গাজীপুরের কাপাসিয়ায় বহুল আলোচিত উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি জালালউদ্দিন সরকার হত্যা মামলায় ১৮ মার্চ বৃহস্পতিবার উচ্চ আদালতে দায়েরকৃত আপিলের রায় ঘোষণা করা হয়েছে। এতে ১১ আসামীর মধ্যে ৫ জনের ফাঁসি বহাল, ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদ- ও একজনকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়। বিচারপতি শহীদুল করিম ও আক্তারুজ্জামান সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট ডিভিশনের যৌথ বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক নেতা ফারুক হোসেন, জজমিয়া, আল-আমিন, বেলায়েত হোসেন বেল্টু ও যুবদলের সাবেক সভাপতি আবদুল আলীম। যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন, ফরহাদ হোসেন সরকার, ছাত্রদল নেতা জুয়েল, সাংবাদিক ও শিক্ষক আতাউর রহমান, মাহাবুবুর রহমান রিপন ও উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আবদুল হালিম ফকির। মামলার অপর আসামি জয়নাল আবেদীনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। ফাঁসির আসামীদের মধ্যে জজমিয়া ও আল-আমীন এবং যাবজ্জীবন আসামীদের মধ্যে মাহাবুবুর রহমান রিপন, জুয়েল ও আবদুল হালিম ফকির পলাতক রয়েছেন। বাকী ৬ জন বর্তমানে কারাগারে রয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি জালালউদ্দিন সরকারকে ২০০৩ সালের ১৭ আগস্ট তার পাবুর গ্রামের বাড়ির নিকটবর্তী বলখেলার বাজার এলাকায় প্রকাশ্য দিবালোকে নৃসংশভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় উপজেলা যুবদল ও ছাত্রদলের ১১ জনকে আসামি করে তার বড় ভাই মিলন সরকার বাদী হয়ে কাপাসিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে ২০১৫ সালে গাজীপুরের অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত -১ এর বিচারক ফজলে এলাহী ভূঁইয়া ১১ আসামীর সবাইকে ফাঁসির আদেশ প্রদান করেন। পরে আসামি পক্ষ এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল দায়ের করেন।
এ ব্যাপারে বিএনপি নেতা শাহ রিয়াজুল হান্নান জানান, এ রায়ে তিনি এবং সংশ্লিষ্টদের পরিবারের সদস্যরা মর্মাহত। রায়ের কপি হাতে পেলে এ রায় পুণর্বিবেচনার জন্যে সুপ্রিমকোর্টে আপিল করা হবে। এদিকে একাধিক আসামীর পরিবারের পক্ষ থেকে দাবী করা হয় যে, এলাকার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রকাশ্য দিবালোকে হাতেগুনা চিহ্নিতরা জালালকে হত্যা করে। অথচ শুধুমাত্র রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্যই ১১জনকে আসামি করা হয়েছিল। ঘটনাটি ওই সময় জাতীয় সংবাদ মাধ্যমে ব্যাপক ভাবে প্রচার হয়েছে। রায়ের কপি হাতে পেলে তারা সুপ্রিম কোর্টে আপিল করবেন বলে জানান।
আসামী পক্ষে অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, অ্যাড. সারোয়ার হোসেন, অ্যাড. এস এম শাহ্জাহান, অ্যাড. আবদুল বারেক চৌধুরী উচ্চ আদালতে মামলা পরিচালনা করেন। ওকালতনামা প্রদান করেন অ্যাডভোকেট খন্দকার খালেকুর রহমান ও অ্যাড. ইকবাল হোসেন শেখ।