশুকে ধর্ষনের দায়ে উদয় নামে এক যুবককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদ- দিয়েছে আদালত।
ওইদিন দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিজ্ঞ বিচারক এম আলী আহমেদ এই রায় ঘোষনা করেন। সাজাপ্রাপ্ত আসামি তাকিউল হাসান উদয় (২১)বকশিগঞ্জ উপজেলার উঠানোপাড়া গ্রামের ছোরহাব আলীর ছেলে।
মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন, পি.পি অ্যাডভোকেট আকরাম হোসেন বলেন,আদালত ১৬ জন স্বাক্ষীর মধ্যে ১৩ জনের জবানবন্দি ও স্বাক্ষী গ্রহন করে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় জামালপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-১, এর বিজ্ঞ বিচারক এম আলী আহমেদ তিনি আসামি তাকিউল হাসন ওরফে উদয়কে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন-২০০০ এর ৯ (১) ধারায় ধর্ষনের অপরাধে যাবজ্জীবন কারাদ- ও এক লক্ষ টাকা জরিমানা করেন। জরিমানা টাকা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদ- প্রদানের আদেশ দেন। জরিমানার টাকা আদায় করে মামলার ভিকটিমকে প্রদান করার জন্য আদেশ প্রদান করেন। আসামি পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট মোঃ মোকাম্মেল হক।