বিদ্যুৎস্পৃষ্টে দু-হাত হারানো সাব্বির হোসেনের (১৯) কৃত্রিম হাত সংযোজন করা হয়েছে। সে তার কৃত্রিম হাত দিয়ে অতি প্রয়োজনীয় ছোট খাট কাজ করতে পারবে। ঢাকাস্থ চাটমোহর উন্নয়ন ফোরাম সম্ভাবনাময় এই তরুনটির সহায়তায় এগিয়ে আসে। তারা সাব্বিরের আর্টিফিশায়াল ফাংশনাল হাত লাগাতে খরচ বহন করে। সাব্বির পাবনার চাটমোহর উপজেলার ডিবিগ্রাম ইউনিয়নের দাঁথিয়া কয়ড়াপাড়া গ্রামের মোঃ কামাল হোসেনের ছেলে।
দিনমজুর পিতার ঘরে জন্মগ্রহণ করে সাব্বির লেখপড়া ছেড়ে জীবনের তাগিদে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাজে যোগ দেন। বৈদ্যুতিক লাইনের কাজ করতে গিয়ে একদিন দূর্ঘটনায় পতিত হয় সে। তাকে ঢাকায় শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হলে মেডিক্যাল বোর্ড সাব্বিরের জীবন রক্ষার্থে দুটো হাতই কেটে ফেলতে ব্যাধ্য হয়। সে কাপড় পরা, খাওয়া-দাওয়া, গোসলসহ কোন কিছুই নিজে আর করতে পারতো না। দিনমজুর পিতার সংসারে বোঝা হয়ে দাঁড়ায় সাব্বির।ভিক্ষাবৃত্তি ছাড়া আয়-রোজগারের কোন পথই ছিল না তার সামনে।
ভিক্ষাবৃত্তি প্রতিরোধ, তাকে ক্ষুদ্র ব্যবসায় নিয়োগের উদ্যোগ এবং তার আর্টিফিশিয়াল ফাংশনাল হাত লাগানো অত্যন্ত জরুরী ছিল। দিনমজুর পিতা চিকিৎসা ব্যয় মেটাতেই নিঃস্ব হয়েছেন। ফলে,আর্টিফিশিয়াল হাত লাগানোর খরচ (২ লক্ষাধিক টাকা) যোগাড় করা তার পরিবারের পক্ষে ছিল দুঃস্বপ্নের মতো। বিষয়টি নজরে আসে সাব্বিরের গ্রামের সরকারী উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা চাটমোহর উন্নয়ন ফোরামের সহ-সভাপতি ও বর্তমানে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের উপসচিব মোঃ আবদুর রহিমের। তিনি তার ফেসবুক পেজে বিষয়টি উপস্থাপন করেন। এরপরই ঢাকাস্থ চাটমোহর উন্নয়ন ফোরামের নজরে আসে। ফোরামের নিয়মিত সভায় সম্ভাবনাময় তরুণটির ব্যাপরে আলোচনা হয় এবং ফোরামের পক্ষ থেকে তার কৃত্রিম হাত সংযোজনের সহযোগিতার সিদ্ধান্ত হয়। সেই ধারাবাহিকতায় ফোরামের সকলের সার্বিক সহযোগীতায় গত সোমবার (১৫ মার্চ) সিআরপিতে সাব্বিরের কৃত্রিম হাত সংযোজন সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। সাব্বির তার কৃত্রিম হাত দিয়ে প্রয়োজনীয় ছোটখাট কাজ করতে পারছে। সাব্বির ও তার পরিবারের সদস্যরা চাটমোহর উন্নয়ন ফোরামের সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞ জানিয়েছেন।
সাব্বিরের আত্মকর্মসংস্থানের জন্য চাটমোহর উন্নয়ন ফোরাম আগামী পবিত্র ঈদুল ফিতরের পরে তার নিজ গ্রামে উপযোগী করে একটি ছোট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করে দিবে বলে ফোরাম সভাপতি পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি,র্যাব-৪ এর অধিনায়ক মোঃ মোজাম্মেল হক বিপিএম (বার) পিপিএম জানান।